ডাক্তারের ভুমিকা পালন করছেন নার্সরা। পালংঘাট মডেল হাসপাতালে চিকিৎসা পরিষেবা লাটে।

2 - মিনিট |

মাত্র ৪ঘন্টা চিকিৎসা পরিষেবা। নেই জরুরীকালীন পরিষেবা। দুর্ভোগে এলাকার লক্ষাধিক মানুষ।

অজিত দাস

প্রতিদিন মাত্র ৪ঘন্টা চিকিৎসা পরিষেবা। এরপর নিজের নিজস্ব কর্মে ব্যাস্ত হন ডাক্তাররা। এমন অভিযোগ বেশ কয়েকটি  মহাত্মা গান্ধী মডেল হাসপাতালে পাওয়া গেছে। পালংঘাট মহাত্মা গান্ধী মডেল হাসপাতালে সোমবার সকাল ১০টা গিয়ে দেখা যায় রোগীরা বসে রয়েছেন ডাক্তারের অপেক্ষায়।

প্রসূতি বিভাগে ৪/৫ জন গর্ভবতী মহিলারা রবিবার সন্ধ্যা থেকে শুরু করে সোমবার সকালে ভর্তি হয়েছেন। ৩টি নবজাত শিশুর মায়েদের পরিষেবা প্রদান করছেনে নার্সরা। ডাক্তার নেই। মায়ের কোলেই রয়েছেন শিশুরা। তাদেরকে জিজ্ঞেস করলে জানা যায়, তাদেরকে নার্সরাই পরিষেবা প্রদান করছেন, সকাল ১১টা পর্যন্ত কোনো ডাক্তার এসে তাদেরকে পরিক্ষা করেন নি।  পুরো হাসপাতালের ভিতরে দেখা যায় বেশ কয়েকটি বিভাগ রয়েছে। কিন্তু হাসপাতালের কর্মীরা নেই। ফাঁকা রয়েছে হাসপাতালের সবকটি কক্ষ। সকালে ৬/৭ জন নার্সরা এসে পরিষেবার জন্য কাউন্টার খুলেন,  হ্যাঁ এই ৪ ঘন্টা অবশ্য ভালোভাবেই পরিষেবা প্রদান করেন বলে জানা গিয়েছে। পরবর্তী সময়ে আর কাউকে দেখা আর যায় না বলে অভিযোগ।

এদিকে পালংঘাট পুলিশ ফাঁড়ির কর্মীরা জরুরীকালীন কোনো আসামীদের পরীক্ষা করাতে হলে নির্ধারিত সময় ছাড়া তাদেরকে যেতে হয় ধলাই হাসপাতালে। এধরণের অভিযোগ বেশ কয়েক বছরের। বলা বাহুল্য, এধরণের ডাক্তারদের কর্মে গাফিলতির ফলে বরাক উপত্যকায় সক্রিয় শান্তি কুমার সিংহ ইন্ডাস্ট্রির ভুয়া ডাক্তাররা। কংগ্রেস নেতা শান্তি কুমারের NECAM এর সার্টিফিকেট নিয়ে গ্রামে গঞ্জে আনাচে কানাচে ভুয়া ডাক্তাররা পরিষেবা দিয়ে মানুষের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলা করছে।  এরকম খবর বিভিন্ন পত্র পত্রিকা ও সংবাদমাধ্যমের শিরোনাম দখল করলেও বিভাগীয় কর্মকর্তাদের বিশেষ কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যায় নি। সোমবার পূর্ব ধলাইর বেশ কয়েকজন হাসপাতালে থাকা রোগীরা জানান, তাদের জরুরীকালীন পরিষেবার ১০৮ এম্বুলেন্স তাদেরকে এখানেই নিয়ে আসে তারপর এখানে কোনো ডাক্তারের দেখা মিলে নি।

এবিষয়ে সহকারী ডাক্তার, সাহানাজ পারবিন লস্করকে জিজ্ঞেস করলে জানা যায়, তিনি একাই এই হাসপাতালে চিকিৎসা পরিষেবা প্রদান করেন। রবিবার ওপিডি বন্ধ থাকে। হাসপাতাল ইনচার্জ জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের জন্ম মৃত্যু সংক্রান্ত বিশেষ বিভাগের দায়িত্বে থাকায় এখানে আসেন না। তবে সপ্তাহে এক দুবার আসেন। এদিকে মাস খানেক আগে আরেকজন ডাক্তারকে এখানে নিয়োজিত করা হলে ধলাই হাসপাতাল উনাকে নিয়ে যায়। এমতাবস্থায় তিনি একাই হাসপাতালে চিকিৎসা পরিষেবা প্রদান করছেন। দেখা গিয়েছে, স্বাস্থ্য বিভাগের এহেন কাণ্ডে রোগীরা বেশ সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। একই অবস্থায় কচুদরম মডেল হাসপাতালে দেখা গিয়েছে।

বিগত ৪ মাস আগে সেখানে স্থানীয়দের অভিযোগ উত্থাপন করেন ডাক্তারদের অনুপস্থিতি ও কর্তব্যে গাফিলতির। এরপর সংবাদ প্রকাশিত হলে দুই আড়াই মাস দিন রাত পরিষেবা প্রদান করেন ডাক্তাররা। বর্তমানে আবারো পুরনো কায়দায় চলে গিয়েছে বলে জানা গিয়েছে। কেননা সেখানে কচুদরম থানার পুলিশকর্মীরা আসামীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাতে হলে সোনাই হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয়। মহাত্মা গান্ধী মডেল হাসপাতাল যদিও গ্রামাঞ্চলের মানুষকে চিকিৎসা পরিষেবা প্রদান করার উদ্দেশ্যে বানানো হয়েছে তবে দেখা গিয়েছে শুধু কাগজে কলমে দায়িত্ব পালন করা ছাড়া আর কিছুই নেই। সরকারের কোটি কোটি টাকায় নির্মিত মডেল হাসপাতালগুলি ওপিডি-র সময়ের পর ভুত বাংলায় পরিণত হয়।

এবিষয়ে হাসপাতাল ইনচার্জ ডক্টর মনোজ মজুমদারের প্রতিক্রিয়া নিতে চাইলে তিনি জানান, হাসপাতালে কর্মীদের অভাব তাছাড়া তিনি নিজে বেশ দূর থেকে গিয়ে চিকিৎসা পরিষেবা প্রদান করেন। তার পর উনার নিজের পরিবারকে ও দেখাশোনা করতে হয়। নিজের উপর সরকার ও পরিবারের বেশ কিছু দায়িত্ব রয়েছে। আজও তিনি গুয়াহাটিতে একটি ট্রেনিংয়ের জন্য রওয়ানা দিয়েছেন।

Promotional | Barak Valley Conclave @Barak Festival

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related news