প্রক্রিয়া সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত অ্যাসেসমেন্ট করা হবে না
শিলচর পুরসভার নতুন কর পরিকাঠামো প্রক্রিয়া বাতিল করল সরকার।নগর উন্নয়ন মন্ত্রকের কমিশনার সেক্রেটারি স্বাক্ষরিত এক নির্দেশে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, যেহেতু শিলচরে পুর কর্পোরেশন গঠনের প্রক্রিয়া চলছে, তাই সম্পত্তি কর পুনর্মুল্যায়নের যে প্রক্রিয়া চলছে সেটা বাতিল করা হল। প্রক্রিয়া সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত অ্যাসেসমেন্ট করা হবে না। বহু প্রত্যাশিত এই আদেশের ফলে পুরসভার সেলফ এসেসমেন্ট নিয়ে যে একটা জটিলতার দেখা দিয়েছে সেটার অবসান ঘটল।
কারণ খুব স্বাভাবিক নিয়মই যেখানে পুর নিগম গঠনের প্রক্রিয়া চলছে। সেখানে পুরসভার নতুন কর নির্ধারণের কোন প্রয়োজন আছে কি? আর তারপরেই এ নির্দেশে পৌঁছেছে।
কারণ বিভিন্ন মহল থেকে এই প্রশ্ন উঠতে শুরু করে তাহলে কি শিলচরে পুর নিগম হচ্ছে না।তবে এই সেল্ফ অ্যাসেসমেন্ট সার্কুলার আইনি কিনা সে বিষয়ে কোন মন্তব্য করা হয়নি। বাতিলের কারন হিসেবে দেখানো হয়েছে পুর নিগম গঠন প্রক্রিয়াকে।
সরকারি চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে সীমানা নির্ধারকসহ নিগমের অনেক কাজ চলছে। এই অবস্থায় পুরসভার সেল্ফ অ্যাসেসমেন্ট প্রক্রিয়া বাতিল করা হল।
আসলে চূড়ান্ত সময়সীমা ১০ সেপ্টেম্বরের ভেতরে মাত্র ১১০০ ফর্ম জমা পড়ায় কিছুটা ব্যাক ফুটে যেতে বাধ্য হয় সরকার। জেলা প্রশাসন যে একটা যুদ্ধং দেহি মনোভাব নিয়েছিল, তার পরেও শহরের মানুষ যে এই নির্দেশকে কোন অবস্থায় মানতে চাইছেন না এটা স্পষ্ট হয়ে যায়। কারণ মানুষ ফর্ম জমা দিতে যাননি। আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকির মুখেও সাধারণ মানুষ এই নির্দেশ পালন করতে এগিয়ে আসেননি। এছাড়া শহরে ক্রমেই একটা প্রশাসন বিরোধী জনমত তৈরি হচ্ছিল। সম্ভবত সেটা আঁচ করে সরকার এই পদক্ষেপ থেকে সরে দাঁড়ানোর কথা ঘোষণা করে।
শিলচর পুরসভা যখন পুর নিগমের উন্নীত হবে তখন সবকিছুই নতুন করে করতে হবে। এখন যে প্রক্রিয়া চলছে সেটা তখন কোন কাজে আসবে না। যখন কাজেই আসবে না তাহলে দরকার কি এই প্রক্রিয়ার। সেটা বিবেচনা করে সরকার এই পদক্ষেপ নিয়েছে। আসলে সরকার যে নির্দেশ জারি করেছিল সেটা তো শুধু শিলচর নয় অসমের সব কটি পুরসভার জন্যই জারি করেছিল।
কিন্তু শিলচর পুরসভার এগজিকিউটিভ অফিসার এসব বিষয় বিবেচনা না করেই একের পর এক নির্দেশ জারি করতে শুরু করেন। শুধু বলছেন সরকারের আদেশ। যেখানে শিলচরের সবাই জানেন যে পুর নিগম গঠনের একটা প্রক্রিয়া চলছে। আর এটা সবচাইতে বেশি জানেন জেলাশাসক।
কারণ পুর নিগম গঠনের প্রক্রিয়াটা তার তত্ত্বাবধানে হচ্ছে। কিন্তু তিনিও “সরকারের আদেশ” এই একটি আপ্ত বাক্য উচ্চারণ করে কাটিয়ে দিলেন কয়েকদিন। তার একটাই জবাব থাকে”ইয়ে গভমেন্ট অর্ডার হ্যায়”। যেকোনো কেউ এই বিষয় নিয়ে গেলেই তার একটাই জবাব সরকারি আদেশ। যাই হোক বিষয়টা শেষ পর্যন্ত বুঝতে পারলেন কমিশনার সেক্রেটারি। তবে এত সহজে যে এই আদেশ জারি হয়েছে এমনটা নয়।
শিলচর শহরের মানুষের প্রতিবাদী মানসিকতা দেখে এই নির্দেশ জারি হল। আগামীকাল মঙ্গলবার সকাল ১১ টায় পুরসভা ভবনের সামনে একটি ধারণা কর্মসূচির ডাক দেওয়া হয়েছিল। এই কর্মসূচির মাধ্যমে প্রক্রিয়া বন্ধ রাখার দাবি জানানো হবে। আর এই কর্মসূচির ঠিক আগের দিন সরকার থেকে এই নির্দেশ জারি করা হয়েছে। এতে কার্যত আন্দোলনকারীদেরই জয় হল।একই সঙ্গে এই আদেশকে ঘিরে কাছাড়ে আমলাতন্ত্রের যে একটা চিত্র সামনে আসলো সেটা কিন্তু দুঃখজন ক। প্রশাসন যদি জনগণকে শত্রু ভাবে তাহলে ভালো কিছু করা সম্ভব হবে না এখানে। প্রতিটা বিষয়ে যদি আন্দোলন করতে হয় তাহলে সেটা সুন্দর দেখায় না।তবে এই আন্দোলনের মাধ্যমে শেষ পর্যন্ত মানুষের জয় হল।