মনিপুরের ঘটনা প্রতিবাদ জানানো উচিত সবারই এক্ষেত্রে সিলেক্টিভ হলে হবে না

2 - মিনিট |

মনিপুরের যে ঘটনা ঘটেছে সেটার জন্য অন্ততপক্ষে আমি কোন সরকারকে দায়ী করতে চাই না।

চয়ন ভট্টাচার্য

শিলচর : মনিপুরের যে ঘটনা ঘটেছে সেটা অত্যন্ত দুঃখজনক আমাদের লজ্জা। প্রতিবাদ হচ্ছে সারা দেশ জুড়ে। কিন্তু যেটা প্রতিবারই হয়, হয় পাল্টা প্রশ্ন উঠছে পশ্চিমবঙ্গের মালদার মহিলাকে মারপিট করা বা রাজস্থানের ধর্ষণের ঘটনার কেন নিন্দা করা হলো না। অর্থাৎ ভাবখানা এই, এই সব ঘটনার নিন্দা যদি না করা হয় তাহলে মনিপুরের ঘটনার কেন নিন্দা করা হবে।

অর্থাৎ কোন একটা ধর্ষণের ঘটনা ,মনে করুন ঘটলো। আপনি গেলেন প্রতিবাদ জানাতে। সঙ্গে সঙ্গে আপনার সামনে কিছু লোক এসে বলল, দাঁড়ান দাঁড়ান ,আপনি প্রতিবাদ জানাবেন ভালো কথা। আগে কোন কোন ধর্ষণের ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছেন আগে বলুন। যদি ওইসব ধর্ষনের প্রতিবাদ না জানিয়ে থাকেন তাহলে এখানেও জানাতে পারবেন না।

অর্থাৎ আমি যদি ধর্ষণের প্রতিবাদ জানাই তাহলে আমাকে একটা তালিকা প্রস্তুত করে রাখতে হবে অতীতে ধর্ষণ গুলো হয়েছিল সেগুলোর আমি প্রতিবাদ জানিয়েছি কিনা। যদি আমার কাছে কোন তালিকা না থাকে বা অতীতে আমি কোন ধর্ষণের প্রতিবাদ জানাইনি। তাহলে এই ধর্ষণের প্রতিবাদ আমি জানাতে পারবো না। একটা সভ্য সমাজ কি এই যুক্তি মেনে নেবে!

বা এমন কি কথা আছে প্রতিটি ধর্ষণের প্রতিবাদ একজন ব্যক্তিকে প্রথমে জানাতে হবে। তারপরে সে অন্য ধর্ষণের প্রতিবাদ জানাতে পারবে। কিন্তু এ ধরনের একটা যুক্তি প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা চলছে। মনিপুরের যে ঘটনা ঘটেছে সেটার জন্য অন্ততপক্ষে আমি কোন সরকারকে দায়ী করতে চাই না। কোন সরকারি অফিসার তো বলে দেয়নি এভাবে ধর্ষণ কর।

এটা একটা জঘন্য অমানবিক পাশবিক অপরাধ। এর নিন্দা আমরা এক বাক্যে করব। কিন্তু যেভাবে এই ঘটনার সঙ্গে রাজস্থান পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে দেওয়া হচ্ছে তাতে মনে হচ্ছে সবগুলো ঘটনার প্রতিবাদ আমি করব তারপর এটার প্রতিবাদ করব। যেহেতু এইসব ঘটনার প্রতিবাদ মিডিয়া করেনি অতএব মিডিয়া মনিপুরের ঘটনা নিয়েও কিছু বলার অধিকার নেই। এরকম একটা ধারণা তৈরি করার চেষ্টা চলছে। রাজনৈতিক দলগুলো তাদের মত করে এটাকে দেখ বে।

কিন্তু সবাই যে রাজনৈতিক চশমা দিয়ে সবকিছু দেখেন এমন নয়। এই বিভৎস ভিডিওটি আমার কাছে আছে কিন্তু আমি দেখিনি ভয়ে। বা লজ্জায়। মানবতার এ ধরনের লাঞ্ছনা আমি দেখিনি। আমি তো বিচারক নই যে এর বিভৎসতার সীমারেখা মালদার ঘটনার চেয়ে বেশি কিনা মেপে দেখার। কিন্তু এই ঘটনা আমার বিবেক কে নাড়িয়ে দিয়েছে। তো আমি কিছু বলবো না? কিন্তু এর প্রতিবাদ জানাতে হলে আমাকে দেখতে হবে এ ধরনের ঘটনার আমি আগে প্রতিবাদ জানিয়েছিলাম কিনা। । যদি জানিয়ে থাকি তাহলে এবার জানাবো আর না জানালে ঘরে বসে থাকব। এটাই কি নিয়ম!

কিন্তু আসলে উচিত ছিল এই ঘটনার কঠোর নিন্দা জানানোর। কিন্তু অনেকেই দেখা যাচ্ছে এখন অন্য ঘটনার অবতারণা করে এই ঘটনাকে লঘু করে দেখাতে চাইছেন। এখন থেকে প্রতিবাদও সিলেক্টিভ হতে হবে। এটাই কি এরা বুঝাতে চাইছেন।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *