ভাষা শহিদ স্টেশন, শিলচর নিয়ে শিলাদিত্য দেবের বক্তব্যের প্রতিবাদ

2 - মিনিট |

ভাষা শহিদ স্টেশন, শিলচর বরাকের আমজনতার গণদাবী

কেআরসি টাইমস বারাক ভ্যালি ব্যুরো

শিলচর : ভাষা শহিদ স্টেশন, শিলচর বরাকের আমজনতার গণদাবী। যার মান্যতা দিয়েছেন প্রতিটি রাজনৈতিক দল। প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সর্বজনশ্রদ্ধেয় কবীন্দ্র পুরকায়স্থ ১৪ বার সংসদে বিষয়টা উত্থাপন করেছিলেন। সম্ভবত শিলাদিত্ত দেব তখন তার দিল্লির বাড়িতেই থাকতেন (শুনেছি)। কিন্তু বিষয়টি তিনি অনুধাবন করতে পারেন নি।

২০১৭ সালে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী রাজনাথ সিং ভারত সরকারের পক্ষ থেকে এই বিষয়ের মান্যতা দিয়েছেন এবং আসাম সরকারের কাছে সেটা পাঠিয়ে নতুন নামের বানান কী হবে তা নিয়ে গ্যাজেট নোটিফিকেশন করার নির্দেশনা দিয়েছেন। যার পাঠ শিলাদিত্ত দেব নেন নি। তার আগে রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ আসাম সরকারের সহমত জানিয়ে ভারত সরকারকে চিঠি পাঠিয়েছেন।

সেই সময়কালে রাজ্য সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করার জন্য তৎকালীন মন্ত্রী গৌতম রায়ের ভূমিকা অসামান্য। সেইসঙ্গে প্রাক্তনমন্ত্রী দীনেশ প্রসাদ গোয়ালা,অজিত সিং,বিধায়ক বীথিকা দেব, আতাউর রহমান মাঝারভূঁইয়া, কুতুব আহমেদ মজুমদার, রুমি নাথ, রাহুল রায়, মিশন রঞ্জন দাস সবাই একযোগে এই বিষয় নিয়ে লড়াই করেছেন। সংসদে বারে বারে সোচ্চার হয়েছেন সন্তোষ মোহন দেব, রাধেশ্যাম বিশ্বাস, ললিত মোহন শুক্লবৈদ্যরা।

শিলাদিত্ত দেব এসব খবর রাখেন না বলেই প্রলাপ বকছেন। এই প্রলাপ বকার কারণেই হয়তো তার সমষ্টিতেও তার জায়গার অভাব। এখন ধামাচাপার রাজনীতির কোটায় একটি পদ অলংকৃত করছেন। শিলাদিত্য দেবের ধারাপাতের ব্যাখ্যা যদি সঠিক হয়, তাহলে তো বুঝতে হবে কবীন্দ্র পুরকায়স্থ, মিশন রঞ্জন দাস, সন্তোষ মোহন দেব, গৌতম রায়, সুস্মিতা দেব, রাজনাথ সিং বা আজকের সময়ে কমলাক্ষ দে পুরকায়স্থ, কেশব মোহন্ত, নন্দিতা গারলোসা, অতুল বরা, রাজদীপ গোয়ালারা সবাই কমিউনিস্ট! ২০১৬ তে ভাষা শহিদ স্টেশন, শিলচর এর দাবিতে আমাদের সাথে নিয়ে দিল্লি গিয়েছলেন শিলচরের মাননীয় সংসদ ও বিধায়ক ডা:রাজদীপ রায় এবং দীপায়ন চক্রবর্তী।

এরাও কমিউনিস্ট!! দেশের বিশিষ্ট স্বয়ংসেবক গৌরীশংকর চক্রবর্তী, এই দাবি সমর্থন করেছিলেন। শিলাদিত্যবাবুর বিচারে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সনোয়াল এবং বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী ড. হিমন্ত বিশ্বশর্মাও কি কমিউনিস্ট কারণ এরাও #ভাষাশহিদস্টেশন_শিলচর -এর সমর্থনে এগিয়ে এসেছিলেন, আমাদের সাথে সৌহার্দ্যপূর্ণ আলোচনায় সহমতের মাধ্যমে । গত তিন চার বছরের খবরের কাগজগুলোতেএকটু চোখ বোলালেই তার প্রচুর প্রমাণ পাবেন।

প্রলাপেরও একটা লিমিটেশন থাকা চাই স্যার। শিলাদিত্ত দেব মহোদয় জেনে রাখুন, ভাষা শহিদ স্টেশন, শিলচর হবে নিশ্চিত। কারণ এই দাবি উপত্যকার গণমানুষের এবং সবকটা রাজনৈতিক দলের সমর্থনে উর্বর একটি লড়াই। অনেকটাই সফল হওয়ার মুখে। এখানে কোন রাজনৈতিক দলের নেতৃত্ব নেই। সব দল আছেন। শুধু মানুষের নেতৃত্বে।

বরাকের ছেলে-মেয়েদের চাকরির কথা শুনিয়ে মায়াকান্না কেঁদেছেন। আমরা জানি আমরা কোন থালায় ভাত খাই। চাকরি নিয়ে আপনার কথার উত্তরটাই দেবনা। আর রইল,ভাষা শহিদ স্টেশন থেকে ট্রেন গুয়াহাটি গেলে কোন মিয়া দুঃখ পাবেন বলে আপনার অমূলক চিন্তা।কেউই দু:খ পাবে না। আমরা মনে করি এতে বরাক-ব্রহ্মপুত্রের সমন্বয়ের সেতু দৃঢ় হবে।

উনিশের ইতিহাস আমাদের লড়াইর সঙ্গে সঙ্গে সম্প্রীতির শিক্ষাও দিয়েছে। মাতৃভাষার অস্তিত্ব রক্ষার দাবিতে এই উপত্যকায় মাটি ১৫ জন শহিদের রক্তে রঞ্জিত হয়েছে। আমাদের ভাষা শেখাতে আসবেন না দয়া করে। একান্ত অনুরোধ, পরেরবার ইতিহাসটা জেনে কথা বলবেন। নতুবা ভবিষ্যতে বরাক ব্রহ্মপুত্রের দূরত্ব বৃদ্ধিতে আপনিই থাকবেন অন্যতম দায়ী।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *