শিলচর পুর কর্পোরেশন নিয়ে পাঁচটি মামলা হাইকোর্টে ঝুলে রয়েছে
শিলচর : পুর নির্বাচন নিয়ে আদালতের জটিলতা কাটাতে এবার নতুন চিন্তা ভাবনা করছে সরকার। শিলচর পুর কর্পোরেশন নিয়ে পাঁচটি মামলা হাইকোর্টে ঝুলে রযেছে। তাই হাইকোর্টের কোন সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত পরবর্তী কোনো পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব হবে না। ওয়ার্ড ডিলিমিটেশন চূড়ান্ত সংক্রান্ত নোটিফিকেশন সরকার প্রকাশ করতে পারছে না। তাই মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত কোনোভাবে শিলচর পুর নিগমের নির্বাচন করানো সম্ভব নয়।
কিন্তু সরকার যে কোনভাবেই হোক নভেম্বরে নির্বাচন করাতে চাইছে। মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা যে কোনভাবেই শিলচর পুর নিগমের নির্বাচন করিয়ে নিতে চান। কিন্তু সমস্যা হয়েছে আদালতের অবস্থান। সব আইনের বিশ্লেষণের পর এই সমস্যা সমাধানের একটা নতুন রাস্তা পাওয়া গেছে বলে মনে করছেন সরকার।
কি সেই নতুন রাস্তা? রাস্তাটা হল মধ্যপ্রদেশে বিভিন্ন পুরনিগম নির্বাচন নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট একটা রায় দিয়েছিল। মধ্যপ্রদেশে পুর নিগমগুলিতে ওবিসি আসন সংরক্ষণ নিয়ে একটা জটিলতা ছিল। এনিয়ে সুপ্রিম কোর্ট বলেছে যে ওবিসি আসন সংরক্ষণ প্রক্রিয়া পরেও করলে হবে ।কিন্তু নির্বাচন প্রক্রিয়া আটকানো যায় না।
সুপ্রিম কোর্ট এটা পরিষ্কারভাবে উল্লেখ করেছে যে একটি নির্বাচিত বোর্ডের দায়িত্ব পাঁচ বছর। পাঁচ বছরের পরে জনসাধারণ তাদের প্রতিনিধি নির্বাচন করবেন এটাই নিয়ম। এটাই জনগনের অধিকার। তাই মধ্যপ্রদেশের বিভিন্ন পুর নিগমের বা পুরসভার গঠন নিয়ে যে জটিলতা ছিল সেটা সমাধানের জন্য সুপ্রিমকোর্ট বলেছিল যে আসনগুলো নিয়ে জটিলতা সেই আসনগুলোকে আপাতত সাধারণ বলে ঘোষণা করে নির্বাচন করিয়ে নিতে হবে।
নির্বাচনের পরেও এই সমস্যার সমাধান করা যেতে পারে। কিন্তু এই সমস্যার জন্য নির্বাচন কোন অবস্থায় আটকানো যাবে না। সুপ্রিম কোর্ট মধ্যপ্রদেশ রাজ্য নির্বাচন কমিশন কে নির্বাচন করানোর নির্দেশ দিয়েছিল।
এখন সুপ্রিম কোর্টের এই রায়কে হাতিয়ার করে হাইকোর্টে আসাম সরকারের পক্ষ থেকে একটা এফিডেভিট দাখিল করা হতে পারে। আর এই এফিডেভিটে যদি হাইকোর্ট সন্তুষ্ট হয় তাহলে নির্বাচন করানোর অনুমতি দিতে পারে আদালত। সেক্ষেত্রে ওয়ার্ড ডিলিমিটেশনের গেজেট নোটিফিকেশন সংক্রান্ত আইনি প্রক্রিয়ায় কোন বাধা থাকবে না। এবং নির্বাচন করিয়ে নেওয়া সম্ভব হবে। আপাতত এই পদ্ধতিতে হাঁটছে সরকার।
অর্থাৎ এ ধরনের কোন এফিডেভিট যদি রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে হাইকোর্টে দেওয়া হয় তাহলে হাইকোর্ট এটা মেনে নিতেও পারে। যেহেতু মধ্যপ্রদেশ সম্পর্কে সুপ্রিম কোর্ট এ ধরনের একটা আদেশ দিয়েছিল তাই সেটাকে দেখিয়ে রাজ্য সরকার পুর নিগমের নির্বাচন করানোর পক্ষে যুক্তি খাড়া করবে।
কয়েকটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার নিগমে অন্তর্ভুক্তি নিয়ে মামলাগুলো রয়েছে সেগুলোর নিষ্পত্তি পরে হবে ।আপাতত যে সীমানা নির্ধারণ করা হয়েছে সেটা দিয়েই নির্বাচন হয়ে যাক। এরকম একটা যুক্তি আদালত মেনে নিতেও পারে। এছাড়া পুর এলাকায় এলাকায় ঢুকে বহু এলাকা পরে আবার গাঁও পঞ্চায়েতে চলে গেছে এমন নিদর্শন রয়েছে এই শিলচরের রংপুরে। তাই চাইলে আদালত এ বিষয়টা সম্পর্কে নির্বাচন কমিশনকে নির্বাচন করানোর অনুমতি দিতে পারে।
এছাড়া পুরসভা পরিচালনার জন্য অস্থায়ী বোর্ডেকে ৬ মাসের বেশি ক্ষমতা দেওয়া যায় না। সুপ্রিম কোর্ট এই কথাও বলেছে। জনগণকে পাঁচ বছর পর পর তাদের পুর প্রতিনিধি নির্বাচন করার অধিকার থেকে বঞ্চিত করা যায় না। এ কথাও সুপ্রিম কোর্ট তাদের রায়ে উল্লেখ করেছে। এটা রেফারেন্স হিসেবে ধরে নিয়ে আদালতে হলফনামা জমা দিতে পারে সরকার এমন একটা সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। তবে সরকার যদি আদালতে এ ধরনের কোন এফিডেভিট জমা না দেয় তাহলে এই নভেম্বরে বা ডিসেম্বরে পুর নির্বাচন সম্ভব নয়। তবে মুখ্যমন্ত্রী যখন চাইছেন তাহলে আদালতে জমা দেওয়া হতে পারে।