মূলত এনআরসি প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার জন্য সীমা পুনর নির্ধারণ প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে পদক্ষেপ নিতে পারেনি নির্বাচন কমিশন
অবশেষে রাজ্যের বিধানসভা এবং লোকসভা কেন্দ্রের সীমা পুনঃনির্ধারণ প্রক্রিয়া শুরু হতে চলেছে । এক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন মঙ্গলবার আনুষ্ঠানিকভাবে নোটিফিকেশন জারি করেছে । ২০০১ সালের লোক গণনা অনুযায়ী বিধানসভা এবং লোকসভা কেন্দ্রের সীমা পুনঃনির্ধারণ করা হবে বলে জানানো হয়েছে । তাছাড়া আগামী বছর অর্থাৎ ২০২৩ সালের পয়লা জানুয়ারি থেকে রাজ্যে নতুন ভাবে কোন ধরনের প্রশাসনিক ইউনিট গঠন করার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ভারতের নির্বাচন কমিশন ।
প্রসঙ্গত রাজ্যের বিধানসভা এবং লোকসভা কেন্দ্রের সীমা পুনঃনির্ধারণ প্রক্রিয়া শুরু করার জন্য বহু বছর আগেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল । কিন্তু আদালতে এক্ষেত্রে মামলা থাকার পাশাপাশি বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং সচেতন মহল এর বিরোধিতা জানিয়ে আসছিল । মূলত এনআরসি প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার জন্য সীমা পুনর নির্ধারণ প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে পদক্ষেপ নিতে পারেনি নির্বাচন কমিশন । তাছাড়া বিভিন্ন রাজনৈতিক দলও নানা সময়ে এই প্রক্রিয়ায় বাধার সৃষ্টি করেছে । শাসকদলের সুবিধা অনুযায়ী বিধানসভা এবং লোকসভা কেন্দ্রের সীমানা পুনর নির্ধারণ হবে এই আশঙ্কায় বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি বহু বছর যাবত এই প্রক্রিয়ায় বাধা দিয়েছে । অবশেষে রাজ্য সরকারের তরফে বিধানসভা এবং লোকসভা কেন্দ্রের সীমা পুনঃনির্ধারণের জন্য নির্বাচন কমিশনকে লিখিতভাবে আহ্বান জানানো হয়েছে । সম্প্রতি এক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনকে চিঠি লিখেছে রাজ্য সরকার ।
এরপর কেন্দ্রীয় সরকারের আইন মন্ত্রণালয়ের অনুরোধে পরিপ্রেক্ষিতে ভারতের নির্বাচন কমিশন এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। নির্বাচন কমিশন জারি করা নির্দেশ অনুযায়ী ২০০১ সালের লোকগণনা মতে অসমের বিধানসভা এবং লোকসভা কেন্দ্র গুলোর সীমা পুনর নির্ধারণ করা হবে । মূলত বিধানসভা এবং লোকসভা কেন্দ্রগুলোতে থাকা ভোটারের সংখ্যা, কেন্দ্রগুলোর বর্তমান সীমানা, স্থানীয় প্রশাসনিক ব্যবস্থা ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয় খতিয়ে দেখে এই পুনঃনির্ধারণ প্রক্রিয়া অনুষ্ঠিত করা হবে । এক্ষেত্রে খসড়া তালিকা প্রস্তুত করার পর সেটা বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশ করে জনসমক্ষে তুলে ধরবে নির্বাচন কমিশন । এরপর এক্ষেত্রে সাধারণ মানুষের পরামর্শ এবং আপত্তি খতিয়ে দেখার পরেই বিধানসভা এবং লোকসভা কেন্দ্রের পুনঃনির্ধারণ চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হবে ।
নির্বাচন কমিশনের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে সারা অসম ছাত্র সংস্থা (আসু) । সংগঠনটির উপদেষ্টা সমুজ্জল কুমার ভট্টাচার্য বলেন, কেন্দ্রের সীমানা পুনঃনির্ধানের মাধ্যমে অসমীয়া জাতির সংবিধানিক রক্ষাকবচ সুনিশ্চিত করতে হবে । সারা অসমের রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণ যাতে অসমিয়ার হাতে থাকে সেটার প্রতি লক্ষ্য রাখতে হবে বলে তিনি মতামত ব্যক্ত করেছেন । আসুর উপদেষ্টা বলেন, রাজ্যের ভূমিপুত্রদের প্রভুত্ব এবং অধিকার সংরক্ষিত করার জন্য সঠিকভাবে বিধানসভা এবং লোকসভা কেন্দ্রের সীমা পুনঃনির্ধারণ অত্যন্ত জরুরি । এক্ষেত্রে প্রত্যেক সচেতন নাগরিককে লক্ষ্য রাখার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি ।
অন্যদিকে রাজ্যের পর্যটন মন্ত্রী জয়ন্ত মল্ল বড়ুয়া বলেন, এই প্রক্রিয়া বহু বছর আগেই সম্পূর্ণ হয়ে যাওয়া উচিত ছিল । এক্ষেত্রে ইতিমধ্যে বহু দেরি হয়ে গেছে বলে উল্লেখ করেন তিনি । ভারতের নির্বাচন কমিশনের এই সিদ্ধান্তের স্বাগত জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, কেন্দ্রের সীমানা পুনঃনির্ধানের মাধ্যমে রাজ্যের প্রত্যেক জাতি উপজাতিদের প্রতিনিধিত্ব দেওয়া সম্ভব হবে । অসমের জন্য এটা অত্যন্ত সুখবর বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।। এক্ষেত্রে একই ধরনের মন্তব্য করেছেন মঙ্গলদৈ লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ দিলীপ শইকিয়া ।