শতবর্ষের অনুষ্ঠান চলবে আগামী দুই বছর ধরে। পুরো অনুষ্ঠান সূচি অবশ্য প্রকাশ করা হয়নি। ২৮ জুলাই কুমোরটুলি পার্ক থেকে প্রাক্তন ফুটবলার সুকুমার সমাজপতি মশাল হাতে নিয়ে এই পদযাত্রা শুরু করবেন
লড়াইয়ের ময়দানে ১০০ বছর।
ছিন্নমূল বাঙালির আকাশছোঁযার স্পর্ধা।
খালি পা থেকে লেটেস্ট বুট, পায়ে পায়ে ১০০।
বল বদলেছে, বদলায়নি বল দখলের লড়াই।
রেডিও রিলে থেকে লাইভ স্ট্রিমিং, উন্মাদনার ১০০ বছর।
ইস্টবেঙ্গল ক্লাব প্রাঙ্গনে শীততাপ নিয়ন্ত্রিত মিডিয়া সেন্টারে মঞ্চের পিছনে জায়েন্ট স্ক্রিনে ফুটে উঠছিল এরকমই একের পর এক স্লোগান। এগুলি সবই শতবর্ষ উপলক্ষে ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের ক্যাচ-লাইন।১৯২০ সালের ২৮ জুলাই সুরেশচন্দ্র চক্রবর্তীর মাথায় নতুন ক্লাব খোলার পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হল কয়েকদিনের মধ্যেই।১ আগস্ট জন্ম নিল ইস্টবেঙ্গল ক্লাব।মশাল বাহিনী এবার পা দিল ১০০ বছরে। সেই উপলক্ষেই এত আয়োজন।
বাঙালির প্রিয় শারদোৎসবের ঢাকে কাঠি পড়ার আগেই শুরু হয়ে গেল ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের শতবর্ষ যাপন। বুধবার সন্ধেয় ক্লাবপ্রাঙ্গনে লাল-হলুদ ব্রিগেডের একঝাঁক প্রাক্তন ও বর্তমান তারকা ফুটবলারের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত হল তার প্রথম সাংবাদিক সম্মেলন। কেক কেটে শতবর্ষের পথচলা শুরু করলেন ডা. প্রণব দাশগুপ্ত, কল্যাণ মজুমদার, ডা. শান্তিরঞ্জন দাশগুপ্ত, দেবব্রত সরকারের মতো ক্লাবের শীর্ষকর্তাদের পাশাপাশি ভাস্কর গঙ্গাপাধ্যায, মনোরঞ্জন ভট্টাচার্য ও বাইচুং ভুটিয়া। এরপর হল শতবর্ষের লোগো উদ্বোধন। এদিনের অনুষ্ঠান উপলক্ষে মিডিয়া সেন্টারে বসেছিল চাঁদের হাট। উপস্থিত ছিলেন সুকুমার সমাজপতি, সুরজিৎ সেনগুপ্ত, সমরেশ চোধুরি, মিহির বসু, প্রশান্ত বন্দ্যোপাধ্যায়, স্বপন সেনগুপ্ত, অ্যালিভটো ডিকুনহা, সৌমিক দে, অনীত ঘোষ, কল্যান চন্দ, রহিম নবি, দেবজিৎ ঘোষ, কবীর বসু, ষষ্টি দুলে. দীপঙ্কর রায়, চন্দন দাস, কল্যাণ চৌবের মতো প্রাক্তন ফুটবলারদের পাশাপাশি বর্তমান দলের দুই ফুটবলার রক্ষিত ডাগর ও হাইমে সান্তোস কোলাডো।
শতবর্ষের অনুষ্ঠান চলবে আগামী দুই বছর ধরে। পুরো অনুষ্ঠান সূচি অবশ্য প্রকাশ করা হয়নি। বুধবার সাংবাদিক সম্মেলনে প্রকাশিত হয়েছে প্রথম তিনটি অনুষ্ঠানের নির্ঘণ্ট। অনুষ্ঠানের সূচনা হবে বর্ণাঢ্য পদযাত্রার মধ্যে দিয়ে।২৮ জুলাই কুমোরটুলি পার্ক থেকে প্রাক্তন ফুটবলার সুকুমার সমাজপতি মশাল হাতে নিয়ে এই পদযাত্রা শুরু করবেন।উত্তর ও মধ্য কলকাতার বেশ কয়েকটি অঞ্চল ঘুরে এই পদযাত্রা ক্লাবে প্রবেশ করার সময় মশাল হাতে নেবেন বাইচুং ভুটিয়া তারপরে সেই মশাল জ্বলবে ক্লাব প্রাঙ্গনে। এরপর ১ আগস্ট নেতাজি ইন্ডোরে মূল অনুষ্ঠানে ভারত গৌরব সম্মান তুলে দেওয়া হবে ১৯৮৩-র বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক ও বিশ্বক্রিকেটের সর্বকালের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার কপিল দেব নিখাঞ্জের হাতে। প্রাক্তন এই ভারত অধিনায়কের সঙ্গে ইস্টবেঙ্গলের সম্পর্ক অবশ্য বহুদিনের কপিল লাল-হলুদ জার্সিতে কলকাতার মাঠে খেলেও গিয়েছেন। একই দিনে নেতাজি ইন্ডোরে জীবনকৃতি সম্মান তুলে দেওয়া হবে দুই ঘরের ছেলে মনোরঞ্জন ভট্টাচার্য ও ভাস্কর গঙ্গোপাধ্যায়ের হাতে। একই মঞ্চে আইকন ফুটবলার হিসাবে বাইচুং ভুটিয়া ও গত বছরের সেরা ফুটবলার হিসাবে সম্মান জানানো হবে লালডানমাওইয়া রালতেকে। কোচেদের কোচ হিসাবে সম্মান জানানো হবে পিকে বন্দ্যোপাধ্যায়কে।
১ আগস্ট ক্লাবের প্রতিষ্ঠা দিবসের অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সংবর্ধিত হবেন রাজ্যের ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস ও মেয়র ফিরহাদ হাকিম। পাশাপাশি বিশেষ সংবর্ধনা জানানো হবে কিংবদন্তি অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় ও বাংলা ক্রিকেটের আইকন তথা জাতীয় ক্রিকেট দলের প্রাক্তন অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কে। একই সঙ্গে পয়লা আগস্টের মঞ্চে সম্মান জানানো হবে ইস্টবেঙ্গলের প্রতিষ্ঠাতা সদস্যদের সঙ্গে ক্লাবের ইতিহাসে যুক্ত বিভিন্ন পরিবারকেও।ওই দিন পৃথিবীর অন্তত ২০০টি দেশে একসঙ্গে— দুপুর ১২ টায় ক্লাবের লাল হলুদ পতাকা উত্তোলন করা হবে।
শতবর্ষের তৃতীয় পর্বের অনুষ্ঠানিট পালিত হবে প্রয়াত ক্লাব কর্তা পল্টু দাসের জন্মদিন অর্থাৎ ১৩ আগস্ট। নেতাজি ইন্ডোরে সে দিন বিশেষ সম্মান জানানো হবে বর্ষীয়ান চলচিত্র পরিচালক তরুণ মজুমদার, সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় ও নাট্যব্যক্তিত্ব রুদ্রপ্রসাদ সেনগুপ্তকে।ঐ দিন সকালে ক্ষুদিরাম অনুশীলন কেন্দ্রে সকাল দশটা থেকে রয়েছে রক্তদান ও বিনামূল্যে স্বাস্থ্য পরীক্ষা শিবির।