উল্লেখ্য, বর্ণালী ভট্টাচার্য তাঁর পিসি কমলা ভট্টাচার্যের স্মৃতিতে “বীরাঙ্গনা কমলা” নামে ইংরাজিতে গ্রন্থ প্রকাশ করেন
মৃদুলা ভট্টাচার্য
শিলচর : বরাকের বাংলা ভাষা শহীদ কমলা ভট্টাচার্য ১৯৫৪ সালে শিলচর সরকারি বালিকা উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি হন। স্কুলের নথিপত্রে রয়েছে তাঁর নাম। ১৯৬১ সালে তিনি যখন মেট্রিক দেন তখন বিদ্যালয়টি হায়ার সেকেন্ডারি স্কুল। ‘৬১ সালের মেট্রিক পরীক্ষার পরই তিনি ভাষা আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েন এবং শহীদের মৃত্যু বরণ করেন।
স্কুলের অধ্যক্ষ বিভাস রঞ্জন চক্রবর্তী বলেন, সরকারি বালিকা উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের তিনি যে ছাত্রী ছিলেন তা ছাত্র রেজিস্ট্রেশন তথ্যই জানান দেয়। ১৯৫৪ সালের রেজিস্ট্রার এ তাঁর নাম রয়েছে। তিনি আরও বলেন, শহীদ কমলা আমাদের স্কুলের গর্ব। এবং এই ছবি পাওয়া স্কুলের জন্য আনন্দের বিষয় এবং বর্তমানে যেসব ছাত্ররা জানেনা তারাও জানতে পারবে। ভাষা আন্দোলনের কথা জানতে উৎসাহিত হবে বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেন।
উল্লেখ্য, কলকাতায় বসবাসরত কমলা ভট্টাচার্যের ভাতুষ্পুত্রী বর্ণালী ভট্টাচার্য কমলা ভট্টাচার্যের স্কুল জীবনের সহপাঠীদের সঙ্গে নিয়ে ১৯৬১ সালের সরস্বতী পুজার পর স্কুল প্রাঙ্গণে তোলা ছবিটি এদিন তুলে দেন স্কুলের অধ্যক্ষের হাতে। বর্ণালী জানান, তার পিতা প্রয়াত বকুল চন্দ্র ভট্টাচার্যের সংগ্রহে ছিল ছবি এবং অনেক তথ্য।
বকুল চন্দ্র ছিলেন কমলা ভট্টাচার্যের ছোট ভাই। বর্ণালী তার পিসির স্মৃতিতে ছবিটি প্রদান করেন। তিনি আরও জানান, যাতে স্কুল এবং বরাকের ভাষাপ্রেমী জানতে পারেন কমলা ভট্টাচার্য এই স্কুলের ছাত্রী ছিলেন। তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এবং নিজের প্রয়াত পিতার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনে তার এই কাজ।
উল্লেখ্য, বর্ণালী ভট্টাচার্য তাঁর পিসি কমলা ভট্টাচার্যের স্মৃতিতে “বীরাঙ্গনা কমলা” নামে ইংরাজিতে গ্রন্থ প্রকাশ করেন। এতে ১৯৬১ সালের শিলচরে ভাষা আন্দোলন ও আন্দোলনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেছেন বর্ণালী।
তার পিতা বকুল চন্দ্র ভট্টাচার্য অর্থাৎ কমলা ভট্টাচার্যের ছোট ভাইয়ের সংগ্রহে ছিল কমলার স্কুল জীবনের ছবি ও অনেক তথ্য। এইসব সংগ্রহ তথ্য থেকেই বর্ণালী ভট্টাচার্য ছবি বাঁধাই করে স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে তুলে দেন। এবং তার বীরাঙ্গনা কমলা গ্রন্থ রচিত করেন।
এদিন ছবি প্রদান কালে উপস্থিত ছিলেন নেতাজি সুভাষ ফাউন্ডেশনের সভাপতি নীহার রঞ্জন পাল, প্রণব রায় চৌধুরী, কবি সাংবাদিক মৃদুলা ভট্টাচার্য প্রমুখ। ছবি প্রদানের পর নীহার রঞ্জন পাল জানান, বর্ণালীর কাছ থেকে এসব তথ্য জানার পর স্কুলের অধ্যক্ষ বিভাস রঞ্জন চক্রবর্তীর সঙ্গে তিনি যোগাযোগ করেন। অধ্যক্ষ নিজের হাতে পুরাতন নথিপত্র খুঁজে তথ্য বের করেন। কমলা ভট্টাচার্যের ভর্তি সংক্রান্ত রেজিস্ট্রেশন। তিনি এজন্য অধ্যক্ষকে সাধুবাদ জানান।