জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ডের ১০০ বছর পূর্তিতে কবিগুরুর এই তৎপরতাকেই ফিরে দেখতে ‘ওয়েজ অব রিমেমবারিং জালিয়ানওয়ালাবাগ অ্যান্ড টেগর্স রেসপন্স টু দি ম্যাসাকর’ নামে প্রদর্শনীর উদ্বোধন ২ মার্চ ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালে
জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে ইংরেজদের দেওয়া ‘নাইটহুড’ উপাধি ত্যাগ করেছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। কেবলই কি তাই?কবিগুরু এখানেই থেমে যাননি। এই নারকীয় ঘটনার বিচার চেয়ে লন্ডনে হাজির হয়েছিলেন তিনি। সেখানকার রাজনীতিকদের সঙ্গে দফায় দফায় আলোচনায় বসেছিলেন। তাতেও কাজ না হওয়ায় কলকাতায় ফিরে এসে চিঠির পর চিঠি লেখেন নানা মহলে।
এ সবই আজ বিস্মৃতির আড়ালে হারিয়ে গিয়েছে। ইতিহাসের পাতা থেকে উদ্ধার করে এ সব প্রকাশ্যে আনছে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল। জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ডের ১০০ বছর পূর্তিতে কবিগুরুর এই তৎপরতাকেই ফিরে দেখার পরিকল্পনা। ‘ওয়েজ অব রিমেমবারিং জালিয়ানওয়ালাবাগ অ্যান্ড টেগর্স রেসপন্স টু দি ম্যাসাকর’ নামে এই প্রদর্শনীর উদ্বোধন হবে আগামী ২ মার্চ।
তবে আর পাঁচটি প্রদর্শনীর থেকে কিছুটা আলাদা হবে এটি। অডিও-ভিজুয়াল, অর্থাৎ শব্দ এবং ছবির সাহায্যে সেটি তৈরি করা হবে। যার কাজ এখন জোরকদমে চলছে। সেই বর্বরোচিত ঘটনার প্রতিবাদ বাংলা কীভাবে জানিয়েছিল, তা যেমন তুলে ধরা হবে, তেমনই থাকবে ওই ঘটনায় মৃতদের পরিবারের নানা বক্তব্য। জালিয়ানওয়ালাবাগ ছাড়াও অমৃতসরের নানা অলিগলিতে ব্রিটিশ পুলিসের অত্যাচারের চিহ্নও রয়েছে। তারও বেশ কিছু ছবি সংগ্রহ করেছে গবেষকদের দল। সেই সব কিছুও প্রদর্শনীতে রাখা হবে।
রবীন্দ্রনাথের সেই সব চিঠি প্রদর্শনীর আকারে তুলে ধরা হবে। বিভিন্ন সূত্র থেকে সেগুলি সংগ্রহ করে জনসমক্ষে আনা হবে। প্রদর্শনীর কিউরেটর শর্মিষ্ঠা দত্তগুপ্ত এবং শিল্প নির্দেশক সঞ্চয়ন ঘোষ। প্রদর্শনীতে আরও চমক থাকবে। ওই ঘটনায় যাঁরা মারা গিয়েছিলেন, তাঁদের পরিবারের বর্তমান সদস্যদের নানা অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরা হবে। এই প্রদর্শনীর সঙ্গে যুক্ত গবেষক দল অমতৃসরে ওই সব পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করেছেন। কীভাবে পরিজনরা মৃতদের শনাক্ত করেছিলেন, মৃত্যুর খবরই বা কীভাবে পেলেন তাঁরা, এমন নানা অজানা তথ্য ইন্টারভিউয়ের মাধ্যমে দেখানো হবে সেখানে। লিয়ানওয়ালাবাগের ঘটনার পর বাংলার পত্রপত্রিকায় কীরকম লেখালেখি হয়েছিল, তাও থাকছে এই প্রদর্শনীতে।
নানা ছবি, লেখা, শহিদ পরিবার পরিজনদের অভিজ্ঞতার (অডিও-ভিজুয়াল) মাধ্যমে সাধারণ মানুষ সেই ঘটনাকে অনুভব করতে পারবেন। যে সব তথ্য এখানে থাকবে, তা রবীন্দ্রচর্চার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরাই মূলত জানবেন। তাই ব্রিটিশ লাইব্রেরি, ন্যাশনাল আর্কাইভ (দিল্লি), শান্তিনিকেতনে থাকা কবিগুরুর দুষ্প্রাপ্য চিঠি সংগ্রহ করে আনা হয়েছে।