অন্য রাজ্যে সিএএর আওতায় নাগরিকত্ব দেওয়ার কাজ চলছে, ব্যতিক্রম অসম পশ্চিমবঙ্গ
সুপ্রিম কোর্টে সিএএ বাতিল করা নিয়ে যখন শুনানি হচ্ছে তখনই এই ইস্যুতে রাজনৈতিক পরিস্থিতি সরগরম। নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন নিয়ে আবার সোচ্চার হলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেছেন তিনি থাকতে পশ্চিমবঙ্গে এই আইন কার্যকর হতে দেবেন না। অথচ পশ্চিমবঙ্গে আইন কার্যকর করার লক্ষ্য নিয়েই বিজেপি সরকার এই আইনে সংসদে পাস করেছিল।
সিএএ লাগু করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি পশ্চিমবঙ্গের কয়েকটি এলাকায় খুব ভালো ফলাফল করেছিল। কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেস সিএএ নিয়ে এমনভাবে প্রচার শুরু করল যে ,অনেক মানুষ পরবর্তীতে ভীত হয়ে পড়েন। আসামে এনআরসি ও কা নিয়ে যে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল সেটা দেখে পশ্চিমবঙ্গের মানুষ ভেবেছেন সিএএ যে চালু হলে তারা সমস্যায় পড়বেন।
আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রথম থেকে এন আর সি ও নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন নিয়ে সোচ্চার ছিলেন। তিনি তার প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেন ,তিনি থাকতে এই আইন কোনদিন হতে দেবেন না। পশ্চিমবঙ্গে মতুয়া সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে দীর্ঘদিন থেকে সি এ চালুর দাবি উঠছে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অর্জুন রাম মেঘাওয়াল বলেছেন, প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তবে কিছুটা দেরি হবে। এদিকে প্রায় ২০০ সংগঠন এই এই আইন বাতিলের দাবিতে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছে। এই মামলার সুপ্রিম কোর্টে শুনানি চলছে।
ঠিক এরকম একটা সময় মমতা ব্যানার্জির মন্তব্য তাৎপর্যপূর্ণ। গুয়াহাটির মিডিয়া মমতার এই মন্তব্য ফলাও করে প্রচার করছে। আসাম ছাড়া কয়েকটি রাজ্যে নাগরিকত্ব আইনের মাধ্যমে নাগরিকত্ব দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর মমতা ব্যানার্জি এই মন্তব্য করেছে। তারা রাজ্যে তিনি কোনভাবেই এই আইন কার্যকর করতে দেবেন না।
একমাত্র আসাম ও পশ্চিমবঙ্গ ছাড়া আর সব রাজ্যে শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দেওয়ার কাজ চলছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক জেলাশাসকদের বিশেষ ক্ষমতা দিয়ে এই আইন কার্যকর করতে বলেছে। ব্যতিক্রম শুধু আসাম ও পশ্চিমবঙ্গ। অথচ এই আইনের সঙ্গে অসমের লক্ষ লক্ষ শরণার্থী ভবিষ্যৎ জড়িত রয়েছে।
কিন্তু বাঙালির দল বলে পরিচিত তৃণমূল নেত্রী যেভাবে নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতা করছেন তাতে সমস্যা তো অবশ্যই তৈরি হবে। এ প্রসঙ্গে আরেকটি প্রশ্ন উঠে আসছে ।অন্য রাজ্যগুলিতে যখন এই আইন প্রয়োগ হচ্ছে তখন আসামে কেন হবে না? যদিও নাগরিকত্বের আইন সংসদে গৃহীত হওয়ার প্রায় তিন বছর হয়ে যাচ্ছে ,কিন্তু সরকার এই আইনের কোন রুলস তৈরি করেনি।
অসমে সিএএ বিরোধী বিভিন্ন আন্দোলনকারী সংগঠনের চাপে হয়তো কেন্দ্র সরকার কোন ঝুকি নিতে চাইছে না। ঠিক এরকম একটা পরিস্থিতিতে অদূর ভবিষ্যতে অসমে নাগরিকত্ব আইন চালু হওয়ার কোন সম্ভাবনা রইল না। যদিও বিভিন্ন রাজ্যে এই আইন চালু করে প্রধানমন্ত্রী সারা ভারতের নাগরিকত্ব আইন চালুর ঈঙ্গিত দিয়েছেন।