ত্রিপুরা ও বাংলাদেশের মধ্যে নানা উন্নয়নের কাজ খতিয়ে দেখতে সোমবার দুদিনের আগরতলা সফর এসেছিলেন ঢাকায় অবস্থিত ভারতীয় হাইকমিশনার রীভা গাঙ্গুলি।
ত্রিপুরা ও বাংলাদেশের মধ্যে নানা উন্নয়নের কাজ খতিয়ে দেখতে সোমবার দুদিনের আগরতলা সফরে এসেছিলেন ঢাকায় অবস্থিত ভারতীয় হাইকমিশনার রীমা গাঙ্গুলি। তিনি বিভিন্ন প্রকল্প ঘুরে দেখার পাশাপাশি ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লবকুমার দেব এবং রাজ্যপাল অধ্যাপক কাপ্তানসিং সোলাঙ্কির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। মঙ্গলবার তিনি আখাউড়া সীমান্ত দিয়ে ঢাকা ফিরে যান।
হাই কমিশনার রীভা গাঙ্গুলির সঙ্গে তাঁর কী আলোচনা হয়েছে তা সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব। তিনি বলেন, ত্রিপুরা ও বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত গোমতি নদীতে নৌপরিবহণের জন্য ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে চুক্তি হয়েছে। ইতিমধ্যে উভয় দেশের বিশেষজ্ঞ দল সরেজমিনে তা পর্যবেক্ষণ করে রিপোর্ট জমা করেছেন। এখন গোমতি নদীতে ড্রেজিং করে তার নাব্যতা বাড়িয়ে ছোট ও মাঝারি আকারের জাহাজ চালানোর পরিকল্পনা চলছে। কী করে তা দ্রুত চালু করা যায় এই বিষয়ে কথা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, এর ফলে উভয় দেশ লাভবান হবে। বিশেষ করে ত্রিপুরা, নিম্ন অসম, মেঘালয় মিজোরাম-সহ উত্তরপূর্ব ভারতের প্রায় সবকটি রাজ্য উপকৃত হবে। ত্রিপুরায় ভালো মানের চা উৎপাদিত হচ্ছে। রাজ্যের চাহিদা পূরণ করে ত্রিপুরা রাজ্য বছরে ১০ হাজার মেট্রিকটন চা বিক্রি করার ক্ষমতা রাখে। বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কা থেকে চা আমদানি করে। কিন্তু তারা যদি ত্রিপুরা থেকে চা আমদানি করে এতে তাদের পরিবহণ খরচ অনেকগুণ কমে যাবে। এখন বাংলাদেশ থেকে পণ্য নিয়ে যে সকল ট্রাক আসে, এগুলি সীমান্ত পর্যন্ত পৌঁছতে পারে। একইভাবে ত্রিপুরার ট্রাকও বাংলাদেশ সীমান্ত পর্যন্ত যেতে পারে। এই বাধা তুলে সরাসরি নির্ধারিত এলাকায় চলে যায় যেখানে পণ্য রাখা হবে, এতে একদিকে যেমন সময় কম লাগবে অপরদিকে লোড-আনলোডের খরচা অনেক কমে যাবে। উভয় দেশের ট্রাক যাতে এই পদ্ধতিতে চলতে পারে তার জন্য কথা চলছে।
ত্রিপুরার দক্ষিণ জেলার সাব্রুমে দুটি বিশেষ শিল্পাঞ্চল গড়ে তোলা হবে। এই দুটিতে সর্বাধুনিক ও সব ধরনের সুবিধা দেওয়া হবে। এতে যাতে বাংলাদেশের গার্মেন্টস শিল্পের মালিকরা এসে বিনিয়োগ করেন, সেই সঙ্গে ত্রিপুরার রবারকে ভিত্তি করে যেন সে-দেশের ব্যবসায়ীরা শিল্প গড়ে তুলেন। ত্রিপুরা ও বাংলাদেশের মধ্যে দুটি সীমান্তহাট রয়েছে। আরও ৯ টি সীমান্তহাট তৈরির বিষয়ে আলোচনা চলছে। এই বিষয়টি যেন আরও দ্রুততর হয়।
এখন বাংলাদেশ থেকে ত্রিপুরা রাজ্যের যে সীমান্ত দিয়ে যারা প্রবেশ করবেন, তাদের সেই সীমান্ত দিয়ে বেরিয়ে যেতে হবে, একই নিয়ম বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। কিন্তু ভারতের অন্য কোনও রাজ্যে এই নিয়ম প্রযোজ্য নয়। ত্রিপুরা-বাংলাদেশের ক্ষেত্রে এই নিয়ম যাতে উঠে যায় এই বিষয়ে আলোচনা ভারত এবং বাংলাদেশের মধ্যে চলছে বলেও জানান তিনি। হাই কমিশনার সে-দেশে ফিরে গিয়ে কূটনৈতিকস্তরে এগুলি দ্রুত করার জন্য আলোচনা করবেন।