‘মহাত্মা গান্ধীর আদর্শ এবং ধারণাগুলি যদি বাস্তবায়িত করা হতো, তবে বাপুর রামরাজ দেশে প্রতিষ্ঠিত হতো। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত তা হয়নি।’
গান্ধী সঙ্কল্প যাত্রা অব্যাহত রেখে প্রবীণ বিজেপি নেতা তথা রাজ্যসভার সাংসদ রবীন্দ্র কিশোর সিনহা জানিয়েছেন, তাঁর কাছে সবচেয়ে আনন্দদায়ক বিষয় হল যে জনগণ মহাত্মা গান্ধীর আদর্শকে শুনে ও বুঝে তা নিজেদের জীবনে কার্যকর করতে চাইছে। বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার তিনি জাহানাবাদ, মখদুমপুর, গয়া এবং বৌদ্ধ গয়াতে সভা করেছেন এবং সাধারণ মানুষকে জানিয়েছেন যে মহাত্মা গান্ধীর আদর্শ এবং ধারণাগুলি যদি বাস্তবায়িত করা হতো, তবে বাপুর রামরাজ দেশে প্রতিষ্ঠিত হতো। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত তা হয়নি। কংগ্রেস সরকারের মধ্যে থাকা নেতারা বাপুর নামে লোক দেখানো নাটক করেছে। এমনকি গান্ধীর পদবি চুরি করে নিজেদের নামের সঙ্গে যুক্ত করেছিল। কিন্তু মহাত্মা গান্ধীর রাম রাজ্যের জন্য কখনও মনোনিবেশ করেনি।
গান্ধী সঙ্কল্প যাত্রা চলাকালীন বিশেষ সাক্ষাৎকারে রবীন্দ্র কিশোর সিনহা জানিয়েছন, ২০১৪ সালে কেন্দ্রে ক্ষমতায় আসার পর নরেন্দ্র মোদির সরকার বাপুর অসম্পূর্ণ স্বপ্ন পূরণ করবেন বলে অঙ্গীকারবদ্ধ হয়েছিল। বিভিন্ন জনমুখী পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করার জন্য লেগে পড়ে কেন্দ্রীয় সরকার। সেই সকল পরিকল্পনা মাধ্যমে বাপু স্বপ্ন পূরণ করার কাজ শুরু হয়। ২ অক্টোবর যাত্রা শুরু করার পর থেকে এখনও পর্যন্ত চম্পারান, বেতিয়া, মতিহারি, শিবহর, সীতামারহি, মুজাফফরপুর, নালন্দা, মুঙ্গার, জামুই, শেখপুরা, নওয়াদা এবং পাটনার বন্যা গ্রাম, বখতিয়ারপুর ও ফতুহায় গিয়ে অনুষ্ঠান করেছে। ২০২০ সালের ৩০ জানুয়ারি গান্ধীর মৃত্যু দিবসে তাঁর সফর শেষ হবে। রবীন্দ্রকিশোর সিনহা জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নিজেই সংকল্প যাত্রার উদ্দেশ্য আগে থেকে ঠিক করে দিয়েছিলেন। জনগণকে মহাত্মা গান্ধীর আদর্শের পাঠ শেখানোই এই যাত্রার উদ্দেশ্য ছিল।
রবীন্দ্রকিশোর সিনহা আরও জানিয়েছেন, চার মাসের যাত্রার জন্য “বাপুর রাম রাজ এবং মোদীর সু-রাজ” ট্যাগলাইন দিয়েছেন। এই যাত্রার উদ্দেশ্য হ’ল সামাজিক পরিবর্তন ও সংস্কার, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বার্তা দিতে কোনও করমের ধর্মীয় ও রাজনৈতিক বৈষম্য ছাড়াই মানুষের কাছে পৌঁছে যাওয়া। এতে কোনও রকমের রাজনীতি নেই। বৃহস্পতিবার জাহানাবাদের আম্বেদকর চক তিড়হে এক বিশাল অনুষ্ঠানে বিজেপি প্রবীণ নেতা জানিয়েছেন যে মহাত্মা গান্ধীর আদর্শকে সকলের মধ্যে নিয়ে যেতে চান। জৈব কৃষি, খাদি, চরখা, কুটির শিল্প, অস্পৃশ্যতার বিষয়ে গান্ধীজি নিজেদের মতবাদ ব্যক্ত করেছিলেন। আজ কংগ্রেস বলছে যে বিজেপি গান্ধীকে চুরি করেছে। সত্য কথাটি হ’ল প্রধানমন্ত্রী মোদি গান্ধীজির আদর্শকে বাস্তবায়িত করেছেন। মখদুমপুর, গয়া এবং বোধগয়াতে জনসাধারণ অত্যন্ত যত্ন ও মনোযোগ সহকারে সিনহার কথা শুনেছিলেন এবং প্রশংসা করেছিলেন যে বিজেপি সাংসদ জনগণকে গান্ধীর শিক্ষা বলতে বিহার জুড়ে ভ্রমণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। সিনহার সভায় উপস্থিত মখদুমপুরের বাসিন্দা জগ নারায়ণ মাহাতো বলেছেন, “এটি অত্যন্ত প্রশংসনীয় পদক্ষেপ, কারণ নতুন জাতটি গান্ধীকে আইকন হিসাবে দেখেছে তবে তিনি যা বলেছিলেন তা সম্পর্কে সম্পূর্ণ অসচেতন।” সাংসদ আর কে সিনহার কথায়, ‘আমি যখন গান্ধীজীর চিন্তাধারা এবং রাম রাজ-এর বিষয়ে কথা বলি, তখন শ্রোতাদের উপর তাঁর বিশেষ প্রভাব পড়ে। তাঁরা আশ্চর্য হন পূর্ববর্তী সরকারগুলি বাপুর চিন্তাধারা ও নীতীমালা কেন প্রয়োগ করেনি। আমি আশ্চর্য হয়েছি যে বহু গান্ধীবাদী, যাঁরা সম্পূর্ণ বয়স কংগ্রেসেই কাটিয়েছেন, আমার কার্যক্রম এসেছিলেন এবং বলেছিলেন তাঁরাও আমার মঞ্চ থেকে কিছু বলতে চান। অত্যন্ত খুশির সঙ্গে আমি তাঁদের স্বাগত জানিয়েছে। তাঁদের এটাই দুঃখ যে, কংগ্রেসের সরকার বাপুকে ভুলে গিয়েছে।’ গায়ক এবং সঙ্গীত শিল্পীদের অংশগ্রহণে এই কার্যক্রম আরও রঙিন হয়ে ওঠে। গায়ক ও সঙ্গীত শিল্পীরা গান্ধীজীর চিন্তাধারার উপর বিভিন্ন থিমে সঙ্গীত পরিবেশন করেন। বিভিন্ন স্থানীয় ভাষা, যেমন ভোজপুরি, মগহী এবং মৈথিলি ভাষায় সঙ্গীত পরিবেশন করা হয়। সাংসদ আর কে সিনহা নিজেও স্থানীয় ভাষাষ কথা বলেছেন।