ত্রিপুরার সামাজিক প্রেক্ষাপটকে নিয়ে রাজ্যে প্রথমবারের মতো নির্মিত হচ্ছে হিন্দি ভাষায় মেগা ধারাবাহিক
ত্রিপুরার সামাজিক প্রেক্ষাপটকে নিয়ে রাজ্যে প্রথমবারের মতো নির্মিত হচ্ছে হিন্দি ভাষায় মেগা ধারাবাহিক। মেগা ধারাবাহিকটির নির্দেশনার দায়িত্বে আরও এক খ্যাতনামা পরিচালক ও চিত্রনাট্য লেখক রবিকান্ত। তিনি এই সিরিয়ালটি পরিচালনা করলেও এর চিত্রনাট্য লিখেছেন ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয়ের হিন্দি বিভাগের দুই সহকারী অধ্যাপকমিলনরানি জমাতিয়া এবং ড. জয় কৌশল। এর নাম ‘চামরুই ওমপা – এক প্রেম কথা’।
নির্মীয়মাণ ধারাবাহিকের গল্পের বিষয়ে পরিচালক জানান, ত্রিপুরা রাজ্যের পাহাড়ি এলাকার এক অতি সাধারণ জনজাতি পরিবারের মেয়ে নানা প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে স্কুল-কলেজের গণ্ডী পেরিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে আসে আগরতলায়। ধীরে ধীরে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে বন্ধুত্ব তৈরি হয় তার। এর মধ্যে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে কয়েক পুরুষ ধরে ব্যবসার জন্য আগরতলায় বসবাসরত মাড়োয়ারি এক ছেলের সঙ্গে। ধীরে ধীরে বন্ধুত্ব গভীর হতে থাকে, এক সময় বন্ধুত্ব গড়ায় প্রেমে। কিন্তু গোড়া মাড়োয়ারি পরিবার এই ভালোবাসা মানতে নারাজ।
এদিকে শহুরে ধনী ব্যবসায়ীর ছেলে যেমন সহজ-সরল মেয়েটিকে ছাড়া থাকতে পারবে না, তেমনি মেয়েটিও তার প্রমিককে হারাতে চায় না। তাই তারা কাউকে না জানিয়ে নিজেরা গোপনে বিয়ে করে বসে। আবার এই প্রেমের কথা জানতে পেরে ব্যবসায়ী পরিবারটি নিজেদের গোষ্ঠীর এক মেয়ের সঙ্গে জোর করে বিয়ে দিয়ে দেয়। এর পরই শুরু হয় লড়াই। পরের ঘটনা আর বিস্তৃত করেননি পরিচালক, বলেন তা জানার জন্য চোখ রাখতে হবে ডিডি অরুণপ্রভা টেলিভিশন চ্যানেলে।
এক জনজাতি মেয়ে এবং রাজস্থানী মাড়োয়ারি ছেলের প্রেমকে কেন্দ্র করে হিন্দি টেলিভিশন ধারাবাহিকের শ্যুটিং চলছে ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয় এবং রাজ্যের বিভিন্ন পাহাড়ি জনপদে। তবে এই ধারাবাহিকের ত্রিপুরা রাজ্যের জনজাতিদের জীবনশৈলী, নিত্যদিনের ব্যবহার্য সামগ্রী, পোশাক-পরিচ্ছদ, সবকিছু খুব সুন্দরভাবে ভারতবাসীর সামনে উঠে আসবে। যেহেতু এই ধারাবাহিকের ভাষা হিন্দি, তাই মূল ভূখণ্ডের মানুষের কাছে তা বুঝতে সুবিধা হবে এবং আরও ভালোভাবে ত্রিপুরাকে ভারতের হিন্দি বলয়ের জনসাধারাণ জানতে পারবেন বলেও আশাবাদী পরিচালক রবিকান্ত।
তিনি জানান, ধারাবাহিকটি মোট ১৩টি পর্বে সম্পন্ন হবে। ১১৩টি চিত্রনাট্যের মধ্য থেকে এই কাহিনিকে নির্বাচন করেছে দিল্লি দূরদর্শন কর্তৃপক্ষ (ডিডি) বলেও জানান। এই ধারাবাহিকে একদিকে যেমন মুম্বাইয়ের অভিনেতা-অভিনেত্রীরা রয়েছেন তেমনি রয়েছেন ত্রিপুরা রাজ্যের বহু শিল্পী। ত্রিপুরার গ্রামীণ জীবনের খণ্ডচিত্র দেশব্যাপী তুলে ধরার এক প্রয়াস বলেও জানান পরিচালক। এখানের প্রকৃতি, সবুজ পরিবেশ তাঁকে আকৃষ্ট করেছে। তাই আগামী দিনেও তিনি ত্রিপুরায় কাজ করতে চান। সেই সঙ্গে তিনি ত্রিপুরাবাসীর প্রতি আহ্বান রাখেন, এই ধারাবাহিক দেখার জন্য।
ত্রিপুরার জনজাতি যুবতীর ভূমিকায় অভিনয় করছেন হাওবাম হেমলতা দেবী। এই ধারাবাহিকে কাজ করতে অন্যান্য রাজ্য থেকে আগত শিল্পীরাও জানান ত্রিপুরা এসে কাজ করে তাঁদের খুব ভালো লাগছে। বিশেষ করে সবুজে ভরা ত্রিপুরায়। এখন দেখার বিষয় দর্শক কেমনভাবে গ্রহণ করেন ত্রিপুরার পটভূমিকে ভিত্তি করে তৈরি এই ধারাবাহিকটি। এর জন্য অবশ্য দর্শকদের কিছু দিন অপেক্ষা করতে হবে।