৫ মেডিক্যাল কলেজের নিরাপত্তায় ৫ অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার

2 - মিনিট |

কলকাতার পাঁচ মেডিক্যাল কলেজে নিয়োগ করা হল একজন করে অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার । পাশাপাশি চালু করা হল টোল ফ্রি নম্বর

কে আর সি টাইমস ডেস্ক

কলকাতার বড় পাঁচটি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের নিরাপত্তার নজরদারিতে ডিসি কমব্যাট ফোর্স নভেন্দর পাল সিংকে নোডাল অফিসার করা হয়েছিল মঙ্গলবারই । কলকাতার পাঁচ মেডিক্যাল কলেজে নিয়োগ করা হল একজন করে অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার । পাশাপাশি চালু করা হল টোল ফ্রি নম্বর ।
গতকাল কলকাতার পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মার নেতৃত্বে লালবাজারে অনুষ্ঠিত হয় একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক । সেখানে কলকাতা পুলিশের প্রায় সব সিনিয়র অফিসার ছিলেন । বৈঠকে নেওয়া হয়েছে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত । ডিসি কমব্যাট ফোর্সকে দেওয়া হয়েছে নোডাল অফিসারের দায়িত্ব । এবার থেকে তিনি বিভিন্ন ডিভিশনের ডিসি এবং হাসপাতালের দায়িত্বে থাকা অ্যাসিসটেন্ট কমিশনারদের সঙ্গে সমন্বয় দেখে হাসপাতালে সুরক্ষার বিষয়টি দেখভাল করবেন । একই সঙ্গে ঠিক হয়েছে এবার থেকে হাসপাতালের আউটপোস্টগুলির দায়িত্বে থাকবেন অ্যাসিসটেন্ট কমিশনার পদমর্যাদার অফিসার । 
লালবাজার সূত্রে খবর, অ্যাসিসটেন্ট কমিশনার হিসেবে জগদীশ জানা এসএসকেএম হাসপাতালের নিরাপত্তার দ্বায়িত্ব আজ বুঝে নিলেন । বাসুদেব বন্দ্যোপাধ্যায় চিত্তরঞ্জন ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, সুবল মণ্ডল আরজিকর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, এমা সর্দার কলকাতা মেডিকেল কলেজ এবং অসীম দাস নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের সুরক্ষার দায়িত্বে আসছেন । পাশাপাশি মাঝে মধ্যে গন্ডগোল হওয়ার জন্য বেলেঘাটার ডাক্তার বিধানচন্দ্র রায় শিশু হাসপাতাল এবং আইডি হাসপাতালের জন্য অতিরিক্ত একজন অ্যাসিসটেন্ট কমিশনারকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে । অ্যাসিসটেন্ট কমিশনার সৌমেন ভট্টাচার্য সেই দায়িত্ব পালন করবেন । সিনিয়র এই পুলিশ কর্তাদের অভিজ্ঞতা হাসপাতালের সুরক্ষায় ভীষণভাবে কাজে দেবে বলে মনে করছে লালবাজার । বাঙুরের মতো হাসপাতালগুলোর নিরাপত্তার দায়িত্ব অবশ্য এখনও সামলাবেন ওসিরাই‌ । এই হাসপাতালে আউটপোস্টগুলো থেকে দু’ঘণ্টা অন্তর রিপোর্ট পাঠাতে হবে মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালগুলির সুরক্ষার জন্য নোডাল অফিসার ডিসি কমব্যাট ফোর্স নভেন্দর পাল সিংকে ।

লালবাজারের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, কথা মতো চালু করে দেওয়া হয়েছে টোল ফ্রি নম্বর । খোলা হয়েছে স্বাস্থ্য পরিষেবায় নিরাপত্তা বিষয়ে কলকাতা পুলিশের হেল্পলাইন । কলকাতার সমস্ত সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতাল, মেডিক্যাল কলেজ, চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত ডাক্তার, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী এবং রোগীদের যে কোন নিরাপত্তা এবং সুরক্ষাজনিত সমস্যায় যাতে কলকাতা পুলিশ দ্রুত সাহায্য করতে পারে, তার জন্য চালু করা হয়েছে কলকাতা পুলিশের এই নম্বর, যা সপ্তাহের সাতদিনই চব্বিশ ঘন্টা চালু থাকবে । নম্বরটি হল ১৮০০ ৩৪৫ ৮২৪৬এই টোল ফ্রি নম্বরটি নিয়ন্ত্রণ হবে লালবাজারের কন্ট্রোল রুম থেকে । এতে চিকিৎসক যদি কোনও আক্রমণের মুখে পড়েন কিংবা কোনও রোগী যদি আক্রান্ত হন সেই তথ্য জানাতে পারবেন কলকাতা পুলিশের হেড কোয়ার্টারে । একইসঙ্গে সিসিটিভি ক্যামেরা গুলোকে ব্যাপকভাবে সক্রিয় করার কথাও ভাবা হয়েছে । প্রয়োজনে হাসপাতালগুলিতে লাগানো হবে বাড়তি সিসিটিভি । সেই ক্যামেরাগুলির আউটপুট দেওয়া থাকবে সংশ্লিষ্ট হাসপাতালের আউটপোস্টে এবং থানায় । যাতে পুলিশ প্রতি মুহূর্তে নজরদারি চালাতে পারে । যা সরাসরি লিঙ্ক করা থাকবে ডিসি’র অফিসেও । কলকাতা পুলিশের পক্ষ থেকে পরামর্শ দেওয়া হবে প্রত্যেকটি হাসপাতালে প্যানিক অ্যালার্ম বটন রাখার জন্য । যাতে একটি বেল টিপলেই ইমারজেন্সি কিংবা আউটডোরের সঙ্গে পুলিশের যোগাযোগ তৈরি হয় ।
পুলিশের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ থাকলে তা নিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন পুলিশ কমিশনার । পাশাপাশি বৈঠকে ডিসিদের প্রিন্সিপাল ও হাসপাতালের এমএসভিপিদের সঙ্গে বৈঠক করে নিরাপত্তার পরিকল্পনা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে । জরুরি বিভাগে যাতে ভিড় না হয় সেদিকেও কড়া নজর দেওয়া হয়েছে । হাসপাতাল বিষয়ক কোনো ঘটনা ডিসি কমব্যাটকে জানাবেন সংশ্লিষ্ট ওসি । মেডিক্যাল কলেজে তৈরি করা হবে আউটপোস্ট। প্যানিক বাটন অর্থাৎ বিপদ অ্যালার্ম থাকবে এই আউটপোস্টে ।
ইতিমধ্যে নীলরতন সরকার হাসপাতালে পৌঁছে গেছেন পরিদর্শনকারী দল । কোথায় কোথায় সিসিটিভি বসাতে হবে তার মানচিত্র বানিয়ে ফেলা হয়েছে । লালবাজার থেকে ‘এসওপি’ বা ‘স্ট্যানডার্ড অপারেটিং প্রসিডিওর’ জারি করা হলে, তার পরই সমস্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে ।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related news