চামারো পেনাল্টি মিস, বাতিল ক্রোমার জোড়া গোলে বিধ্বস্ত মোরিনার্স
মোহনবাগান: ০
মোহনবাগান: ০
পিয়ারলেস: ৩ (ক্রোমা-২, লক্ষ্মীকান্ত)
একত্রিশতম লিগ জয়ের শুরুতেই হোঁচট খেল মোহনবাগান। সবুজ-মেরুন বাগানে গোলাপ ফোটাতে চেয়েছিলেন মোহনবাগানের স্প্যানিশ হেড স্যার কিবু ভিকুনা। কিন্তু তাঁর ছাত্ররা ফুল ফোটানোর বদলে সবুজ মাঠ করে ফেললেন কণ্টকময়। চলতি কলকাতা প্রিমিয়র লিগে প্রথম দু’টি ম্যাচে পয়েন্ট খোয়ানো (একটি হার ও একটি ড্র) পিয়ারলেসের কাছে ০-৩ গোলের হার দিয়েই এবাররে লিগ অভিযান শুরু করল মোহনবাগান।
ডুরান্ড কাপে মহামেডানের বিরুদ্ধে জয় দিয়ে নতুন মরশুম শুরু করেছিল মোহনবাগান। সেদিন ম্যাচ দেখে খুশি মনেই বাড়ির পথ ধরেছিলেন বাগান সমর্থকরা। স্প্যানিশ কোচ কিবু ভিকুনা ও তাঁরই দেশের ফুটবলারদের নিয়ে যে স্বপ্ন দু ‘দিন আগে দেখতে শুরু করেছিল মেরিনার্স, তা অচিরেই মাটিতে মিশে গেল। গতবারের কলকাতা প্রিমিয়ার লিগের চ্যাম্পিয়নরা এবার তাদের অভিযান শুরু করল গতবারের রানার্স পিয়ারলেসের কাছে ০-৩ গোলে হার দিয়ে। আর সবুজ-মেরুন ব্রিগডেকে এদিন মাটি ধরাল তাদের একসময়কার বিতাড়িত ফুটবলার আনসুমানা ক্রোমা। এই লাইবেরিযান স্ট্রাইকারের জোড়া গোলের পাশপাশি লক্ষ্মীকান্ত মান্ডির একটি গোলে এবারের সিএফএলের প্রথম ম্যাচেই হোঁচট খেল কিবু ভিকুনার ছাত্ররা। ক্রোমার প্রথম গোলটি ও লক্ষ্মীর গোলের ক্ষেত্রেই অ্যাসিস্ট করে এদিন যেন যোগ্য জবাব দিলেন বাগানেরই অপর বাতিল ফুটবলার পঙ্কজ মৌলা।
ঘরের মাঠে খেলা। দর্শকাসন ভরিয়ে দিয়েছিলেন সমর্থকেরা। কিন্তু ছোট মাঠের সুবিধা নিয়ে সবুজ-মেরুনকে রীতিমতো কোণঠাসা করে দিলেন জহর দাসের ছেলেরা। যে বাগানের ডিফেন্স প্রথম ম্যাচে ফুটবলপ্রেমীদের বাহবা কুড়িয়েছিল, সেই রক্ষণই এদিন ছিন্নভিন্ন হয়ে পড়ে। তবে শুধু ডিফেন্সের দোষ দিলেও চলবে না। তিন-তিনটি গোল হজম করার দায়ভার চাপবে অভিজ্ঞ গোলরক্ষক শিল্টন পালের ওপরও। তাঁর দায়িত্বজ্ঞানহীনতাতেই ব্যক্তিগত দ্বিতীয় গোলটি করেন ক্রোমা।
দলে ক্রোমা, উলফ, জীতেন, ফুলচাঁদ, পঙ্কজদের মতো বড় দলের বাতিল ফুটবলাররা থাকলেও খাতায়-কলমে পিয়ারলেসের থেকে যে মোহনবাগানই এগিয়ে, তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। কিন্তু এদিন শুরু থেকেই ফেভারিটদের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানাতে শুরু করে দেয় জহর দাসের ছাত্ররা। ২১ মিনিটে পঙ্কজ মৌলার পাস থেকে প্রথম গোলটি করেন ক্রোমা। দ্বিতীয় গোলের নেপথ্যেও পঙ্কজ। কাউন্টার অ্যাটাকে পঙ্কজের বাড়ানো বল থেকেই দ্বিতীয়ার্ধে ব্যবধান বাড়ান লক্ষ্মীকান্ত মান্ডি। গোলের একাধিক সুযোগ নষ্ট করে মোহনবাগান। এমনকী একটি প্রয়াস বারপোস্টে লেগেও ফেরে। আর গোদের উপর বিষফোঁড়ার মতো শেষমুহূর্তে পেনাল্টি থেকেও গোল করতে ব্যর্থ হন সালভাডোর চামারো। যে দর্শকরা মিনি ডার্বিতে বাগান ফুটবলারদের জন্য জয়ধ্বনি তুলেছিলেন, তাঁরাই এদিন বিদ্রুপে ভরিয়ে দেন ভিকুনার ছাত্রদের।
এবার স্পনসর ছাড়াই ভালোমানের বিদেশি এনে দল গুছিয়েছে গঙ্গাপারের ক্লাব। তাই এমন হার হজম হওয়া বেশ কঠিন হয়ে পড়ছে সকলের কাছেই। লজ্জায় মাথা নত করেই মাঠ ছাড়লেন কিবু। সামনে পড়ে রয়েছে গোটা মরশুম পড়ে আছে। তাই একটা হারেই মুষড়ে পড়তে চাইছেন না তিনি।