বাঙালির খাদ্যরসনা সে চিরকালের। কেউবা খেতে ভালোবাসেন, কেউবা খাওয়াতে, কেউবা গল্প শোনাতে।বাঙালির পাতে থাকে নানা ব্যঞ্জন। নানা মিষ্টিমুখ। তেমনই সব নানা স্বাদের খাবারের খোঁজ থাকল রান্নাঘরে…
স্বা দে ঝা লে
বাঁধাকপির মানিব্যাগ
কী কী লাগবে
নারকোল কোরা, পনির গ্রেট করা ১০০ গ্রাম, আলু গ্রেট করা একটা, ক্যাপসিকাম কুচি, টমেটো কুচি লঙ্কা কুচি এবং আদা কুচি, ফোড়নের জন্যে ছোট এলাচ, দারচিনি, ধোনে গুঁড়ো, জিরে গুঁড়ো, হিং, অল্প চিনি, স্বাদমতো লবণ এবং সাদা তেল।
কেমন করে বানাবেন
কড়াইতে সাদা তেলে অল্প গরম মশলা ফোড়ন দিয়ে একটু হিং দিয়ে নেড়ে টমেটো কুচি, ক্যাপসিকাম কুচি ও একটু লবণ দিয়ে ভেজে নিন।ভাজা হয়ে গেলে নারকেল কোরা, গ্রেট করা পনির, গ্রেট করা আলু, লঙ্কা কুচি, অল্প চিনি ও সামান্য জিরে ও ধোনে গুঁড়ো দিয়ে ভালো করে পুরটা ভাজা ভাজা করে নিন।এরপর বাঁধাকপির কয়েকটা পাতা একসঙ্গে নিয়ে চৌকো করে কেটে নিন। পাতাগুলো সেদ্ধ হয়ে গেলে জল ঝরিয়ে নিন। এরপর পাতাগুলোর ভেতর পুর ভরে মানিব্যাগের আকারে কেটে নিতে হবে। সেগুলো সুতো দিয়ে বেঁধে নিন।তারপর পুরভর্তি পাতাগুলো সাদা তেলে হালকা করে চাপা দিয়ে ভাজার পর সুতোগুলো কেটে দিতে হবে।
ডিমের কলাকাঁদ
কী কী লাগবে এবং কেমনভাবে বানাবেন
১ লিটার দুধে অল্প পরিমাণে জাফরান দিয়ে ফুটিয়ে অর্ধেক করে নিন। তারপর ১ কাপ গুঁড়ো দুধ মিশিয়ে নিতে হবে। অন্য একটি পাত্রে তিনটে বড় বা চারটে মাঝারি সাইজের ডিম ফেটিয়ে নিন। এবার আস্তে আস্তে ডিম দুধের মধ্যে ঢালতে হবে। অনবরত নাড়ুন। নাহলে ডিম ভুর্জি হয়ে যাবে। জল শুকিয়ে গেলে পরিমাণমতো চিনি ও ফ্লেভার(এলাচ গুঁড়ো/মৌরি গুঁড়ো/ভ্যানিলা/রোজ) দিতে হবে। টিফিন কৌটোয় তেল মাখিয়ে ভালো করে চেপে কলাকাঁদ বসিয়ে ঠান্ডা করে নিন। ঠান্ডা হলে চৌকো করে কেটে পরিবেশন করুন।
মি ষ্টি মু খ
কেশর ও পেস্তা রসগোল্লা
কী কী লাগবে
ফুল ক্রিম দুধ দেড় লিটার, সাদা ভিনিগার ৪ টেবিল চামচ, চিনি ২ কাপ, জল ৪ কাপ, সুজি ১ টেবিল চামচ,কেশর ১ চা চামচ, পেস্তা ৫০ গ্রাম, কেশরও পেস্তা হাফ চা চামচ।
কীভাবে বানাবেন
কেশর ২ টেবিল চামচ দুধে ভিজিয়ে রাখুন।তারপর পেস্তা একটু গরম জলে কিছুক্ষণ ভেজানোর পর ৪ টেবিল চামচ দুধ দিয়ে বেটে নিতে হবে। বাকি দুধ ভালো করে জ্বাল দিয়ে তারপর আঁচ কমিয়ে ২ টেবিল চামচ সাদা ভিনিগার মেশান। তারপর আঁচ বন্ধ করে দিন। বাকি ২ টেবিল চামচ সাদা ভিনিগার দিয়ে খুব ভালো করে মিশিয়ে ছানা করে নিন। ছানা জল থেকে আলাদা করে ধুয়ে নিন।তারপর খুব ভালো করে জল ঝরিয়ে নিতে হবে। চিনি ও জল একসাথে মিশিয়ে ফুটিয়ে সিরা বানিয়ে নিন।তারপর সেটা দু’ভাগ করে রাখুন।
জল ঝরানো ছানা মিক্সিতে একবার বেটে নিয়ে তারপর হাত দিয়ে খুব ভালো করে মাখতে হবে।তারপর হাফ ছানা আলাদা করে নিয়ে তাতে দুধে ভেজানো কেশর ও বাকি হাফ ছানাতে পেস্তা বাটা দিয়ে মাখতে হবে। দুটোতেই হাফ টেবিল চামচ করে সুজি মিশিয়ে আরও কিছুক্ষণ মেখে নিয়ে তারপর রসগোল্লার আকারে গড়ে নিতে হবে। এক ভাগ সিরাতে কেশর দিয়ে মাখা ছানার গোল্লা ও আরেক ভাগ সিরাতে পেস্তা দিয়ে মাখা ছানার গোল্লা দিয়ে বেশি আঁচে ১০ মিনিট রাখুন। তারপর কম আঁচে ঢাকা দিয়ে ১৫ মিনিট রাখার পর নামিয়ে নিতে হবে। কেশর রসগোল্লার সিরাতে কেশর এসেন্স ও পেস্তা রসগোল্লার সিরাতে পেস্তা এসেন্স মিশিয়ে ঢাকা দিন।তারপর ১ ঘণ্টা ফ্রিজে রেখে ঠান্ডা করে নিন। এরপর ইচ্ছেমতো সাজিয়ে পরিবেশন করুন।
লাউয়ের পায়েস
কী কী লাগবে
গ্রেটেড লাউ এক বাটি, ১/৩কাপ সাবুদানা,৫০০মিলি ফুল ফ্যাট দুধ,৪টেবিল চামচ চিনি,কিছু কাজু ও কিশমিশ,২টেবিল চামচ ঘি এবং কিছুটা ছোট এলাচগুঁড়ো।
কীভাবে বানাবেন
প্রথমে সাবু দানা ভিজিয়ে রাখুনদু’ঘণ্টা। এরপর কড়াইয়ে ১টেবিল চামচ ঘি দিয়ে কাজু ও কিশমিশ ভেজে তুলে রাখুন। তারপর কড়াইয়ে ১টেবিল চামচ ঘি দিয়ে গ্রেটেড লাউ ভালো করে ভেজে নিন। এবং আগে থেকে ফুটিয়ে নেওয়া দুধ মিশিয়ে দিন। দুধ মেশানো হয়ে গেলে জল ঝরিয়ে সাবুদানা মিশানোর পর চিনি ভাজা কাজু ও কিশমিশ দিয়ে ভালো করে নাড়তে থাকুন। ঘন হয়ে গেলে ওপর থেকে ছোট এলাচগুঁড়ো মিশিয়ে ঠান্ডা করে পরিবেশন করুন।
নিমবেগুন থেকে কোপ্তা-কালিয়া হাতের নাগালে বাসন্তীর হেঁসেল…
অ ন্য স্বা দে
শশা দুধের শুক্তো
কি কি লাগবে শশা ১টা ( নিজের প্রয়োজন অনুসারে শশার সংখ্যা বাড়াতে পারেন ), অল্প আদা বাটা, লিকুইড দুধ ২৫০/৩০০ গ্রামের মত। অল্প সাদা বা কালো গোটা সরষে (ফোড়নের জন্য)
কেমন করে বানাবেন
প্রথমে শশাকে ধুয়ে খোসা ছাড়িয়ে নিন। তারপর লম্বা করে অর্ধেক করে কেটে নিতে হবে। খুব স্বল্প তেলে সরষে ফোড়ন দিয়ে তাতে কাটা শশা, পরিমান মত নুন হলুদ দিয়ে অল্প নাড়াচাড়া করে দুধটা ঢেলে দিন। ঢেকে দিয়ে অল্প আঁচে সিদ্ধ হতে দিতে হবে। যখন সিদ্ধ হয়ে মাখা মাখা হয়ে যাবে তাতে আদা বাটা দিয়ে নামিয়ে নিন।
শিম দুধ
কি কি লাগবে
বেশ বড় বড় চ্যাপ্টা শিম, ধনে পাতা , কাঁচা লঙ্কা অল্প, গুঁড়ো দুধ, সরষের তেল, স্বাদ মতো নুন -হলুদ।
কেমন করে বানাবেন
প্রথমে শিম গুলোকে ধুয়ে নিয়ে অর্ধেক সেদ্ধ করে নামিয়ে জলটা ঝেড়ে নিন। তারপর একটা একটা করে শিম নিয়ে আলতো হাতে আস্তে আস্তে শিমের দুই দিকের শিরে গুলিকে টেনে সরিয়ে ফেলুন। এবার অন্য একটি পাত্র নিয়ে তাতে গুঁড়ো দুধ অল্প পরিমান জল দিয়ে ঘন করে গুলে ফেলুন। তাতে ধনে পাতা, কাঁচালঙ্কা কুচি, আন্দাজ মতো নুন, হলুদ ও অল্প সরষের তেল দিয়ে মেখে রাখুন।
এরপর একটি কড়াইতে অল্প তেল নিয়ে সারা কড়াইতে তেলটা লাগিয়ে নিন। তারপর একটা করে শিম, দুধ-ধনে পাতার মিশ্রণে ডুবিয়ে কড়াইতে সাজিয়ে দিতে হবে। এক মিনিট ভাজা হওয়ার পর অন্য দিকটা একই ভাবে ভেজে তুলে গরম গরম পরিবেশন করুন। শিমের অন্যান্য গতানুতিক রেসিপি গুলির থেকে একটু আলাদা এই দুধ শিমের রেসিপি স্বাদে এক অন্য মাত্রা এনে দেবে। তাহলে আর দেরী কেন চট জলদি বানিয়ে নিন এই সুস্বাদু রেসিপি তাও আবার অল্প খরচেই।
মুগের বরফি
কি কি লাগবে
২ কাপ কাঁচা মুগডাল, ১ কাপ আটা, চিনি ৫০০ গ্রাম, সাদা তেল ৫০০ গ্রাম
কেমন করে বানাবেন
মুগডালকে প্রথমে লাল লাল করে ভেজে একবার ধুয়ে সিদ্ধ করতে বসাতে হবে। সিদ্ধটা এমন ভাবে করতে হবে যাতে মুগটা ৩/৪ ভাগ সিদ্ধ হওয়ার সময় জলটা মাখা মাখা থাকে। তখন আটা ঢেলে খুন্তি দিয়ে নেড়ে আটার রুটির বা লুচির মতো করে মিশ্রণ বানিয়ে নিন। তারপর চাকিতে একটু তেল মাখিয়ে ১/২ ইঞ্চি পুরু করে বেলে চাকু দিয়ে বরফির আঁকারে কেটে নিন। তারপর কড়াইতে সাদা তেল গরম করে আগে মিশ্রণ থেকে কেটে রাখা বরফি গুলোকে ভেজে নিন। এরপর চিনির রসে ডুবিয়ে কিছুক্ষন রেখে তুলে নিন।প্রস্তুত ক্ষীর, ছানা, নারিকেল ছাড়াই এক অপূর্ব স্বাদের মুখরোচক পিঠা।
[ চিনির রস বানানোর পদ্ধতি
চিনি ও জল একসঙ্গে উনুনে বসিয়ে দিয়ে জাল দিতে দিতে যখন দেখবেন রসটাতে ছোট ছোট বুদবুদ তৈরি হচ্ছে তখনই বুঝবেন পিঠের রস তৈরি। ]
জ ল খা বা র
সাধারণ মালপো ১
কী কী লাগবে: ২ কাপ ময়দা, ১/২ কাপ সুজি, চিনি দেড় কাপ, ১০ থেকে ১২টা সাদা মৌরি, খুব অল্প পরিমাণ বেকিং পাউডার।
কেমন করে বানাবেন: সব উপকরণ একসঙ্গে মিশিয়ে অল্প অল্প জল দিয়ে ঘন মিশ্রণ তৈরি করে কিছুক্ষণ রেখে দিতে হবে। তারপরে কড়াইতে সাদা তেল বেশি করে দিতে হবে যাতে গোলটি ডুবিয়ে ভাজা যায়। মালপোর আকার নিজের নিজের পছন্দমতো করে ভেজে নিন।
সাধারণ মালপো ২
কী কী লাগবে: ২ কাপ ময়দা ১ কাপ চিনি, নারকেল কোরা ১ কাপ, ভাজা চিনেবাদাম গুঁড়ো ১/২ কাপ, ৪/৫টা এলাচগুঁড়ো, বেকিং পাউডার ১/২ চামচ।
কেমন করে বানাবেন: সব উপকরণ একসঙ্গে মিশিয়ে জল দিয়ে ঘন করে একটা মিশ্রণ তৈরি করে নিন। এরপর নিজের পছন্দমতো আকার করে সাদা তেলে ডুবিয়ে বাদামি করে ভেজে নিন।
ক্ষীরের মালপো
কী কী লাগবে: ২ কাপ শুকনো নরম নরম ক্ষীর, ৪/৫ চা চামচ বেকিং পাউডার, চিনি এক কাপ, ৫/৬টা এলাচগুঁড়ো।
কেমন করে বানাবেন: সব উপকরণ একসঙ্গে মিশিয়ে পরিমানমতো জল দিয়ে ঘন ঘন করে মেখে একটি মিশ্রণ তৈরি করে নিতে হবে। এরপর কড়াইতে সাদা তেল গরম করে তার মধ্যে মিশ্রণটা পরিমাণে দিয়ে গোলাকার আকৃতিতে বাদামি রঙের করে ভেজে নিতে হবে।
নোনতা মালপো
কী কী লাগবে: মাঝারি সাইজের সাবুদানা ২ কাপ, বড় সাইজের একটা আলু, অল্প নুন, অল্প হলুদ গুঁড়ো, কিছুটা ধনে পাতা, ২/৩টা কাঁচালঙ্কা, ছোট একটুকরো আদা।
কেমন করে বানাবেন: সাবুদানা কয়েক ঘণ্টা জলে ভিজিয়ে রাখতে হবে, যাতে নরম হয়। যাতে একেবারে নরম না হয়ে যায় সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে। আলুটা ভালো করে সিদ্ধ করে চটকে নিতে হবে। ধনেপাতা, আদা, কাঁচালঙ্কা ধুয়ে কুচিয়ে সব একসঙ্গে মেখে একটি মিশ্রণ তৈরি করে নিন।এবার গোল গোল করে সাদা তেলে ডুবিয়ে ভেজে নিন।এমন একটা আইটেম যা বিকেলের চা-জলখাবার হিসাবে অপূর্ব। কেউ যদি আমিষপ্রিয় হন তবে এরমধ্যে একটা ডিম ফেটিয়ে মিশিয়ে নিতে পারেন।
Proud of my 92 years young Didi.
Shantu…. there could be a photo shot with a small write up.
Can’t this be a serial feature extended to some more recipes?
so proud of you boro bashi
Now we will learn her secret cooking recipes