ক্যাম্পাসে যদি কোনও পড়ুয়া অ্যালকোহলিক পানীয় বা বেআইনি মাদকদ্রব্য কেনা, রাখা, ব্যবহার, বিক্রি, বিতরণ বা জমিয়ে রাখার জন্য দোষীসাব্যস্ত হন বা হস্টেল সহ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে মাদকদ্রব্য ব্যাবহারকে প্রোমোট করার সঙ্গে যুক্ত থাকেন তাহলে তাঁর বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টুডেন্টশিপ বাতিল বা সাসপেন্ড করা হতে পারে
সম্প্রতি বিতর্কিত বিষয় নিয়ে খবরের শিরোনামে আসা যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যাসে পরিণত হয়ে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের মধ্যে সব ধরণের নেশা করাটা পড়ুয়াদের কাছে যেন স্বাভাবিক বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে শুধু নেশা করাতেই শেষ নয়, তারপর নিজেদের মধ্যে শুরু হয়ে যাচ্ছে গোলমাল। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই যা পৌঁছে যাচ্ছে হাতাহাতির পর্যায়ে। সংবাদ মাধ্যমে বেশ কয়েকবার এই নিয়ে খবরও হয়েছে। এবার নেশা রুখতে কড়া পদক্ষেপের পথে হাঁটার সিদ্ধান্ত নিল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এতদিন যাদবপুরেভর্তি হওয়ার সময় অ্যান্টি ব়্যাগিং মুচলেকা নেওয়া হত। চলতি বছর থেকে তার সঙ্গে অ্যান্টি ড্রাগ মুচলেকা দেওয়া বাধ্যতামূলক করল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের নির্দেশিকা মেনে স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার বোর্ডের বৈঠকে এই মুচলেখা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।ইতিমধ্যেই মুচলেকার ফর্ম আপলোড করে দেওয়া হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ওয়েবসাইটে ।
মুচলেকায় ভর্তি হতে আসা পড়ুয়াদের লিখতে হবে, নেশা করব না কিংবা নেশার দ্রব্য রাখব না৷ মুচলেকার ফর্মের বক্তব্য অনুযায়ী, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে যদি কোনও পড়ুয়া অ্যালকোহলিক পানীয় বা বেআইনি মাদকদ্রব্য কেনা, রাখা, ব্যবহার, বিক্রি, বিতরণ বা জমিয়ে রাখার জন্য দোষীসাব্যস্ত হন বা হস্টেল সহ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে মাদকদ্রব্য ব্যাবহারকে প্রোমোট করার সঙ্গে যুক্ত থাকেন তাহলে তাঁর বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টুডেন্টশিপ বাতিল বা সাসপেন্ড করা হতে পারে। একই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের উক্ত ছাত্র বা ছাত্রীর হস্টেলের বোর্ডারশিপও বাতিল বা সাসপেন্ড করা হতে পারে। এই মর্মেই নতুন ভরতি হওয়া পড়ুয়াদের এই বছর থেকে মুচলেকা দিতে হবে ।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনলজির ডিন চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য বলেন, “এবারই প্রথম এই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের নেশা সংক্রান্ত সুষ্পষ্ট নির্দেশিকার ভিত্তিতেই আমরা এটা করছি। স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার বোর্ডের মিটিংয়ে সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিষয়টি গৃহীত হয়েছে।”
সাম্প্রতিককালে ক্যাম্পাসে একাধিক নেশাজনিত ঝামেলার ঘটনার জন্যই কি এই নতুন মুচলেকা চালু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হল? এই প্রশ্নের উত্তরেচিরঞ্জীববাবু বলেন, “সেটা কিছুটা হলেও তো প্রভাব ফেলেছে এই সিদ্ধান্ত নোওয়ার ক্ষেত্রে। অ্যালকোহল, ড্রাগ নেওয়ার প্রবণতাটা ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে ক্রমশ বেড়ে চলেছে। এই বয়সে নিষিদ্ধ বস্তুর প্রতি আকর্ষণের একটা প্রবণতা থাকেই ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে। এই কারণেই আমরা মনে করছি, ইউজিসি-র নির্দেশিকা অনুযায়ীনেশা রোধ করে পড়ুয়াদের স্বাভাবিক পথে ফিরিয়ে আনার জন্যমুচলেকার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত করা প্রয়োজন।”