নিগমের এলাকা ৬৯.৪৯ বর্গ কিলোমিটার জনসংখ্যা ৩ লক্ষ ২৬ হাজার ৯০৭
শিলচর পুর কর্পোরেশনের প্রস্তাবিত ম্যাপ সরকারিভাবে প্রকাশিত হল। গত ২৮ সেপ্টেম্বর একটি নোটিফিকেশনের মাধ্যমে এই ম্যাপ ও বিভিন্ন ওয়ার্ডের সীমা ঘোষণা করা হয়। সর্বদলীয় বৈঠকের পর যে ম্যাপ পাঠানো হয়েছিল সেই ম্যাপে কিছুটা কাট ছাট করে এই নতুন নোটিফিকেশন জারি করা হয়েছে। এবং জনগণের বিভিন্ন আপত্তি জানানোর শেষ সময়সীমা ধার্য করা হয়েছে ১২ অক্টোবর।
কিন্তু এত চুপিসারে এই কাজটা কেন হলো এ নিয়ে নানা মহলে প্রশ্ন উঠছে। কাল ও পরশু অফিস বন্ধ। তাহলে আপত্তি জানানোর বেশি সময় মানুষের হাতে নেই। তাই এ নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। কেন এত অনাবশ্যক গোপনীয়তা অবলম্বন করা হচ্ছে এটাই এখন বড় প্রশ্ন।
সর্বদলীয় বৈঠকে যে ম্যাপ পাঠানো হয়েছিল সেখান থেকে দুটি ওয়ার্ড বাদ গেছে। ছোট দুধ পাতিলের দুটি ওয়ার্ড বাদ দিয়ে এখন ওয়ার্ডের সংখ্যা হয়েছে ৪২ টি। এলাকা আগে ১০৩ বর্গ কিলোমিটার ছিল। এখন সেটা হয়েছে ৬৯.৪৯ বর্গ কিলোমিটার। প্রস্তাবিত পুর নিগম এলাকায় জনসংখ্যা ধরা হয়েছে ২০১১সালের সেন্সাস মতে ৩ লক্ষ ২৬ হাজার ৯০৭জন। সবচাইতে বেশি জনসংখ্যা অধ্যুষিত ওয়ার্ডটি হচ্ছে ৪১ নম্বর ওয়ার্ড।এখানে লোক সংখ্যা ১১হাজার ৬২৫ জন।
দুধপাতিল থেকে শুরু করে মেডিকেল কলেজ ছাড়িয়ে বাই পাস পর্যন্ত এলাকা বিস্তৃত। বাইপাসকে ধরে সীমানা নির্ধারণ করা হয়েছে। শহরের ভেতরে যে ওয়ার্ডগুলো রয়েছে সেগুলোর যে মাপ বা সীমানা সেটা সর্বদলীয় বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্তের মতোই হয়েছে। কিন্তু কেন ছোট দুধ পাতিল বাদ দেওয়া হলো ,এর পেছনে কি কারন রয়েছে সেটাই এখন বড় প্রশ্ন।
আসলে শিলচর ডেভেলপমেন্ট অথরিটি এলাকার মধ্যে প্রশাসন চাইতে নিগমের সীমানা নির্ধারণ করতে। কারণ ডেভেলপমেন্ট অথরিটির এলাকার মধ্যেই শহরকে রাখতে হবে। এমন একটা আইনি কথা নাকি রয়েছে। কিন্তু মুশকিল হলো ১০০ বর্গ কিলোমিটারের নিচে নেমে গেছে শহরের আয়তন।এর ফলে ভবিষ্যতে স্মার্ট সিটি হওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দেবে।
এছাড়া বারবার নিগমের এলাকা নির্ধারণ করার পিছনে কোন যুক্তি কাজ করছে এটা জনগণ জানতে চাইছেন। ১২ তারিখের মধ্যে যদি যুক্তিসঙ্গত আপত্তি দাখিল না করা হয় তাহলে এই ম্যাপ কার্যকর হয়ে যাবে। এই ম্যাপের বা এলাকা নির্ধারণের কাজ যেভাবে হচ্ছে, তাতে মনে হচ্ছে পুর নিগমের নির্বাচন আগামী তিন চার মাসের মধ্যে হয়ে যাবে। ইতিমধ্যে পুর কর্পোরেশন বিল পাস হয়েছে বিধানসভায়। এছাড়া এলাকা নির্ধারণ প্রক্রিয়া শেষ হয়ে গেলে এই কাজে আর তেমন বাধা থাকবে না।
বর্তমান শিলচর পুর এলাকার বাইরে তোপখানা জিপি তারাপুর জিপি অম্বিকাপুর জিপি উত্তর কৃষ্ণপুর জিপি বেরেঙ্গা জিপি অম্বিকাপুর জিপি কর্পোরেশনের অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে। মাছু ঘাট জিপির একটা অংশ প্রথমে অন্তর্ভুক্ত হলেও এখন বাদ যাচ্ছে। কিন্তু পুরসভার এলাকা নির্ধারণ নিয়ে যে ঘটনা ঘটে গেল তাতে দেখা যাচ্ছে অনেক জিপির মানুষই এখন আসতে চাইছে না নিগমে।এটাও একটা বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এবারে যে এলাকা নির্ধারণে জনসংখ্যার যে বিভাজন ওয়ার্ড ভিত্তিক হয়েছে তাতে একটা সামঞ্জস্য রাখা হয়েছে। কোন ওয়ার্ডের জনসংখ্যা ৬ হাজারের নিচে নয়। সর্বোচ্চ ১১৯০০। এর আগে সর্বনিম্ন ৫০০০ এবং সর্বোচ্চ ১৫০০০ ছিল। এবার এটা পরিবর্তন করা হয়েছে । ১২ তারিখের মধ্যে তেমন আপত্তি না আসলে ধরে নেওয়া যায় এটাই চূড়ান্ত হবে।
তবে ম্যাপ নিয়ে যেভাবে টানা হ্যাচড়া চলছে,সেটার বোধহয় এবার অবসান ঘটল। ভালোই ভালো একটা ম্যাপ হয়ে যাক এটাই চাইছেন সবাই । কিন্তু নিগমের এলাকা ১০০ বর্গ কিলোমিটার না থাকা ভবিষ্যতে সমস্যাটা ডেকে আনতে পারে। এটাই একটা দুশ্চিন্তার বিষয়।
বিজ্ঞাপন