কমিশন সবাইকে ভারতীয় মনে করে
শিলচর: নির্বাচন কমিশন কি বিভিন্ন আপত্তিগুলোকে গুরুত্ব দেবে। মুখ্য নির্বাচনী কমিশনার রাজীব কুমারের যে বডি ল্যাঙ্গুয়েজ তাতে বোঝা গেল খুব একটা পরিবর্তন ঘটবে না। শুনানি যখন চলছিল এর ফাঁকে ফাঁকেই তিনি তার মতামত জানিয়ে দিচ্ছিলেন। অনেকেই যখন তাদের বক্তব্য রাখার সময় বলছিলেন নির্বাচন কমিশন এখানে ডিলিমিটেশন কমিশনের নিয়ম গুলো অনুসরণ করেনি।
তখন এর জবাবে তিনি বলেছিলেন যে নিয়ম মেনে ১৯৭৬ সালে হয়েছিল, ২০০৮ সালে যে ডিলিমিটেশন হয়েছিল সেই নিয়ম মেনেই অসমেও এবার ডি লিমিটেশন করা হয়েছে। ডেলিমেটেশন কমিশনের মূল নিয়মে তারা কোন পরিবর্তন ঘটাননি।কিভাবে ডি লিমিটেশন কমিশনের নিয়ম মেনে করা হয়েছে এর উল্লেখ অবশ্য তিনি করেন নি।
একটা কথা তিনি বারবার বলছিলেন তারা যখন কোন বিধানসভা বা লোকসভা এলাকার সীমানা নির্ধারণ করেন তখন তারা কোন জাতিগোষ্ঠী বা রাজনৈতিক স্বার্থ দেখেন না। তিনি বলেন এটা দেখা রাজনৈতিক নেতাদের কাজ। আমাদের কাজ হল সুন্দরভাবে লোকসভা ও বিধানসভা কেন্দ্রগুলোকে ভাগ করে দেওয়া।
অনেকের অভিযোগ থাকতে পারে সেগুলো শুনতেই তো এখানে আসা। যখন মনিপুরী সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরা বারবার বলছিলেন যে তারা লক্ষ্মীপুরে থাকলে তাদের যে একটা প্রভাব সেটা কিছুটা থাকতো এখন তারা অনেক ভাগ হয়ে গেছেন। এ প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন নির্বাচন কমিশনার যখন কোন এলাকাকে ভাগ করে তখন সবাইকে ভারতীয় হিসেবে গণ্য করে।
নির্বাচন কমিশনারের কথাবার্তায় এবং তার শারীরিক অবিভক্তিতে একটা কথাই বুঝা গেল তিনি যা তৈরি করেছেন সেটার উপর তার প্রচন্ড আস্থা রয়েছে। দেখা গেল অনেক অভিযোগ শুনার পর তিনি যেন তার নিজের মত থেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চাইছিলেন। কমিশনের কাজে কোন আইনি গাফিলতি নেই এটাই বোঝাতে চেয়েছেন।
তবে এটা স্বীকার করতে হবে দেশের মুখ্য নির্বাচন কমিশনার হিসাবে প্রায় কয়েক ঘণ্টা ধৈর্য ধরে সবার বক্তব্য শুনেছেন। এতে নির্বাচন কমিশনের প্রতি অভিযোগকারীদের আস্থা অনেকটা বেড়েছে এটা স্বীকার করতে হবে।কিছু অভিযোগকারী যখন বলছিলেন জনসংখ্যার ঘনত্বের বিচারে যদি হাইলাকান্দি থেকে আসন কাটা হয় তাহলে বড়লান্ডে কিভাবে আসল বাড়ল। এই কথার তিনি সরাসরি জবাব দেন নি।
একটা কথা বলেছেন লাক্ষাদ্বীপের জনসংখ্যা কত কিন্তু সেখানে একটি লোকসভা কেন্দ্র রয়েছে। অর্থাৎ তিনি লাক্ষাদ্বীপকে দিয়ে বোড়োল্যান্ডে আসন বাড়ানকে যুক্তিযুক্ত বলতে চাইছেন। কিন্তু যেহেতু এটা শুনানি তাই কেউ তাকে পাল্টা প্রশ্ন করতে পারেন নি। তাহলে তাই যদি হয় তাহলে অরুণাচল প্রদেশ আয়তনে আসাম থেকেও বড় তাহলে অরুণাচল প্রদেশকে কি ১৪ টি লোকসভা আসন দেওয়া হবে।
কিন্তু কমিশনের সদস্যরা কোন বক্তব্য শুনতে চাননি। অবশ্য না চাওয়াটাই স্বাভাবিক। কারণ এটা শুনানি। কিন্তু এরই ফাঁকে ফাঁকে একেকটি মন্তব্য করে কমিশনের মনোভাবটা জানিয়ে দিচ্ছিলেন রাজীব কুমার।তবে করিমগঞ্জ আসন নিয়ে যখন সাংসদ রাজদীপ রায় বক্তব্য রাখছিলেন তখন তিনি খুব মনোযোগের সঙ্গে কপাল খোচ করে রাজদীপের বক্তব্য শুনছিলেন। কিন্তু কোন মন্তব্য করেননি ।
তবে গোটা শুনানি প্রক্রিয়ায় বারবার একটি কথাই তিনি প্রতিষ্ঠিত করতে চাইছিলেন যে, এইযে খসড়া তৈরি হয়েছে এতে নতুন কোন নিয়ম যুক্ত হয়নি। ডি লিমিটেশন কমিশনের যেটা নিয়ম সেটাই কার্যকর হয়েছে ।যখনই এনআরসি প্রসঙ্গে উঠেছে তখনই তিনি বলে উঠছেন এটা রাজ্য ইস্যু। এটা নিয়ে কোন অভিযোগ জানানো যাবে না। অর্থাৎ কমিশন বুঝিয়ে দিল এই যে শংকরদেব কলা ক্ষেত্রে শুনানির আয়োজন এটা শুধু স্থানীয় ভিত্তিতে। কিন্তু রাজ্য বা জাতীয় ইস্যুগুলি যে প্রভাবিত করছে স্থানীয় ইস্যুগুলিকে এসব বিষয়ে মন্তব্য করেননি। অর্থাৎ ডিলিমিটেশন নিয়ে অবস্থান খুব একটা বদলাবে না এটা স্পষ্ট করে দিয়েছেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার।