ডিলিমিটেশনে সুপ্রিম কোর্ট স্থগিতাদেশ না দিলেও মূল মামলাটি গ্রহণ করেছে

2 - মিনিট |

সুপ্রিম কোর্ট কেন্দ্র সরকার ও নির্বাচন কমিশন দুপক্ষকে তিন সপ্তাহের সময় দিয়েছে তাদের অভিমত জানানোর জন্য

চয়ন ভট্টাচার্য

শিলচর: ডিলিমিটেশনের প্রক্রিয়াতে কোনরকম স্থগিতাদেশ না দিলেও এখনো হতাশ নন আন্দোলনকারী রা। আজ সুপ্রিম কোর্টে এই মামলার প্রথম শুনানি হয়। শুনানি গ্রহণ করেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ওয়াই বি চন্দ্রচূড়। ১১ বিরোধী দলের আবেদনের প্রথম দাবিটি ছিল যেহেতু ডিলিমিটেশন নিয়ে নানা ধরনের প্রশ্ন উঠছে তাই প্রক্রিয়া স্থগিত থাকুক।

কিন্তু আদালত এই যুক্তি মানেনি ।ডিলিমিটেশন প্রক্রিয়ায় কোন ধরনের স্থগিতাদেশ দিতে আদালত অস্বীকার করেছে। এর অর্থ হল ডিলিমিটেশন প্রক্রিয়া যেভাবে চলছে সেভাবেই চলবে। কিন্তু আরেকটি উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, ১৯৫০ সালের রিপ্রেসেন্টেশন অফ পিপল আইনের আট নম্বর ধারা অনুসারে নির্বাচন কমিশন ডিলিমিটেশন করতে পারে কিনা বা এর সাংবিধানিক বৈধতা আছে কিনা এ নিয়ে যে আবেদন করা হয়েছিল সেটা আদালত গ্রহণ করেছে।

সুপ্রিম কোর্ট কেন্দ্র সরকার ও নির্বাচন কমিশন দুপক্ষকে তিন সপ্তাহের সময় দিয়েছে তাদের অভিমত জানানোর জন্য। সুপ্রিম কোর্টের এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন মামলাকারীরা। ১০ টি বিরোধী দল ও বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবী হিরেন গোহাই সুপ্রিম কোর্টে এই মামলা দায়ের করেছেন।এই পদক্ষেপে কোন ধরনের হতাশ হতে রাজি নন আন্দোলনকারীরা।

সিআরপিসি নেতা বিশিষ্ট আইনজীবী হাফিজ রশিদ চৌধুরী বলেন, নির্বাচন কমিশনের এক্তিয়ার আছে কিনা এই বিষয়ে আদালত যখন শুনানি গ্রহণ করেছে তখন সেটা তাৎপর্যপূর্ণ। এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকার ও নির্বাচন কমিশন কি জবাব দেয় সেটার উপর নির্ভর করছে মামলার ভবিষ্যত।

তবে ডিলিমিটেশন প্রক্রিয়া স্থগিত না রাখাটা মামলাকারীদের কাছে একটা ধাক্কা বলে তিনি মনে করেন না। এছাড়া এভাবে স্থগিতাদেশ চাওয়াটাও ঠিক হয়নি। যখন একটা খসড়া তালিকা প্রকাশিত হয়েছে তখন সেটাতে আদালত স্থগিতাদেশ দেবে না এটাই স্বাভাবিক।

শিলচর বার সংস্থার সভাপতি নীলাদ্রি রায় এ বিষয়ে তার মতামত ব্যক্ত করে বলেন স্থগিতাদেশ যখন হয়নি তখন ধরে নেওয়া যায় এই ডিলিটেশন আটকাবে না। এছাড়া ডিলিটেশন করার নির্বাচন কমিশনের এক্তিয়ার আছে কিনা এই মামলা সহজে মীমাংসা হবে না। আদালত নোটিশ পাঠালেও কমিশন ও কেন্দ্র সরকার আরো সময় চাইতে পারে। এই করতে করতে প্রক্রিয়াটা দীর্ঘায়িত হতে পারে।

অন্যদিকে কমিশন ইচ্ছা করলে চূড়ান্ত ডি লিমিটেশন করে ফেলতে পারবে। কারণ ডিলিমিটেশন প্রক্রিয়ায় কোন স্থগিতাদেশ আদালত দেয়নি। ফোরাম ফর ডেমোক্রেটিক রাইটসের কর্মকর্তা বিশিষ্ট আইনজীবী সৌমেন চৌধুরী বলেন নির্বাচন কমিশনের এক্তিয়ার নিয়ে যে প্রশ্ন উঠেছে সেটা যখন সুপ্রিম কোর্ট হস্তক্ষেপ করছে তার অর্থ এই প্রশ্নের সমাধান না হওয়া পর্যন্ত ডিলিমিটেশন প্রক্রিয়া চূড়ান্ত হতে পারবেনা।

তাহলে ডেলিমেটেশন প্রক্রিয়া কেন স্থগিতাদেশ ত দিল না আদালত ? এই প্রশ্নের জবাবে সৌমেন চৌধুরী বলেন আসলে স্থগিতাদেশ চাওয়াটাই ঠিক হয়নি.। কারণ কোন খসড়ার ওপর স্থগিতাদেশ দেওয়া যায় না। কিন্তু নির্বাচন কমিশনের ডিলিমিটেশন করার ক্ষমতা আছে কিনা বা এর সাংবিধানিক বৈধতা আছে কিনা এই আবেদন আদালত মেনে নিয়েছে। অর্থাৎ সৌমেন চৌধুরীর মতে ডেলমিটেশন পদ্ধতি নিয়ে মামলা হচ্ছে সেটা তারা অনেকটাই এগিয়ে আছেন।

কারণ এই বিষয়ে মীমাংসা না হওয়া পর্যন্ত কমিশন চূড়ান্ত খসড়া তালিকা করতে পারবে না। আর করলেও সেটার উপর আদালত স্থগিতাদেশ জারি করবে। এভাবে নানা আইনজীবীর নানা ব্যাখ্যা থেকে বোঝা গেল বিষয়টা জটিল। কিন্তু কিন্তু প্রথম দিন অনেকটাই উজ্জীবিত মামলাকারিরা।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *