সুচিন্তিত এবং সুপরিকল্পিত উন্নয়ন শিলচরকে ভবিষ্যতের আধুনিক এবং আত্মনির্ভর উন্নত শিলচরে রূপান্তরিত করবে
সৌমিত্র শংকর চৌধুরী
শিলচরকে জাতীয় মানের আধুনিক ও উন্নত শহর হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে শিলচরের যুবকদল ‘থাউজেন্ড সায়ন্তন’ অনেক দিন ধরে বিভিন্নভাবে সরকারের কাছে গুচ্ছ প্রস্তাব তুলে ধরছে। মাননীয় মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তর অনেক আগেই তাদের পাঠানো গুচ্ছ প্রস্তাবের প্রাপ্তি স্বীকার করে তৎকালীন কাছাড়ের অভিভাবক মন্ত্রীকে প্রস্তাবগুচ্ছ পাঠিয়ে দিয়েছিলেন, পরবর্তীতে অভিভাবক মন্ত্রী তৎকালীন কাছাড়ের জেলা উপায়ুক্তকে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেবার জন্য চিঠি দিয়েছিলেন, যার কপি থাউজেন্ড সায়ন্তনকে পাঠানো হয়েছিলো।
আজকের প্রজন্মের যুবারা আশাবাদী, আগামীতে সবার আন্তরিক অংশগ্রহণে ‘শহর শিলচর’ রূপান্তরিত হবে উন্নত ‘নগর শিলচরে’। সবার সুবিধার্থে গুচ্ছ প্রস্তাবগুলি অতি সংক্ষেপে তুলে ধরা হলো : শিলচরের বিভিন্ন ব্যক্তি বিশেষের সাথে আলোচনা ও নিজেদের দৃষ্টিভঙ্গি ও অভিজ্ঞতার উপর ভিত্তি করে থাউজেন্ড সায়ন্তন দল তৈরি করেছিলো তাদের ভিশনারি পরিকল্পনামালা ।
থাউজেন্ড সায়ন্তন দল মনে করে, শিলচরের এখন ট্রানজিশন পিরিয়ড।। অর্থাৎ সম্ভাবনাময় আধুনিক শিলচর উন্নয়নের দিকে ধাবিত হচ্ছে। এই সময়ে, সুচিন্তিত এবং সুপরিকল্পিত উন্নয়ন শিলচরকে ভবিষ্যতের আধুনিক এবং আত্মনির্ভর উন্নত শিলচরে রূপান্তরিত করবে। থাউজেন্ড সায়ন্তন মনে করে উন্নয়নের পরিকল্পনা এমনভাবে হওয়া উচিত যার ফলে অদূর ভবিষ্যতে এই উন্নয়নের সুফল যেন পাওয়া যায়।
অর্থাৎ সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট। পরিকাঠামগত উন্নয়ন থাউজেন্ড সায়ন্তনের লক্ষ্য। এর জন্য প্রথমে বিভিন্ন ক্ষেত্র ধরে ধরে একটি তালিকা প্রস্তুত করা যেতে পারে। প্রথমে দেখতে হবে, কোন কোন প্রস্তাব সরকার ইতিমধ্যে আলোচনায় নিয়ে এসেছেন বা প্রক্রিয়াধীন আছে ( under process ) ।
এবার দেখতে হবে, এই প্রজেক্টগুলোর বর্তমানে কি স্ট্যাটাস। যদি দেখা যায় ধীর গতিতে এগোচ্ছে তাহলে কিভাবে দ্রুত গতিতে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায় তার জন্য যথাযথ উদ্যোগ নিতে হবে। অর্থাৎ হাতে নেয়া সবগুলো প্রজেক্ট যেন নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে বাস্তবায়িত হয়। না হলে কাগজ-কলমের মধ্যেই তা সীমাবদ্ধ থাকবে। এবার, সেই তালিকায় যোগ করতে হবে, আরো কি কি নতুন প্রজেক্ট হলে অদূর ভবিষ্যৎ পর্যন্ত তা জনগণকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করবে, অর্থাৎ প্রতিটি ক্ষেত্রে যেন বরাকের জনগণ হয়ে উঠেন আত্মনির্ভর।
যাইহোক, ব্যাক টু দ্যা টপিক : শিলচরের বিস্তার, সৌন্দর্যায়ন ও যোগাযোগব্যবস্থা এই শিরোনামের অধীনে থাউজেন্ড সায়ন্তন দল বলেছিলো, শিলচরের প্রয়োজনীয় বিস্তার ঘটিয়ে কর্পোরেশনে উন্নীত করা ও কর্পোরেশন নির্বাচন অতিসত্বর শেষ করা। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে গঠিত কর্পোরেশন বোর্ড, একটি সিটিকে পরিচালনা করার ক্ষেত্রে অভিভাবকস্বরূপ কাজ করে। থাউজেন্ড সায়ন্তন দীর্ঘদিন ধরে বলে আসছে, শিলচর হোক আসামের দ্বিতীয় স্মার্ট সিটি। অর্থাৎ কেন্দ্রীয় সরকারের সম্ভাবনাময় স্মার্ট সিটির তালিকাতে অন্তর্ভুক্ত করা হোক শিলচরকে। অর্থাৎ, আমরুৎ সিটি থেকে স্মার্ট সিটি। দুটোই কেন্দ্রীয় প্রকল্প। স্মার্ট সিটিতে অন্তর্ভুক্ত আছে সব ধরনের সিটির কনসেপ্ট।
স্মার্ট সিটিতে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য সরকারের উদ্যোগে স্মার্ট সিটি প্রপোজাল বানানো হয় এবং সেই প্রপোজালটি কেন্দ্রীয় সরকারকে পাঠানো হয়। এই স্মার্ট-সিটি প্রপোজাল যখন বানানো হবে তখন স্মার্ট-সিটি মিশনের গাইড লাইন মেনেই বানানো হয়, এবং তা সম্পূর্ণ আধুনিক বৈজ্ঞানিক ভাবনায় গঠিত ।
এই প্রপোজাল বানানোর কাজে যখন হাত দেয়া হবে তখন আর বিক্ষিপ্তভাবে প্রস্তাব তৈরি করার প্রয়োজন আসছেনা, অর্থাৎ একসঙ্গেই সমগ্র বৃহত্তর শিলচরকে নিয়ে পরিকল্পনা তৈরি হয়ে যাবে এবং একবার কেন্দ্রীয় সরকার দ্বারা তা গৃহীত হয়ে গেলে পাঁচ বছরের মধ্যেই আসামের দ্বিতীয় জনবহুল, দ্বিতীয় বৃহৎ, দ্বিতীয় বিজনেস সেন্টার শিলচর, স্মার্ট সিটির দিকে অনেকটাই এগিয়ে যেতে পারবে। স্মার্ট অর্থ শুধু টাই প্যান্ট পরিহিত স্মার্ট নয় স্মার্ট সিটি অর্থাৎ সর্ব্বার্থে স্মার্ট, বাইরে ও ভেতরে স্মার্ট, এককথায় সর্ব্বার্থে আধুনিক ও বৈজ্ঞানিক। স্মার্ট সিটি কোন সেক্টর তিনটি স্তম্ভ হচ্ছে রেট্রোফিটিং রিডেভেলপমেন্ট এবং গ্রীনফিল্ড ডেভেলপমেন্ট।
থাউজেন্ড সায়ন্তনের উদ্যোগে শিলচরের বেশ কয়েকজন আধুনিকমনস্কা তরুণ ইঞ্জিনিয়ার যাদের মধ্যে ছিলেন আরকিটাক্ট, ছিলেন আরবান প্লানাররা যারা তৈরি করেছিলেন স্মার্ট সিটি মিশনের গাইড লাইন মোতাবেক শিলচরের জন্য কনসেপচুয়াল স্মার্ট সিটি প্রজেক্ট এবং যা পরবর্তীতে থাউজেন্ড সায়ন্তনের মাধ্যমে জমা পড়েছিল মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তর, সরকারের হাউসিং এবং আরবান দপ্তর তথা শিলচরের টাউন এন্ড কান্ট্রি প্লানিং ইত্যাদি দপ্তরে। পরবর্তীতে অভিভাবক মন্ত্রীর সামনে পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন দিয়েও দেখানো হয়েছিল।
এতে আধুনিক বর্জ্য নিষ্কাশন পদ্ধতি থেকে শুরু করে সবুজায়ন আধুনিক নগরায়ন আধুনিক ট্রাফিক ব্যবস্থা রুফটপ সোলার পাওয়ার প্লান্ট ইত্যাদি আর যা যা বিষয় থাকে সব বিষয় চলে এসেছিল আরবান প্লানার দেব তৈরি সেদিনের স্মার্ট সিটি conceptual project বইয়ে। সৌন্দর্যায়ন শিরোনামের অধীনে থাউজেন্ড সায়ন্তন বলছে, শিলচরের সবগুলো মুখ্য রাস্তা ও পাড়া অলি-গলির প্রতিটি রাস্তাকে আধুনিকমানের করে তোলা।
শিলচরের ব্লক বসানো রাস্তা গুলোর অবস্থা খুব খারাপের দিকে যাচ্ছে দিনের পর দিন তাই সবগুলো রাস্তাকে উন্নত পাকা রাস্তায় উন্নীত করা। যুবকরা অনুরোধ রেখেছিল, সরকারের সাথে আলোচনা করে শিলচরে ফ্লাইওভার, এলিভেটর যুক্ত সুন্দর ফুটব্রিজ, স্মর্টলুক ফুটপাত ইত্যাদি বানানোর কাজ অতিসত্বর হাতে নেওয়া উচিত। রাঙ্গিড়খারী থেকে মেডিকেল কলেজ পর্যন্ত চার লেনের রাস্তার কাজ অতিসত্বর সম্পূর্ণ করা। শিলচরে রিং-রোড বানানোর যে পরিকল্পনা ছিল তার কাজে হাত দেওয়া এবং বাস্তবায়ন করা।
নির্ধারিত সময়ের ভেতর মহাসড়কের কাজ অতি অবশ্যই সম্পন্ন করা। আন্তর্জাতিক এয়ারপোর্ট তৈরি করা। শিলচর থেকে বেরোবার এবং প্রবেশের বহুমুখী উন্নত ও আধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলা। সবগুলো অসম্পূর্ণ ব্রিজ সম্পূর্ণ করা। সরকারের কাছে তারা আর্জি রেখেছিলেন, পুরো শিলচর জুড়ে যেন হয় সবুজায়ন, রাস্তার দু-পাশে এবং ডিভাইডার জুড়ে যেন থাকে রকমারি গাছ ও ফুলের বাহার , পুরো সিটি জুড়ে রাস্তার পাশে থাকা দেয়ালে আঁকা হউক রঙিন চিত্র। অনুরোধ করেছিলেন, বরাক নদীর-তীর কে দেয়া হোক পর্যটন চেহারা।
শিলচরের দীর্ঘদিনের জমা জল নিষ্কাশন এর সমস্যা ও ড্রেনেজ সমস্যার স্থায়ী সমাধানের জন্য ভারতবর্ষের বিভিন্ন বড় কোম্পানির সাথে কথা বলে মোউ চুক্তির মাধ্যমে তাদেরকে বরাদ দেয়া যেতে পারে এবং তারা যেন অতি অবশ্যই উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার করে এই কাজ করেন। তারা, একসাথে সমস্ত ওভারহেড বৈদ্যুতিক লাইনও ভূগর্ভস্থ নিয়ে নেন, তাই প্রয়োজনে শিলচরেও এই ব্যবস্থা হাতে নেয়া যেতে পারে। প্রয়োজন মাফিক বিভিন্ন জায়গায় ওয়াটার এটিএম তৈরি করা এবং স্যানিটাইজেশনের উন্নতির জন্য বায়ো টয়লেট স্থাপন করার বিষয়েও বিবেচনা করার অনুরোধ করেছিলেন।
থাউজেন্ড সায়ন্তন আরো বলেছিলো, শিলচরের প্রতিটি মূল সড়ক এবং অলিগলি তে পর্যাপ্ত স্ট্রীট লাইটের ব্যবস্থা করে পুরো সিটিকে আলোকিত করে তোলা। সমস্ত জলাশয়কে পরিষ্কার করে তোলা এবং তাকে বিভিন্ন রূপ দেয়া। শিল্পায়ন শিরোনামের অধীনে বলেছিলো, সমগ্র শিলচর ও বরাক জুড়ে বিভিন্ন শিল্পাঞ্চল গড়ে তোলা । স্থানীয় রিসোর্স নির্ভর ছোট, বড় ও মাঝারি শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার জন্য যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ করা ও বাস্তবে রূপান্তর করার জন্য জেলা প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি ও সরকারের কাছে অনেক আগেই অনুরোধ করেছিলো আজকের তরুণরা।
থাউজেন্ড সায়ন্তন অনেক আগে মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তরে পাঠানো চিঠিতে এও অনুরোধ করেছিলো, সময়ে সময়ে ভারত তথা ভারতের বাইরের উদ্যোগপতি ও শিল্পপতিদের আমন্ত্রণ করে শিলচরে আনা এবং তাদেরকে কনভিন্স করা, যেন তারা এই শিলচর তথা বরাক জুড়ে নানা ধরনের শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। তাতে নব প্রজন্মের যেমন কাজের সুযোগ ঘটবে তেমনি রাজস্বও বৃদ্ধি ঘটবে আসামের উন্নয়নেও এর প্রভাব ফুটে উঠবে।
শিলচরের নব প্রজন্মের ছেলেমেয়েদেরকে আর কাজের জন্য শিলচর ছেড়ে বাইরে যেতে হবে না এবং শিলচরও বৃদ্ধাশ্রমে পরিণত হবে না। থাউজেন্ড সায়ন্তন প্রস্তাব রেখেছিলো, শিলচরে পর্যায়ক্রমে শিল্পপতি বৈঠকেরও আয়োজন করা যেতে পারে। থাউজেন্ড সায়ন্তন দল চায়, বরাক জুড়ে হোক শিল্পায়ন ও আই-টি হাব। বিভিন্ন ধরনের ম্যানুফ্যাকচারিং ইউনিট আসুক এখানে। শিলচরে ব্যাক-আপ হিসেবে রয়েছে নীট, পলিটেকনিক, আইটিআই এবং আসাম ইউনিভার্সিটি ইত্যাদি।
শিলচর-বরাকে শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়লে, এখানে বসেই বাণিজ্য করতে পারবেন পার্শ্ববর্তী দেশে এবং সমগ্র উত্তর-পূর্বাঞ্চল জুড়ে, শিলচর বরাকের ভৌগোলিক অবস্থান এই সুযোগ করে দেবে শিল্পপতিদেরকে। শিলচরে যেকোনো ধরনের জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য বৃহত্তর শিলচরে জাতীয় মানের উন্নত হোটেল তৈরি করাটাও প্রয়োজনীয় হতে পারে এবং এই ক্ষেত্রে দরকারে সরকারকে উদ্যোগ নিতে হতে পারে ফাইভ-স্টার হোটেল গড়ে তোলার ক্ষেত্রে। শিলচরের ছেলে মেয়েরা যেন ‘আইপিএস’, ‘আইএস’ ইত্যাদি বিভিন্ন জাতীয় স্তরের প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা অনায়াসে ক্র্যাক করতে পারে তার জন্য স্থানীয় স্তরে যেন উদ্যোগ নেয়া হয়।
আসাম ইউনিভারসিটি জিসি কলেজে এবং খানিকটা ব্যক্তিগত স্তরেও কিছুটা হলেও শুরু হয়েছে যা অনেক খুশির খবর। থাউজেন্ড সায়ন্তন মাননীয় মুখ্যমন্ত্রীকে ও রাজ্যিক ইয়ুথ কমিশনকে অনুরোধ করেছেন, ডিব্রুগড় এর মত শিলচরেও খোলা হোক সরকারি নীট, জে-ই-ই কোচিং সেন্টার, এই জুলাই আগস্ট সেপ্টেম্বরের মধ্যে। ডিব্রুগড়ে এই ধরনের সরকারি কোচিং সেন্টার উদ্বোধন করার দিন, মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণাও করেছিলেন শিলচরেও খোলা হবে এ ধরনের কোচিং সেন্টার। সরকারের প্রস্তাবিত মাল্টি মডেল লজিস্টিক পার্কের জায়গা নির্ধারণ প্রক্রিয়া অতিসত্বর সম্পূর্ণ করে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করার উদ্যোগ নেয়ার বিষয়েও থাউজেন্ড সায়ন্তন অনেক আগের তাদের চিঠিতে দাবি রেখেছিলেন।
এবার স্বাস্থ্য বিষয়ক এজেন্ডায় ফিরে চলে আসা যাক, শিলচর মেডিকেল কলেজে যেন অতিসত্বর আধুনিক মানের নিউরো ওটি তৈরি করা হয়। শিলচর মেডিকেল কলেজে ডি.এম ও এম.সি.এইচ কোর্স পড়ানো শুরু করা এবং সর্বোপরি শিলচর মেডিকেল কলেজকে মাল্টিসুপার স্পেশালিটি হসপিটালে উন্নীত করবার প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করার জন্যও দাবি রেখে আসছি প্রথম দিন থেকেই, কারণ তার সাথে জড়িয়ে আছে মানুষের জীবন মরণ ও সুস্থভাবে বেঁচে থাকার বিষয়। মাল্টি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল তৈরীর বিষয় খানিকটা
এগিয়েছে আমরা জানি, সরকারের কাছে অনুরোধ, বিষয়টি যেন দ্রুততার সাথে এগিয়ে যায় এবং যতদিন পর্যন্ত না মাল্টি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল তৈরি হয় ততদিন অব্দি ভিজিটিং সুপার স্পেশালিটি ডক্টর দ্বারা মাল্টি সুপার স্পেশালিটি ওপিডি চালুরও প্রস্তাব রাখেন তারা । অন্যান্য বিভিন্ন সংগঠনের মত থাউজেন্ড সায়ন্তনও বলছে, শিলচর সিভিল হাসপাতালকে প্রস্তাবিত আধুনিক মানের ৩০০ শয্যার হস্পিটালে উন্নীত করার কাজ অবিলম্বে শুরু করানো উচিত।
শিলচর ক্যান্সার হাসপাতালের অতিসত্বর শুভ উদ্বোধন চায় থাউজেন্ড সায়ন্তন এবং এতে যেন প্যাট-সিটি স্ক্যান অন্তর্ভুক্ত হয়। কাছাড় তথা সমগ্র গ্রাম বরাকের সবগুলো প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও নগর স্বাস্থ্যকেন্দ্র কে প্রয়োজনীয় উন্নতি করা। প্রসঙ্গত, বরাকে আসামের দ্বিতীয় ‘এইমস’ স্থাপনের জন্যও মাননীয় সংসদ কে অনুরোধ করেছিলেন তারা ।
বিভিন্ন বড় বড় প্রাইভেট হাসপাতাল থেকে ডিগ্রি নেওয়া ‘ডিএমই’ ডাক্তার এবং অন্যান্যদের আসামের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে নিয়োগ দেয়ার ক্ষেত্রে সরকারের বিবেচনা কামনা করছে থাউজেন্ড সায়ন্তন, এতে করে স্বাস্থ্য সেবার সাথে জড়িত ডাক্তার এবং অন্যান্যদের যে ক্রাইসিস আছে তা অনেকটাই কমে আসবে। বিভিন্ন বড় বড় প্রাইভেট হাসপাতাল থেকে ডিগ্রী নেওয়া ‘ডিএমই’ ডাক্তাররা অনেক বড় বড় প্রাইভেট হাসপাতালে চিকিৎসা করছেন ।
সরকারি ও বেসরকারি স্বাস্থ্য পরিকাঠাময় আধুনিকতা ও উন্নত এবং এফোর্টেবল চিকিৎসা ব্যবস্থা গড়ে উঠলে শিলচরে জন্ম নেবে মেডিকেল ট্যুরিজম, থাউজেন্ড সায়ন্তনের বিশ্বাস। দক্ষিণ ভারতে মেডিকেল ট্যুরিজম শব্দটি আজ সবার কাছেই পরিচিত। সমগ্র দক্ষিণ আসাম ও পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন রাজ্য এবং পার্শ্ববর্তী দেশের মানুষরা যখন উন্নত চিকিৎসার জন্য শিলচরে আসবেন তখন পাশাপাশি ভাবে পর্যটন শিল্পেরও প্রভূত উন্নতি ঘটবে, বাড়বে স্থানীয় অর্থনীতি।
সংস্কৃতি ও ক্রীড়া শিরোনামের অধীনে থাউজেন্ড সায়ন্তন আগের গুচ্ছ প্রস্তাবে লিখেছিলেন, ক্রীড়া ও সংস্কৃতি জগতের মানুষের সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো তৈরি করতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়া দরকার। থাউজেন্ড সায়ন্তন চায়, সরকারি উদ্যোগে গঠিত হোক মাল্টি স্পোর্টস কমপ্লেক্স।
প্রস্তাবিত স্বামী বিবেকানন্দ কালচারাল কমপ্লেক্স ও রিসার্চ সেন্টারের কাজ শুরু করানো উচিত, প্রস্তাবিত মিউজিয়াম এর কাজ সম্পূর্ণ করা, সরকারের হাতে নেয়া জেলা গ্রন্থাগার ভবনের কাজ শেষ করা, প্রস্তাবিত প্লানেটোরিয়াম এর জায়গা নির্ধারণ ও কাজ শুরু করা ইত্যাদি বিষয় সরকারকে বিভিন্ন চিঠির মাধ্যমে সবিনয়ে মনে করিয়ে দিচ্ছেন এই প্রজন্মের তরুণরা।
শিলচরে এনএসডি, সংগীত নাটক একাডেমি, আইসিসিআর প্রভৃতির অফিস ছোট আকারে হলেও খোলা উচিত, ঠিক যেমনটা পাসপোর্ট সেবা কেন্দ্রের মাইক্রো অফিস শিলচরে বিরাজমান।
এই ধরনের মিনি সেন্টার শুরু হলে শিলচর বরাকের শিল্পীরা শিল্পচর্চার মাধ্যমে ধীরে ধীরে নিজেদেরকে অর্থনৈতিকভাবে আত্মনির্ভর করে তুলতে পারবেন । শিলচরে ডিজিটাল ইন্ডাস্ট্রি গড়ে ওঠা খুব দরকার। বরাকের অনেক তরুণরা নিজেদের উদ্যোগে অনেক ভালো ডিজিটাল কাজ করছেন। থাউজেন্ড সায়ন্তন চায়, সত্যজিৎ রায় ফিল্ম এন্ড টেলিভিশন ইনস্টিটিউট বা ভূপেন হাজারিকা
রাজ্যিক ফিল্ম এন্ড টেলিভিশন ইনস্টিটিউট এর শাখা শিলচরে খোলা। শিলচর থেকে যাত্রা শুরু হোক স্যাটেলাইট চ্যানেলের। পর্যটন শিল্প এই শিরোনামের অধীনে থাউজেন্ড সায়ন্তন লিখেছিলেন, সরকারের সিদ্ধান্ত নেওয়া চিড়িয়াখানার কাজ যথাসম্ভব দ্রুততার সাথে সম্পন্ন করা, খাসপুরে প্রস্তাবিত টুরিস্ট কম্প্লেক্স বানানোর কাজ শুরু করা, প্রস্তাবিত ভুবন তীর্থ উন্নয়নের কাজ আরম্ভ করা এবং এছাড়াও সরকারের হাতে থাকা অন্যান্য প্রকল্প তথা আরো কি কি নতুন উদ্যোগ গ্রহণ করা যায় তা গ্রহণ করে বাস্তবায়নের পথে দ্রুততার সাথে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য বিনীত অনুরোধ করেছিলেন তরুণরা।
কারণ আগামী কয়েক বছরের মধ্যেই অসমের দ্বিতীয় জনবহুল ও গুরুত্বপূর্ণ বৃহত্তর শিলচর তথা কাছাড় ও সমগ্র বরাক উপত্যকাকে উন্নতির চরম শিখরে দেখতে চায় অরুণ প্রাতের তরুণ দল।