১৯৯৯ সালে শহরে ‘কুমানোকোদো’ ধর্মীয় উৎসবকে মহড়া বানিয়ে শুরু করা হয় পর্যটন প্রসারের উদ্যোগ। আর তখনি এক বয়স্ক পোস্টমাস্টারের পরামর্শতেই নেওয়া হয় এই নতুন ধরনের উদোগ। ১৯৯৯ থেকে আজ পর্যন্ত চিঠির পরিসংখ্যান বেড়ে হয়েছে প্রায় ৩৫ হাজার
ই-মেলের যুগে চিঠি! তাও আবার নাকি পর্যটকদের আকর্ষণ বিন্দু। কথাটা শুনলেই মুখ বেঁকিয়ে বসবে অনেকেই। কারোর আবার মনে হবে যত সব আজগুবি ঘটনা। ২০০২ সালে ‘ডিপেস্ট আন্ডার ওয়াটার পোস্টবক্স’ হিসেবে গিনেস বুক-এ নামও উঠে এসেছে এই ডাকবাক্সটির। কিছুটা অবিশ্বাস্য মনে হলেও এমনটাই হয় জাপানের সুসামি শহরে। এই ৩২ ফুট সমুদ্রের নীচে রাখা ডাকবাক্সের চিঠির টানেই ঢল নামে হাজার হাজার পর্যটকদের। সুসামির পর্যটক বিভাগ ‘ডিপ সি ডাইভিং’-কেই অবশ্য এরকম আশ্চর্যরকম উদ্যোগের কারণ হিসেবে দেখিয়েছেন।
জাপানের এই শহরে পাঁচ হাজারের বেশি মৎস্যজীবী মানুষের বসবাস। ১৯৯৯ সালে শহরে ‘কুমানোকোদো’ ধর্মীয় উৎসবকে মহড়া বানিয়ে শুরু করা হয় পর্যটন প্রসারের উদ্যোগ। আর তখনি এক বয়স্ক পোস্টমাস্টারের পরামর্শতেই নেওয়া হয় এই নতুন ধরনের উদ্যোগ । ১৯৯৯ থেকে আজ পর্যন্ত চিঠির পরিসংখ্যান বেড়ে হয়েছে প্রায় ৩৫ হাজার।
সমুদ্র সৈকত থেকে ১০ মিটার দূরে ৩২ ফুট জলের গভীরেই বসানো হয়েছে এই ডাকবাক্সকে। অবশ্য অবয়বে পরিবর্তনের কোনও চিহ্ন নেই। আর পাঁচটা সাধারণ ডাকবাক্সের মতোই লাল রঙের দেখতে এই বিশেষ বাক্সটি । প্রশ্ন উঠছে, জলের তলায় চিঠিপত্র টিকবে কীভাবে। অবশ্য এর জন্য রয়েছে বিশেষ ব্যবস্থা। সুসামির স্থানীয় দোকানেই পাওয়া যায় বিশেষ ধরনের ওয়াটারপ্রুফ কাগজ, খাম আর বিশেষ মার্কার পেন। এই মার্কার দিয়ে ওয়াটারপ্রুফ কাগজে চিঠি লিখে জলের নীচে গিয়ে নিজেদের চিঠি পোস্ট করেন পর্যটকরা। একটা নির্দিষ্ট সময় পরপর পোস্টাল ডাইভাররা গিয়ে তুলে আনেন সেই বিশেষ চিঠিগুলি। প্রায় এক সপ্তাহের মধ্যেই স্থানীয় ডাকঘরগুলির মাধ্যমে চিঠি পৌঁছে যাই নির্দিষ্ট গন্তব্যে। আর পাশাপাশি ডাকবাক্সের তদারকির জন্যও রয়েছে বিশেষ ব্যবস্থাপনা। ৬ মাস অন্তর ডাকবাক্সটিকে জলের নীচ থেকে তুলে এনে মেরামতির কাজকর্ম সেরে ফেলা হয়। দুটি ডাকবাক্স এভাবেই ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে রেখে আসা হয় সমুদ্রের নীচে। জলের তলায় রাখা এই বিশেষ ডাকঘর নজর কেড়েছে অনেক পর্যটকরেই। ‘ডিপ সি ডাইভিং’ কে প্রোমোট করার উদ্দেশ্যে এই অভিনব প্রচেষ্টাও বিশেষভাবেই প্রশংসিত হয়েছে বিশ্বের দরবারে।