‘হিট লিস্টে ‘ রয়েছে আরএসএস প্রধান মোহন রাও ভাগবত সহ দেশের ভিভিআইপি তালিকায় থাকা কয়েকজন নেতার নাম। অসমের মুখ্যমন্ত্রী ড.হিমন্তবিশ্ব শর্মাও রয়েছেন “রোহিঙ্গা সলিডারিটি আর্মির” টার্গেটে
পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই এবং আলকায়দার মদত পুষ্ট জেহাদি দের বিরুদ্ধে অসমে পুলিশের অভিযান তীব্র হতেই সন্দেহভাজনদের জঙ্গিদের নিরাপদ ডেরা হতে পারে বরাক উপত্যকা এবং এর লাগোয়া ত্রিপুরার বাংলাদেশ সীমান্ত এলাকা ! বরাক উপত্যকার পাথারকান্দি,নিলাম বাজার, করিমগঞ্জ, বদরপুর,কাটিগড়া, ত্রিপুরার ঊনকোটি জেলার কৈলাসহর, উত্তর জেলার ধর্মনগরের রাগনা,চুরাইবাড়ি সহ সিপাহীজলা জেলার সোনামুড়া জুড়ে থাকা আলকায়দা ও আইএসআইর “স্লিপার সেলের “সদস্যরাই অ্যাকশন নেটওয়ার্কে থাকা ক্যাডারদের নিরাপদ আশ্রয়ের ব্যবস্থা করে দিতে তৎপর !
এমন বিষ্ফোরক তথ্যই হাতে পড়েছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার। গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্টের ভিত্তিতে অসম এবং ত্রিপুরা পুলিশের তরফেও শুরু হয়েছে স্পর্ষকাতর এলাকায় কড়া নজরদারি চালানো।
অসম সহ ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে বড়োসড়ো নাশকতা চালানোর ছক রয়েছে আইএসআই ও মদত পুষ্ট আলকায়দা জঙ্গি সংগঠনের! আলকায়দা সহ আরও অনেক পাক মদত পুষ্ট সংগঠন এককাট্টা হয়ে এক বিরাট নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেছে। এই নেটওয়ার্কের মদতপুষ্ট সংগঠন জঙ্গি সংগঠন “রোহিঙ্গা সলিডারিটি আর্মি “।অসম সহ উত্তর পূর্বাঞ্চলে এই সংগঠন বিশেষ ভাবে সক্রিয় হয়ে রয়েছে। তাদের ” হিট লিস্টে ” রয়েছে আরএসএস প্রধান মোহন রাও ভাগবত সহ দেশের ভিভিআইপি তালিকায় থাকা কয়েকজন নেতার নাম। অসমের মুখ্যমন্ত্রী ড.হিমন্তবিশ্ব শর্মাও রয়েছেন “রোহিঙ্গা সলিডারিটি আর্মির” টার্গেটে।
এখানেই শেষ নয়, ভারতে ইন্দো-বাংলাদেশ সীমান্ত এলাকায় থাকা বরাক উপত্যকার পাথারকান্দি থেকে কাটিগড়া পর্যন্ত বিস্তৃত এলাকায় থাকা নেটওয়ার্ক এখন নিরাপদ আশ্রয়ের চলে যাওয়ার ব্যবস্থা করে দিচ্ছে উজান এবং নিম্ন অসমে রাজ্য পুলিশের টার্গেটে থাকা জঙ্গিদের। বরাক উপত্যকার পাথারকান্দি ও নিলাম বাজার থেকে সরাসরি কাশ্মীরে গিয়ে প্রশিক্ষণ নিয়ে আসা সদস্যরা এখন এই কাজটিই করছে ! এমন খবরও রয়েছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের কাছে।
একই ভাবে ত্রিপুরার ঊনকোটি জেলার সদর দফতর কৈলাসহর , উত্তর ত্রিপুরা জেলার সদর দফতর ধর্মনগর এবং চুরাইবাড়ি সহ সিপাহীজলা জেলার সোনামুড়া এলাকার কিছু লোক জড়িত রয়েছে এই জঙ্গি নেটওয়ার্কে। মূলত বাংলাদেশ থেকে চোরাই পথে আসা রোহিঙ্গা যুবকদের চলাচল করতে সাহায্য করা সহ নাশকতার কাজে অর্থের যোগান অব্যাহত রাখতে মাদকের ব্যবসা, কয়লা, বার্মিজ সুপারি,পাথর,গরু-মহিষ চোরাচালান , কফ সিরাপ,মানব পাচার , সাইবার ক্যাফে সহ বিভিন্ন বৈধ ও অবৈধ ব্যবসায় জড়িত আলকায়দা ও আইএসআইয়ের এই বিশেষ “স্লিপার সেল”।
Advertisement
কিছু স্টুডেন্ট ইসলামিক মুভমেন্ট অব ইন্ডিয়া (সিমি) সদস্য, মাদ্রাসা ছাত্র ও মাদ্রাসা শিক্ষক সংস্থার একাংশ সদস্য সহ কট্টর কিছু তবলিগ জামাতের সমর্থকও এই “স্লিপার সেলে” রয়েছে। বরাক উপত্যকার করিমগঞ্জ জেলার বাসিন্দা হিন্দু ধর্ম ছেড়ে ইসলামে দীক্ষিত এক ব্যক্তি কাশ্মিরের জঙ্গি ডেরায় দীর্ঘ সময় ট্রেনিং নিয়েছে। সেই ব্যক্তি ফিরে এসে নেতৃত্ব দিচ্ছে ত্রিপুরা এবং বরাকের “স্লিপার সেল”কে! এমন তথ্যও মিলেছে!
বাংলাদেশ সরকার জঙ্গিদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করার পর, কোমর ভেঙে গেছে জেএমবি (আনসারুল্লাহ) টিম সহ বাংলাদেশের বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনের। কিন্তু পাক মদতপুষ্ট কিছু জেহাদি সংগঠন এখনও গোপনে সক্রিয় বাংলাদেশের চট্টগ্রাম, সিলেট সহ বিভিন্ন অঞ্চলে। এই গোপন জেহাদি নেটওয়ার্ককে চাঙ্গা রাখতে ব্যবহার করা হচ্ছে রোহিঙ্গা উদ্বাস্তুদের। আর এই সব চলছে আইএসআইয়ের প্রত্যক্ষ মদতে। দুই থেকে তিন মাস পর পর আইএসআইয়ের বিভিন্ন শীর্ষ আধিকারিক বাংলাদেশে এসে তদারক করে যায় সব কিছু। করা হয় নতুন ক্যাডার রিক্রুট।
ভারতে নাশকতা চালাতে বিভিন্ন বয়সের রোহিঙ্গাদের রোজগারের টোপ দিয়ে ও জেহাদে সামিল হয়ে শহিদ হলে বেহেস্তে যাওয়ার স্বপ্ন দেখিয়ে কাজে লাগাচ্ছে আইএসআই এবং আলকায়দা। সিলেট ও চট্টগ্রাম ডিভিশনের বিভিন্ন বেসরকারি মাদ্রাসায় এবং বেসরকারি স্কুলে শুদ্ধ বাংলা,হিন্দি, উর্দু ও চোস্ত ইংরেজি কথা বলাঊ শিক্ষা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আরও বিভিন্ন বিষয়ে ট্রেনিং দেওয়া হয় রোহিঙ্গা যুবকদের। এরপর তাদের পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে ভারতে নাশকতা চালানোর “মিশনে”।
এখন উজান এবং নিম্ন অসমে জেহাদিদের চিহ্নিত করে অভিযান তীব্র হতেই সক্রিয় হয়ে উঠেছে বরাক উপত্যকা এবং ত্রিপুরায় থাকা জেহাদি “স্লিপার সেল”। সহযোদ্ধাদের নিরাপদ আশ্রয়ের বন্দোবস্ত করে দেওয়া সহ বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা করে দিতে তৎপর হয়ে উঠেছে এই নেটওয়ার্ক। তবে রাজ্য পুলিশের নজরদারি রয়েছে ভারত- বাংলাদেশ সীমান্ত এলাকার বিভিন্ন জায়গায়।
পুলিশের নজর এড়িয়ে নিজেদের ঘনিষ্ঠ আত্মীয় পরিচয় দিয়ে রাখা হতে পারে অসম-ত্রিপুরা,অসম-মিজোরাম সহ অসম-মনিপুর সীমান্ত এলাকার বিভিন্ন গ্রামে। বিশেষ করে ত্রিপুরা সীমান্তের পাথারকান্দি এলাকা এবং কাছাড়ের মিজোরাম সীমান্তের ভাগাবাজার এবং হাইলাকান্দির ভৈরবী এলাকা বিশেষ স্পর্ষকাতর ও সুরক্ষিত জঙ্গিদের আত্মগোপন করার জন্য। পাশাপাশি রোজগারের বন্দোবস্ত করে দিতে তাদের লাগানো হতে পারে বিভিন্ন ব্যবসাতেও। এমন তথ্য হাতে পড়েছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার। এ নিয়ে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার তরফে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে সংশ্লিষ্ট রাজ্যের পুলিশকেও।
Advertisements | 5E For Success