প্রায় চার ঘণ্টা ধরে একশো কিলোমিটারের বেশি গতি নিয়ে বইতে থাকে ঝোড়ো হাওয়া
আয়লায় সুন্দরবনের সাড়ে তিন হাজার কিলোমিটার নদীবাঁধ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছিল। আর সেই কারনে আয়লার ভয়াবহতা অনেক বেশি করে দাগ কেটেছিল সুন্দরবনের মানুষের মনে। তবে আয়লার থেকে কোন অংশে কম শক্তিশালি ছিল না ঘূর্ণিঝড় বুলবুল। কিন্তু এক্ষেত্রে সুন্দরবনের নদীবাঁধে ভাঙন না ধরায় আয়লার মত বিপর্যয় হয়নি। তবে প্রচুর বাড়িঘর ও গাছপালার ক্ষতি হয়েছে এই ঝড়ের তাণ্ডবে।
শনিবার রাত এগারোটা নাগাদ সুন্দরবনের মানুষ প্রথম উপলব্ধি করতে শুরু করে বুলবুলের আগমন। রাত যত বাড়তে থাকে ততই বুলবুল থাবা বসাতে থাকে সুন্দরবনের কুলতলি, ঝড়খালি, গোসাবায়। প্রায় চার ঘণ্টা ধরে একশো কিলোমিটারের বেশি গতি নিয়ে বইতে থাকে ঝোড়ো হাওয়া। এর প্রভাবে শুধু গোসাবা ব্লকেই দু হাজারের বেশি বাড়ি সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। আর প্রায় সাত হাজার বাড়ি আংশিক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। অন্যদিকে বাসন্তী ব্লকের ঝড়খালি, নফরগঞ্জ, জ্যোতিষপুর সহ আশপাশের বেশ কয়েকটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় ঘরবাড়ি ও গাছপালা পড়ে গিয়ে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এছাড়াও ক্যানিং ১ ও ক্যানিং ২ ব্লকে ও বেশ কিছু এলাকা এই ঝড়ের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।
রবিবার মহকুমা ও ব্লক প্রশাসনের তরফ থেকে দুর্গতদেরকে ত্রিপল, চাল, ডাল সহ বিভিন্ন ত্রান সামগ্রী তুলে দেওয়া হয়েছে। ক্যানিংয়ের মহকুমাশাসক বন্দনা পোখরিয়াল নিজেও বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে গিয়ে দুর্গতদের হাতে ত্রান সামগ্রী তুলে দেন। তিনি বলেন, “ ঝড়ে যারা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে তাদের পাশে সরকার রয়েছে। দ্রুত যাতে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা যায় সে বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহন করা হচ্ছে”। এদিনের ঝড়ে বহু বিদ্যুৎয়ের খুঁটি উপড়ে গিয়ে বিস্তীর্ণ এলাকা বিদ্যুৎ সংযোগহীন হয়ে পড়েছে। ইন্টারনেট পরিষেবা ও যথেষ্ট বিপর্যস্ত। গোসাবার লাহিড়ীপুর এলাকায় কমলা মণ্ডল(৬২) নামে এক বয়স্ক মহিলা শনিবার রাতে ঝড়ের সময় মারা যায়। স্থানীয় মানুষজন ও গোসাবার বিধায়ক জয়ন্ত নস্কর এই মৃত্যুকে ঝড়ের কারনে মৃত্যু বললেও সেই দাবী মানতে চাননি স্থানীয় ব্লক প্রশাসন। তবে কি কারনে মৃত্যু হয়েছে তা জানতে দেহ ময়না তদন্তে পাঠিয়েছে সুন্দরবন কোস্টাল থানার পুলিশ