এছাড়া এনসিএইচ (ন্যাশনাল কনজিউমার হেল্প লাইন)- 1915 পরিষেবা ২৪ ঘণ্টাই পাওয়া যায় ১২টি ভাষায়
গত দু বছরে ই-দাখিল পোর্টালে ই-ফাইলিং’এর মাধ্যমে মোট ২৩ হাজার ৬৪০টি অভিযোগ জমা পড়েছে। এই সুবিধা বর্তমানে ৩৩টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে সংশ্লিষ্ট এনসিডিআরসি, রাজ্য কমিশন, ১৩টি সার্কিট বেঞ্চ, ৬৫১টি জেলা কমিশনে পাওয়া যাচ্ছে।
২০২০র ৭ সেপ্টেম্বর সূচনা হওয়ার পর থেকে ই-দাখিল পোর্টালের সফল দ্বিতীয় বর্ষপূর্তিতে উপভোক্তা বিষয়ক দপ্তরের সচিব শ্রী রোহিত কুমার সিং অতিরিক্ত সচিব ও চিফ কমিশনার অফ সেন্ট্রাল কনজিউমার প্রোটেকশন অথরিটি (সিসিপিএ) শ্রীমতী নিধি খারে-কে নিয়ে আজ এখানে একটি ই-বুক প্রকাশ করলেন। জোর দিলেন ই-দাখিলের প্রসারে। ই-দাখিল পোর্টালে নিবন্ধীকৃত ব্যবহারকারীর সংখ্যা অন্তত ৮৪ হাজার ৯৫৭ এবং এখনও পর্যন্ত ৫ হাজার ৫৯০টি অভিযোগ গৃহীত হয়েছে।
উপভোক্তাদের নতুন নতুন উদ্বেগের মোকাবিলায় ২০২০র ২০ জুলাই থেকে উপভোক্তা সুরক্ষা আইন ২০১৯ বিজ্ঞাপিত এবং বলবৎ হয়। কোভিড-১৯এর কারণ বিধি-নিষেধের ফলে উপভোক্তাদের অসুবিধার কথা বিবেচনা করে ই-দাখিল পোর্টালের সূচনা হয়েছিল, যাতে উপভোক্তারা কম খরচে দ্রুত এবং অবাধে তাদের অভিযোগ দাখিল করতে পারেন।
সময়াভাবে যে সমস্ত উপভোক্তা তাদের অভিযোগের সমাধানের জন্য উপভোক্তা আয়োগের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেনা তাদের জন্য ই-দাখিল কর্মসূচি একটি সহজ ব্যবস্থা। গ্রামীণ উপভোক্তাদের জন্য ইলেকট্রনিক দাখিল ব্যবস্থা আরও সহজ করতে ই-দাখিলের সঙ্গে কমন সার্ভিস সেন্টারগুলিকে (সিএসসি) সংযুক্ত করার ব্যাপারে ঐকমত্য হয়েছে। গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরে যে সমস্ত উপভোক্তা কনজিউমার কমিশনে অভিযোগ দাখিল করতে ইলেকট্রনিক মাধ্যম ব্যবহারে সক্ষম নন তারা সিএসসি-র পরিষেবা ব্যবহার করে থাকেন। সিএসসি-র সঙ্গে এই পোর্টালের সংযুক্তিকরণ প্রক্রিয়া বর্তমানে সম্পূর্ণ। ফলে যে সমস্ত উপভোক্তার কাছে ইলেকট্রনিক যন্ত্র লব্ধ নয় বা যাদের ইলেকট্রনিক যন্ত্র ব্যবহারের জন্য যথেষ্ট প্রযুক্তিগত দক্ষতা নেই তারা স্থানীয় সিএসসি-র থেকে সহায়তা নিয়ে সংশ্লিষ্ট কনজিউমার কমিশনে অভিযোগ জানাতে পারেন।
বেশ কিছু সাফল্যের কাহিনী আছে যেগুলির নিষ্পতি হয়েছে ই-দাখিলের মাধ্যমে। মাননীয় বিচারপতি সুভাষ চন্দ্র কুলশ্রেষ্ঠের নেতৃত্বে উত্তর প্রদেশের মৈনপুরী জেলা জেলা ই-দাখিল প্ল্যাটফর্মে দ্রুত নিষ্পত্তির বিষয়ে সবচেয়ে এগিয়ে। অভিযোগের মীমাংসার জন্য ই-কমার্স এনটিটি দ্বারা ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে উপভোক্তার অভিযোগের স্বীকৃতি দেওয়া বাধ্যতামূলক।
উপভোক্তা সুরক্ষা আইন ২০১৯এর কার্যকরী সংস্থানের ফলে অসন্তুষ্ট উপভোক্তা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার জন্য ক্ষতিপূরণ দাবি করতে পারেন। এতে এমন সংস্থানও রাখা হয়েছে যাতে উপযুক্ত আদালত আইন লঙ্ঘনকারীকে জরিমানা করতে পারে। আইনে কনজিউমার কমিশনে ভিডিও কনফারেন্সিং-এর মাধ্যমে অভিযোগের শুনানিরও সংস্থান আছে।
যে কোন উপভোক্তা বা ব্যবহারজীবী প্রয়োজনীয় শর্ত পূরণ করে তাদের নিবন্ধীকৃত সেলফোনে প্রাপ্ত ওটিপি দিয়ে অথবা তাদের নিবন্ধীকৃত ই-মেল ঠিকানায় অ্যাক্টিভেশন লিংক-এর মাধ্যমে ই-দাখিল প্ল্যাটফর্মে নাম লেখাতে পারেন। এর পরে তারা অভিযোগ দাখিল করতে পারবেন।
এই পোর্টালের ফলে সকল অসন্তুষ্ট গ্রাহক আরামে ঘরে বসেই অনলাইনে কনজিউমার কমিশনে অভিযোগ দাখিল করার সুবিধা পান, উপযুক্ত ফি দিতে পারেন এবং অনলাইনে তাদের মামলার অগ্রগতির ওপর নজর রাখতে পারেন।
সাম্প্রতিক আপডেটের ফলে ই-দাখিল প্ল্যাটফর্মে ৫ হাজার ৫৯০টি মামলা গ্রহণ করা হয়েছে এবং ৮৮৯টি মামলার নিষ্পত্তি হয়েছে। এও দেখা গেছে যে ২০২০র সেপ্টেম্বর থেকে ২০২২এর আগস্ট পর্যন্ত ই-দাখিলের নিবন্ধীকৃত ব্যবহারকারীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৫ হাজার ৯৬৩ থেকে বেড়ে হয়েছে ৮৪ হাজার ৬৫৭।
ই-দাখিল ব্যবস্থায় একাধিক মামলা সফল হয়েছে যেগুলির সমাধান হয়েছে ফিরোজাবাদ, আলিগড়, মৈনপুরী , বৈশালী, পোর্টব্লেয়ার, দুমকা, পশ্চিম ত্রিপুরা, রঙ্গারেড্ডি এবং আন্দামান ও নিকোবরে।
এছাড়া এনসিএইচ (ন্যাশনাল কনজিউমার হেল্প লাইন)- 1915 পরিষেবা ২৪ ঘণ্টাই পাওয়া যায় ১২টি ভাষায়। যদি কোনো অভিযোগকারী তার অভিযোগের বিষয়ে সিদ্ধান্তে খুশি না হন তাহলে এনসিএইচ সেই অভিযোগকারীকে পাঠিয়েও দেয় ই-দাখিল অভিযোগ পোর্টালে। এইভাবে সরকার বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে উপভোক্তার অধিকারের জন্য সব রকম যথাযথ ব্যবস্থা নিচ্ছে।
আরও এগিয়ে সিসিপিএ নির্দিষ্ট কয়েক জনকে চিঠি পাঠিয়ে বিভ্রান্তিমূলক বিজ্ঞাপন থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দিয়েছে। বিভ্রান্তিমূলক বিজ্ঞাপনের জন্য কিছু নোটিশ তথ্য সহ পাঠানো হয়েছে বিজ্ঞাপন সংস্থাগুলিকে এবং সম্প্রচারকারী শিল্পকে। বিভিন্ন পরিবেশনকারী চ্যানেল যদি বিষয়টি গ্রাহ্য না করে অথবা পুনরায় লঙ্ঘন করে তাহলে সিসিপিএ উপভোক্তার অধিকার রক্ষায় উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবে।
বিজ্ঞাপন