সাহেবদের দেশে এখন কালী মন্দির নির্মাণ করতে উদ্যোগী হয়েছেন বাঙালীরা
শিলচর: সারা ইংল্যান্ড জুড়ে রয়েছে অনেকগুলি মন্দির। যেমন হনুমান মন্দির গণেশ মন্দির এসব অনেক আছে। কিন্তু
দক্ষিণ-পূর্ব ইংল্যান্ডে কালী মন্দির নেই। বাঙালি মানেই কালি ভক্ত। আর যেহেতু কালী মন্দির নেই তাই গণেশ মন্দির বা হনুমান মন্দিরেই যেতে হয়। তাই মনে মনে একটা না পাওয়ার বেদনা থেকে যায় সেখানকার বাঙালি হিন্দুদের।
আর এই বিষয়ে এগিয়ে এসেছেন এক ব্যক্তি ।সাহেবদের দেশে এখন কালী মন্দির নির্মাণ করতে উদ্যোগী হয়েছেন বাঙালীরা। বরাক উপত্যকা ত্রিপুরা ও বাংলাদেশের বাঙালিরা এককাট্টা হয়ে এই প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন। সব চেয়ে যে লক্ষণীয় বিষয় সেটা হল বরাকের এক যুবক এই গোটা প্রক্রিয়ার নেতৃত্ব দিচ্ছে ন। করিমগঞ্জের অভিজিৎ রায় ব্রিটিশদের দেশে কালী মন্দির বানানোর পথে অনেকটাই এগিয়ে গেছেন।
এইতো যেমন হিন্দু দেবী মন্দির ও কালচারাল সেন্টারের ব্যবস্থাপনায় ইংল্যান্ডের মিল্টন কিনস শহরে অক্ষয় তৃতীয়ার দিন অনুষ্ঠিত হলো প্রথম মাসিক কালী পূজা। এই পুজোয় প্রায় ৩০০/৩৫০ লোক যুক্ত ছিলেন। স্থানীয় একজন কাউন্সিলর তিনি ভারতীয় তিনি এসেছিলেন। এখানে যে দুর্গাপূজা হয় সে দুর্গাপূজা কমিটিও যুক্ত হয়েছে এই প্রক্রিয়া য়।মূলত বরাক উপত্যকা, ত্রিপুরা ও বাংলাদেশের বেশ কয়েকজন প্রবাসী বাঙালি হিন্দু মিলে ২০১৯ সালে হিন্দু দেবী মন্দির এবং কালচারাল সেন্টারের স্থাপনা করেন।
আর এই উদ্যোগে সবাইকে একসঙ্গে করার কাজটি করেছেন অমিতাভ রায়। করিমগঞ্জ শহরের ছেলে অমিতাভ। বাড়ি করিমগঞ্জের বনমালী রোডে বাবা আশুতোষ রায়।পড়াশোনা করেছিলেন ডিমাপুরে, এরপরে দিল্লিতে তারপর লন্ডনে এমবিএ। বর্তমানে ফিন্যান্স অফ ব্যাংকিংয়ে উচ্চপদস্থ পদে। ইংল্যান্ডের প্রবাসী অমিতাভ রায় জানান, ইংল্যান্ডের কোন কালী মন্দির নেই। ইউকে তে আছে ওয়েলসে।
কিন্তু ইংল্যান্ডে নেই।তাই দক্ষিণ পূর্ব ইংল্যান্ডে একটি স্থায়ী কালী মন্দির স্থাপন করা তাদের উদ্দেশ্য। সেই উদ্দেশ্যে তারা মাসিক দেবী কালীর পুজার্চানার প্রচেষ্টা হাতে নিয়েছেন। এবং এক্ষেত্রে প্রথম লক্ষ্যটা হচ্ছে সরকারি জমির পাওয়া। একটানা কোন জায়গায় পূজা অর্চনা হলে সরকার সে দেশে জমি দে য়। তাই ২০১৯ সাল থেকে এই পূজা চলে আসছে। প্রতি মাসেই এভাবে কালীপূজার ব্যবস্থা করা হবে।
ইংল্যান্ডের মত একটি দেশে এভাবে প্রতি মাসে কালী পূজা করা প্রবাসীদের পক্ষে সাংঘাতিক ব্যাপার। কিন্তু ব্যস্ত জীবনের মধ্যে সময় বের করে নিচ্ছেন সবাই।সবাই অংশ নিচ্ছে ন। আর অমিতাভর সঙ্গে কাজ করছেন আরও একজন, তিনি শিলচরের।
বরাকের বিশিষ্ট চিকিৎসক ডা: সুজিত নন্দী পুরকায়স্থের ছেলে সিদ্ধার্থ নন্দী পুরকায়স্থ।
এই কর্মকান্ডের সঙ্গে তিনিও যুক্ত আছেন।পূজো কেমন হয়। যেদিন পুজো হবে সেদিন সম্পূর্ণ শাস্ত্রীয় নিয়ম মেনেই পূজা হয়। সঙ্গে থাকে খাবারের বন্দোবস্ত। পুজোয় কচি কাচারা অত্যন্ত উৎসাহের সঙ্গে অংশ নেয় এবং প্রাসাদ বিতরণে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। হাজার হাজার মাইল দূরে সাগর পারে এভাবেই নিজস্ব সংস্কৃতি ধরে রাখছেন প্রবাসী বাঙালিরা। সবগুলো ঘোষণা গান সংস্কৃতিক অনুষ্ঠান সবকিছুই বাংলাতে।
বরাকের কিছু নেতা যেখানে বাংলাকে বিসর্জন দিতে উঠে পড়ে লেগেছে ন। আর এরা সুদূর ইংল্যান্ডে ভাষা সংস্কৃতি রক্ষার জন্য এতকিছু করছেন। কালী মন্দির প্রতিষ্ঠা হওয়া পর্যন্ত তিনি যে থামছেন না,এটা সাফ জানালেন অমিতাভ। আগামী একুশে মে আবার কালী পূজার আয়োজন করা হয়েছে। এভাবে ই সাগরপারে মা কালীকে প্রতিষ্ঠা করার উদ্যোগ চলছে।