কলকাতা জুড়ে রক্তের হাহাকার

2 - মিনিট |

কলকাতা জুড়ে রক্তের হাহাকার । ব্লাডব্যাঙ্কে নেই প্রয়োজনীয় রক্ত । চাহিদা মেটাতে পারছে না শহরের নামি দামি সরকারি, বেসরকারি হাসপাতাল

কে আর সি টাইমস ডেস্ক

  কলকাতা জুড়ে রক্তের হাহাকার । ব্লাডব্যাঙ্কে নেই প্রয়োজনীয় রক্ত । চাহিদা মেটাতে পারছে না শহরের নামি দামি সরকারি, বেসরকারি হাসপাতাল । লোকসভা নির্বাচন ও প্রচন্ড গরমের কারনে হয় নি রক্তদান শিবির। ফলে এই অবস্থা । এক ইউনিট রক্তের প্রয়োজনেও শহরে হন্যে হয়ে ঘুরতে হচ্ছে বিভিন্ন রোগীর পরিবারকে

গত কয়েক মাসে শহরের অলি গলিতে, ধর্মতলার ময়দানে, মেট্রো চ্যানেলে, সভা করতে ব্যস্ত ছিলেন রাজনীতিকরা । কাজেই গরম কালে জনস্বার্থে করা কাজের তালিকা থেকে বাদ পড়েছে রক্তদান শিবিরের মত গুরুতর বিষয় । এমনটাই মনে করছেন সরকারি হাসপাতালের কর্তারা ।  তাঁরা জানান, মূলত দেখা যায়, কোনও রাজনৈতিক দল, পাড়ার ক্লাব, বা স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার পক্ষ থেকে রক্তদান শিবিরের আয়োজন করা হয় । কিন্তু গত কয়েক মাসে এরকম কোনও উদ্যোগ নিতে দেখা যায়নি তাদের । আবার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের একাংশের দাবি, প্রতিবারের মতো এবারও গরমের কারণে রক্তদান শিবির করা সম্ভব হয় নি ।  যে কারণে খালি হয়ে গেছে রক্তের ভান্ডার ।

রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা ডাঃ অজয় চক্রবর্তীর দাবি, গরমকালে রক্তদান শিবির করতে চায় না কোনও সংস্থা । তার ওপর আবার নির্বাচনী মাস । যে কারণে রক্তের আকাল পড়েছে এখন । গরমের সমস্যা তো প্রতি বছরের, তাহলে কেন সমাধানের উপায় খোঁজা হচ্ছে না ? অজয় চক্রবর্তী বলেন, ‘সরকারিভাবে আমরা কলকাতা শহরের প্রতিটি ক্লাব ও স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কাছে গিয়ে গরমকালে রক্তদান শিবির করার অনুরোধ করে থাকি । এছাড়া এই সময় প্রত্যেকটি সরকারি হাসপাতালে রক্তদান শিবিরের আয়োজন করা হয়’।

রোটারি ক্লাবের ব্লাডব্যাঙ্কের এক সদস্য বলেন, ‘যদি ছ’লক্ষ ইউনিট রক্ত মজুত থাকে, সেক্ষেত্রে চাহিদা দেখা যায় প্রায় ১০ লক্ষের । কাজেই যোগান দেওয়া সম্ভব হয় না । রক্ত সংরক্ষণ করে রাখা যায় মেরে কেটে দু’মাস । কাজেই তার আগে থেকে সংগ্রহ করে রাখার কোনো সম্ভাবনা নেই’ ।

বারাসতে এক বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন সুজয় সরকার, যাঁর গত শুক্রবার অপারেশন হওয়ার কথা ছিল । কিন্তু বৃহস্পতিবার সকাল থেকে কলকাতার সমস্ত ব্লাডব্যাঙ্ক ঘুরেও রক্তের সন্ধান পান নি তাঁর পরিবার । শনিবার সকালে বেশি অঙ্কের টাকা দিয়ে রক্ত কিনতে চাইলেও তা বৃথা যায় । এসএসকেএম হাসপাতাল থেকে বলা হয়, ‘রক্তই নেই, বেশি টাকা দিলেও জোগান দিতে পারব না রক্তের, ডোনার যোগাড় করুন’। অন্যদিকে, সাত বছরের মিলির ওপেন হার্ট অপারেশন হওয়ার কথা, কিন্তু রক্তের অভাবে তারও অপারেশন আটকে যায় ।

এসএসকেএম হাসপাতালের ব্লাডব্যাঙ্কে ফোন করে প্রশ্ন করা হলে উত্তর আসে, ‘কোনো রক্ত নেই, ব্লাডব্যাঙ্ক শূন্য’। জোরাজুরি করলে তাঁরা ক্ষুদ্ধ হয়ে বলেন, ‘কাউকে রক্ত দেওয়া যাচ্ছে না, আমাদের কাছে কোনো রক্ত নেই’। আর জি কর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ফোন করে রক্তের চাহিদার কথা জানালে, তাঁরা প্রশ্ন করেন, ‘কোথায় থাকেন আপনি ? আর জি করেই ভর্তি আছে আপানার রোগী’? উত্তর যদি ‘না’ হয়, তবে উত্তর হবে, ‘নিজের হাসপাতালের রোগীদেরই রক্তের জোগান দিতে পারছি না, আপনারা তো বাইরের’। একই চিত্র ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজেও । সেখানকার এক কর্তা জানান, মূলত ‘ভোটের জন্য ব্লাড ব্যাঙ্কের এই হাল’।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related news