‘বর্ণবিদ্বেষী’

2 - মিনিট |

ট্রাম্পের ‘বর্ণবিদ্বেষী’ মন্তব্যের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাও

শ্রীজীব

ফের স্বমূর্তিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাঁর বর্ণবিদ্বেষী মন্তব্যকে ঘিরে তৈরি হয়েছে নয়া বিতর্ক। এবার তাঁর লক্ষ্য মার্কিন কংগ্রেসের আফ্রো-মার্কিন সদস্য অ্যালাইজা কামিংস। ট্রাম্প বলেছেন, ওই সদস্য যে জেলা থেকে এসেছেন, সেই বল্টিমোর ‘বিরক্তিকর, ইঁদুরভরা আবর্জনার স্তূপ ’ ছাড়া আর কিছুই নয়। কী ছিল কামিংসের অপরাধ? তাঁর অপরাধ ছিল, তিনিও মেক্সিকো সীমান্তের পরিস্থিতি নিয়ে হাউস অব রিপ্রেজেন্টিটিভসে সরব হয়েছিলেন। ট্রাম্পের বক্তব্য অনুযায়ী, মার্কিন সীমান্তের তুলনায় ‘আরও খারাপ অবস্থা’ বাল্টিমোরের এবং কৃষ্ণাঙ্গ-প্রধান এই জেলা খুবই  ‘বিপজ্জনক’। ট্রাম্পের বক্তব্যকে ঘিরে কামিংস-সহ বল্টিমোরের সব বাসিন্দাই যখন ক্ষুব্ধ তখন এই নয়া বিতর্কের পিছনে অন্য কোনও কূট-রাজনীতি কাজ করছে না তো? তবে কামিংসকে সমর্থন করে বল্টিমোরের মেয়র জ্যাক ইয়ং বলেছেন, আমাদের দেশের রাজনৈতিক নেতা এভাবে একটা প্রাণবন্ত শহরকে কলঙ্কিত করতে পারেন না।

এদিকে ট্রাম্পের ‘বর্ণবিদ্বেষী’ মন্তব্যের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাও। ট্রাম্প কংগ্রেসের চার ‘অ-শ্বেতাঙ্গ’ মহিলাকেও বর্ণবিদ্বেষী আক্রমণ করা হয়েছে। আর তাতেই সরব হয়েছেন একশো আটচল্লিশ জন আফ্রো-মার্কিন নাগরিক। অবশ্য এঁদের প্রত্যেকেই ছিলেন ওবামার প্রশাসনে। তাঁদের বক্তব্য,  ‘বর্ণবিদ্বেষী, লিঙ্গবৈষম্য, সমকাম-ভীতি এবং বিদেশি-ভীতির’র মতো বিষয়েই বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্টের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে।শুধু তিনি নন, প্রশাসনে থাকা বহু অফিসার আমাদের গণতন্ত্রকে বিষাক্ত করে তুলতে পূর্ণ মদত জোগাচ্ছেন। তাঁরা আরও বলেছেন, সহ-নাগরিককে দেশ থেকে চলে যেতে বলার মতো খারাপ আর কিছু হয় না। এটা মার্কিন-সংস্কৃতির পরিপন্থী।

বিরোধী শিবির যখন ট্রাম্পের বক্তব্য ঘিরে বর্ণবিদ্বেষী গন্ধ শুঁকছেন তখন তিনি তা অস্বীকার করেছেন অনায়াসে। আসলে ট্রাম্পের নিশানা ছিল আলেকজান্দ্রিয়া ওকসিয়ো কোর্তেজ, ইলান ওমর, রশিদা তালিব এবং আইয়ানা প্রেসলি-র বিরুদ্ধে। এই ‘কোণঠাসা’ রাজনীতির বিরুদ্ধে অবশেষে মুখ খুললেন প্রাক্তন ফার্স্ট লেডি মিশেল ওবামাও। তিনি বললেন, আমাদের দেশ মহান, তার বৈচিত্রের জন্য। বছরের পর বছর ধরে দেশের মাটিতে সেই সৌন্দর্য আমি দেখেছি। বছরের পর বছর ধরে দেশের মাটিতে সেই সৌন্দর্য আমি দেখেছি।আমরা এখানে জন্মাই বা আশ্রয় চাই, সবার জন্য এখানে জায়গা রয়েছে। মনে রাখা উচিত, এটা আমার আমেরিকা বা তোমার আমেরিকা নয়। আমাদের সবার আমেরিকা।

সামনে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। আর সেই নির্বাচনে বর্ণবিদ্বেষী রাজনীতিকে পাখির চোখ করে ডেমোক্র্যাটরা যখন ট্রাম্পকে গদিচ্যুত করতে উঠেপড়ে লেগেছেন তখন চুপ করে বসে থাকেননি ট্রাম্পও। তিনিও অনায়াস ভঙ্গিতে তাঁর বক্তব্যকে খণ্ডন করে আরও তীব্র ভাষায় আক্রমণ শানাচ্ছেন। তাঁর  ‘বর্ণবিদ্বেষী’ মন্তব্য আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে নতুন হাতিয়ার নয়তো? এমন একটা প্রশ্ন ঘোরাফেরা করছে মার্কিন রাজনীতির অন্দরমহলে।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related news