কর্মসূচিতে দেশ-বিদেশের অষ্টম থেকে দশম শ্রেণীর ছাত্রছাত্রীরা বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়
আইআইটি খড়্গপুরে তরুণ প্রজন্মের উদ্ভাবকদের নিয়ে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে শক্তি ও পরিবেশ সংক্রান্ত মূল বিষয়ে বহু ছাত্রছাত্রী তাদের মতামত ও তাদের তৈরি মডেল পেশ করে। এছাড়া বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা দূষণ প্রতিরোধ ও সংরক্ষণের প্রসার নিয়ে নিজেদের বক্তব্য তুলে ধরে। তৃতীয় পর্বের এই কর্মসূচিতে দেশ-বিদেশের অষ্টম থেকে দশম শ্রেণীর ছাত্রছাত্রীরা বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। এই বিষয়গুলির মধ্যে ছিল – স্বাস্থ্য ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, হার্ডওয়্যার মডেলিং, প্রোডাক্ট ডিজাইনিং, বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা, আর্থিক অন্তর্ভুক্তিকরণ তথা শক্তি ও পরিবেশ। আইআইটি খড়্গপুর ক্যাম্পাসে গত ৮ তারিখ থেকে এই কর্মসূচির চূড়ান্ত পর্যায়ের প্রতিযোগিতাগুলির আয়োজন করা হয়। রবিবার, অর্থাৎ ১০ই নভেম্বর এই প্রতিযোগিতা শেষ হয়েছে।
প্রতিযোগিতায় সেরা পুরস্কার পেয়েছে ভুবনেশ্বরের কেআইআইটি ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের দিব্যাঙ্গ দল। এই দলের পড়ুয়া প্রীতেশ দেব, দিব্যান সাহু এবং অঙ্কিত প্রধান এবারের প্রতিযোগিতায় বিশেষভাবে সক্ষম ব্যক্তিদের উপযোগী এমন একটি ‘গ্রিন ওয়াটার ডিসপেন্সর’ তৈরি করে যা পা বা দৈহিক ভারকে কাজে লাগিয়ে ব্যবহার করা সম্ভব। এই ওয়াটার ডিসপেন্সর ব্যবহারের জন্য একটি সরল লিভার মেকানিজম রয়েছে যা চাপ দিলেই ডিসপেন্সর থেকে জল নিষ্কাষণ হবে।
হায়দরাবাদের জুবিলি হিল্সের ভারতীয় বিদ্যাভবন পাবলিক স্কুলের পড়ুয়াদের নিয়ে গঠিত দলটি প্রতিযোগিতায় প্রথম রানার-আপ হয়েছে। এই দলের পড়ুয়ারা নারকেল খোলা এবং ভুট্টার খোসা দিয়ে এমন একটি চারকোল স্মোক ফিল্টার তৈরি করেছে যা যন্ত্রচালিত গাড়িতে ব্যবহার করলে দূষণ কমানো সম্ভব। সৃজনশীল এই উদ্ভাবনের জন্য পড়ুয়াদের এই স্বীকৃতি। সেকেন্ড রানার-আপ হয়েছে হায়দরাবাদেরই ব্রহ্ম প্রকাশ ডিএভি স্কুল। এই বিদ্যালয়ের তিন পড়ুয়া পি প্রণবাদিত্য, রাজ ভট্টাচার্য এবং শ্রেয়স বিরাদারকে নিয়ে গঠিত দলটি চন্দ্রযান অভিযান থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে সাতটি সমতল আয়নার সহযোগে অ্যাসট্রন নামে এমন একটি দূরবীক্ষণ যন্ত্র তৈরি করেছে যা দিয়ে মহাকাশ অভিযানের সময় উৎকৃষ্টমানের ছবি তোলা সম্ভব।
এই প্রতিযোগিতায় অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ উদ্ভাবনগুলির মধ্যে রয়েছে ‘সখী’ – পরিবেশ-বান্ধব স্যানিটারি প্যাড। কলকাতার দিল্লি পাবলিক স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা তুলো, শুকনো পাতা, রেসিন ও নারকেল ছোবড়ার টুকরো অংশ দিয়ে অভিনব এই স্যানিটারি প্যাড তৈরি করেছে। এই আবিষ্কারের জন্য কলকাতার ঐ স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের বিশেষ পুরস্কার দেওয়া হয়েছে।
প্রতিযোগিতার ফাইনালের যে ছয়টি দলকে মনোনীত করা হয়, তাদের কেবল উদ্ভাবন ক্ষেত্রে বিচক্ষণতা, দক্ষতা, সৃজনশীলতা তথা উপস্থাপনার জন্যই নয়, বরং উদ্ভাবনগুলির সামাজিক প্রভাবের বিষয়টিকেও বিবেচনায় রাখা হয়েছিল। গত ৮ তারিখ থেকে আইআইটি খড়্গপুর ক্যাম্পাসে শুরু হওয়া এই কর্মসূচিতে ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে গঠিত মোট ৩২টি দল অংশ নেয়। উল্লেখ করা যেতে পারে, গত বছর এই প্রতিযোগিতায় সংযুক্ত আরব আমিরশাহী ও আসিয়ানভুক্ত বিভিন্ন দেশের স্কুলের ছাত্রছাত্রীরাও অংশ নেয়।