টার্গেট নরম হিন্দুত্ব ,গুয়াহাটিতে বিশেষ প্রশিক্ষণ শিবির সংঘের

2 - মিনিট |

যে ব্যক্তি যে পেশায় আছেন তাকে তার পেশার থেকে কিভাবে সংঘের কর্মকান্ডে জড়িত করা যায় সেটা বুঝিয়ে বলেছেন প্রশিক্ষকরা

চয়ন ভট্টাচার্য

শিলচর: যে কোনোভাবে সংগঠনের সঙ্গে মানুষকে যুক্ত করতে হবে। সম্প্রতি রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের গুয়াহাটিতে অনুষ্ঠিত এক বিশেষ প্রশিক্ষণ এই বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হল। এখানে সারা দেশ থেকে সংঘের শীর্ষ নেতারা এসেছিলেন। অত্যন্ত গোপনে এই বৈঠকে সিদ্ধান্তগুলো নেওয়া হয়েছে। দেশের সাম্প্রতিক রাজনীতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। তবে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে কিভাবে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের প্রতি মানুষের সমর্থন আরো বাড়ানো যায়।

এ বিষয়ে রীতিমতো প্রশিক্ষণ দেওয়া হলো বাছাই করা কয়েকজনকে। উত্তর-পূর্বের বিভিন্ন এলাকা থেকে সংঘের অনেকেই যোগ দিয়েছেন। এবং সবাই নয় নির্ধারিত কয়েকজনকে এখানে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। কি প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে?বোঝানো হয়েছে যে কোনভাবে মানুষকে সংঘের আদর্শে অনুপ্রাণিত করতে হবে। বর্তমান সামাজিক প্রেক্ষাপটে এখন যে আর কেউ নিবেদিত প্রাণ প্রচারক হবেন না সেটা তারা বুঝে নিয়েছেন।

এই প্রজন্মের যুব সমাজের এত ত্যাগের মনোভাব নেই। এই অবস্থায় নিজেদের প্রভাব বিস্তার করতে সংঘ চাইছে বিভিন্ন পেশায় নিযুক্ত বিভিন্ন বয়সের লোকদের সংঘের কর্মকান্ডের সঙ্গে যুক্ত করতে।যে ব্যক্তি যে পেশায় আছেন তাকে তার পেশার থেকে কিভাবে সংঘের কর্মকান্ডে জড়িত করা যায় সেটা বুঝিয়ে বলেছেন প্রশিক্ষকরা। এই ধরনের যারা সংঘের প্রতি আকৃষ্ট তাদের সেম্পেথাইযার বা সমর্থক হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয়েছে।

এসব সেম্পেথাইযারা আগামীতে সংগঠন এবং বিজেপি দলের জন্য একটা বিরাট সম্পদ হতে পারে। তাই আরএসএস নেতৃত্ব চাইছেন এই ধরনের ব্যক্তি যারা সরাসরি কট্টর হিন্দুত্ব রাজনীতি পছন্দ করেন না । কিন্তু হিন্দুত্বের প্রতি একটা সুপ্ত ভালবাসা ,একটা টান অনুভব করেন। এমন ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে তাদের কর্মকান্ডের সঙ্গে যুক্ত করতে হবে।

আপাতত এই ছকেই নিজের প্রভাব এবং প্রতিপত্তি বিস্তার করতে চাইছে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ। আর যেহেতু সংগঠনটি আরএসএস তাই প্রতিটি কাজে একটা সুশৃঙ্খলতা থাকবেই। এবং কাজও শুরু হয়ে গেছে। অধ্যাপক ডাক্তার আইনজীবী সাংবাদিক সরকারি চাকুরে , অনেকেই আছেন যারা হিন্দুত্বের প্রতি একটা ভালোবাসা অনুভব করেন। কিন্তু উগ্রতা পছন্দ করেন না। তাদের কিভাবে আরো বেশি করে সঙ্গে রাখা যায় সেই চেষ্টায় হচ্ছে।

এছাড়া আরও একটা বিষয় গুয়াহাটির এই শিবিরে আলোচনা হয়েছে। বিভিন্ন বিষয়ে জনগণের যে ক্ষোভ আছে সেটাকে প্রশমিত করতে কর্মীদের কি করা উচিত সেটা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা ও পরামর্শ দেওয়া হয়। সংঘের এই যে প্রচেষ্টা এটাকে অত্যন্ত গোপন রাখা হয়েছে। এটা অবশ্য নতুন কিছু নয় ।রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ যখনই যা কিছু করে খুব একটা ঢাক ঢোল পিটিয়ে করে না। ঠান্ডা মাথায় কিভাবে সঠিক কাজটা করতে হয় সেটা সংঘের প্রত্যেকেই ভালো জানেন।

রাজনৈতিক কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। তবে এই যে অধিবেশন হয়েছে এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এখানে আসামে রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। সর্বভারতীয় শীর্ষ আরএসএস নেতারা এতে যোগ দিয়েছেন।তাই স্বভাবতই এই প্রশিক্ষণ শিবিরের গুরুত্ব অপরিসীম। যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে কিভাবে সংঘের আদর্শকে প্রচার করা যায় সেটাই ছিল এ প্রশিক্ষণের মোদ্দা কথা। এই প্রশিক্ষণ শিবির আগামীতে আরএসএস এর বিভিন্ন কর্ম পদ্ধতির দিকনির্দেশ করবে । তাই এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *