মুক্তালক্ষ্মী রেড্ডি অনার্স নিয়ে স্নাতক পাশ করেন এবং প্রথম মহিলা ছাত্রী হিসেবে ভর্তি হন মাদ্রাজ মেডিক্যাল কলেজে। পরবর্তীকালে দেশের প্রথম মহিলা শল্য চিকিৎসক হিসাবে সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা শুরু করেন
বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, বিধায়ক, শল্য চিকিৎসক তথা সংস্কারক মুক্তালক্ষ্মী রেড্ডির জন্মদিনে মঙ্গলবার বিশেষ ডুডল প্রকাশ করে উদযাপন করছে গুগল। নিজের জীবনে বিভিন্ন চড়াই উতরাইয়ের সাক্ষ্মী হয়েছেন তিনি।
১৯৮৩ সালের এই দিনটিতে তামিলনাড়ুতে জন্মগ্রহণ করেন মুক্তালক্ষ্মী রেড্ডি। তড়িঘড়ি তাঁর বিয়ে দেওয়ার জন্য বাবা-মা যে পরিকল্পনা করেছিলেন, তাতে জল ঢেলে দিয়ে তিনি তাঁদের বোঝান শিক্ষার গুরুত্ব। স্কুলের গণ্ডী পেরিয়ে মহারাজা কলেজে ভর্তি হন তনি। তখন সেটি ছিল অল বয়েজ স্কুল। তাঁকে স্কুল থেকে ছুড়ে ফেলে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়েছিল। তাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে স্কলারশিপ জেতেন, অনার্স নিয়ে স্নাতক পাশ করেন, প্রথম মহিলা ছাত্রী হিসেবে ভর্তি হন মাদ্রাজ মেডিক্যাল কলেজে। পরবর্তীকালে দেশের প্রথম মহিলা শল্য চিকিৎসক হিসাবে সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা শুরু করেন তিনি।
ব্রিটিশ পরবর্তী যুগে ভারতের প্রথম মহিলা বিধায়কও হন মুক্তালক্ষ্মী রেড্ডি। মহিলাদের জন্যেও জীবনভর নানা কাজ করেছেন দেশের প্রথম মহিলা বিধায়ক। নিজের জীবনে অবিচ্ছিন্নভাবে চিকিৎসক রেড্ডি জনস্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করেছেন এবং লিঙ্গ বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াইয়েও নিজেকে নিয়োজিত করেছিলেন তিনি, অগণিত যুবতী মেয়েদের জীবনকেও এক নতুন দিশায় চলার পথ দেখান তিনি।
পরবর্তীকালে মহাত্মা গান্ধীর অনুগামী মুক্তালক্ষ্মী রেড্ডি মাদ্রাজ আইন পরিষদে যোগদান করায় সরাসরি চিকিৎসক হিসাবে কাজ করতে পারেননি সময়ের অভাবে। ওই সময় তিনি মহিলাদের বিবাহের বৈধ বয়স নিয়ে কাজ করেন এবং সমাজে নারীদের প্রতি যে লিঙ্গ বৈষম্য করা হয় তার বিরুদ্ধেও সোচ্চার হন।
নিজের বোন ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ার পর ১৯৫৪ সালে চেন্নাইয়ে তিনি একটি ক্যানসার প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেন। বর্তমানে ক্যানসার চিকিৎসার ক্ষেত্রে বিশ্বের মধ্যে অন্যতম বিখ্যাত এই প্রতিষ্ঠানটি। প্রতি বছর গড়ে ৮০ হাজারেরও বেশি মানুষ ক্যানসারের চিকিৎসার জন্যে এখানে আসেন।
দেশের হিতে যেভাবে কাজ করেছেন, তার জন্যে ডঃ মুক্তালক্ষ্মী রেড্ডিকে ১৯৫৬ সালে সরকারের পক্ষ থেকে পদ্মভূষণ সম্মানে সম্মানিত করা হয়। তাঁর জন্মদিনে মঙ্গলবার বিশেষ ডুডল প্রকাশ করল গুগল।