খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করা যেতে পারে, কায়িক পরিশ্রম ও ব্যায়াম করতে হবে, কম ক্যালোরির খাদ্য গ্রহণ করতে হবে, চর্বি ও চিনিযুক্ত খাদ্য গ্রহণ কমাতে হবে বা বিরত থাকতে হবে, আঁশ যুক্ত খাদ্য বেশি খেতে হবে। রোজের খাওয়ায় ১০ শতাংশ কার্বহাইড্রেটে, ২০ শতাংশ থেকে ২৫ শতাংশ ফ্যাট ও ৬৫ শতাংশ প্রোটিনকে জায়গা দিতে হবে
মোটা হয়ে যাচ্ছি, ওজন বেড়ে যাচ্ছে এই কথাগুলো আমাদের নিত্যদিনের সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। স্থুলতা এখন সারা বিশ্বেই এক বিরাট সমস্যার নাম ।বাড়তি ওজনের জন্য আমাদের অনেকেই নানা রকম সমস্যার মুখোমুখি হতে দেখা যায়| সাধারণভাবে স্বাভাবিক ওজনের চেয়ে ১০ ভাগ ওজন বেশি হলে তাকে স্থুলতা বা ওবেসিটি বলা যায়। স্থুলতা একটি রোগ শুক্রবার এমনটাই জানান বিপাকীয় এবং বারিয়াট্রিক সার্জারি তথা মনিপাল হাসপাতালের চেয়ারম্যান ড: সুমিত তলোয়ার|আজ ডাক্তারবাবু জানান, “শরীরে ভিটামিন, ক্যালসিয়াম কম হলে শুধু খাবার খেয়ে যেমন তার অভাব পূরণ হয়না তেমনই শুধু ব্যায়াম বা যোগা করে স্থুলতা কমবে না| এর জন্য দরকার প্রয়োজনীয় চিকিত্সা| সর্বপরি অপারেশন|” সুমিতবাবুর মতে, এক্সারসাইজ করে হয়ত ১০ শতাংশ ওজন কমবে| কিন্তু যাঁদের আরও বেশি পরিমান ওজন কমানোর দরকার তাঁদের শুধু ব্যায়াম করে কিছু হবেনা| এদিন সুমিত তলোয়ার বলেন, “যেমন ধরুন, কারো ওজন হওয়া উচিৎ ৬০ কেজি, তাঁর যদি ৬৬ কেজির চেয়ে ওজন বেশি হয় তাকে আমরা স্থুলতা বলবো। স্থুলতার জন্য বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। এছাড়াও স্থুলতার জন্য বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন রোগ ও জটিলতা দেখা দেবে। স্থুলতা একটি রোগ। পুরুষদের চেয়ে নারীরা স্থুলতায় ভোগেন বেশি। ওজন কমালে মৃত্যু ঝুঁকিও কমে”।পাশাপাশি তাঁর পরামর্শ, খাবারের তালিকায় কার্বহাইড্রেটের পরিমান কমিয়ে প্রোটিনের পরিমান বাড়াতে হবে| এজন্য খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করা যেতে পারে, কায়িক পরিশ্রম ও ব্যায়াম করতে হবে, কম ক্যালোরির খাদ্য গ্রহণ করতে হবে, চর্বি ও চিনিযুক্ত খাদ্য গ্রহণ কমাতে হবে বা বিরত থাকতে হবে, আঁশ যুক্ত খাদ্য বেশি খেতে হবে। রোজের খাওয়ায় ১০ শতাংশ কার্বহাইড্রেটে, ২০ শতাংশ থেকে ২৫ শতাংশ ফ্যাট ও ৬৫ শতাংশ প্রোটিনকে জায়গা দিতে হবে বলে এদিন জানান তিনি| স্থুলতা একটি নিয়ন্ত্রণযোগ্য সমস্যা। স্থুলতার সঙ্গে বিভিন্ন রোগের সরাসরি সম্পর্ক রয়েছে। হৃদরোগ, হার্ট অ্যাটাক, উচ্চ রক্তচাপ, হার্ট ফেইলিওর, উচ্চ কোলেস্টেরল, ডায়াবেটিস, মেয়েদের মাসিকের সমস্যা, পলিসিস্টিক ওভারি, বন্ধ্যাত্ব, গর্ভকালীন জটিলতা, ভ্রূণের মৃত্যু, স্ট্রোক, মাইগ্রেইন, কোমর, হাঁটু ও পায়ে ব্যথা, পা ফুলা থাকা, বগলের নিচে ও ঘাঢ়ে কালচে দাগ , লিভারে চর্বি জমে যাওয়া, এসিডিটির সমস্যা, ঘুমের মধ্যে শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা ও নাক ডাকা, এজমা, প্রস্রাব আটকে রাখতে না পারা এই সকল রোগের সাথেই হটাত শ্বাস কস্ট হওয়া| বা কোমরে পায়ে ব্যথা, প্রয়োজনের বেশি হাপিয়ে ওঠা এই সব কিছুই স্থুলতার লক্ষণ হতে পারে| তাই যখন এই ধরনের কোনও সমস্যা হবে তখন অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে|