এনআইটির একাংশ ছাত্রের শিলচর বিদ্বেষী মানসিকতা বদলানো দরকার
কেন বারবার কেন শিলচরের বরাক উপত্যকার ছাত্ররাই নির্যাতিত হবে এন আই টি তে। কয়েকদিন পরপর এ ধরনের ঘটনা ঘটছে এটা কিসের ইঙ্গিত।।শিলচর এনআইটিতে ছাত্র নিগ্রহের ঘটনা নতুন কিছু নয়। বারবার এভাবে স্থানীয় ছাত্রদের উপর কেন অত্যাচার হবে? এ প্রশ্নটা আজ করছেন সবাই।এন আই টির মত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যারা পড়তে আসেন তারা হলেন সমাজের “ক্রিম”। মেধাবী ছাত্ররাই শুধুমাত্র এখানে সুযোগ পায় ।তাই ধরে নেওয়া যায় এরা একটা সুস্থ সংস্কৃতির প্রতিনিধি। কিন্তু গত ক’বছরে কয়েকটি ঘটনায় এদের একাংশের যে পরিচয় বেরিয়ে এসেছে তাতে এই কথাটাকে মিথ্যা বলেই মনে হতে বাধ্য। কয়েক মাস আগে শিলচরের একটি ছেলেকে আট জন মিলে মারধর করেছিল। তাকে মারধর করার কারণটাই হলো সে শিলচরের।
গত শুক্রবার যে ঘটনাটা ঘটলো সেটাও একজনকে ১৮ জন মিলে মারধর করেছে । তার সঙ্গে আশ্রাব্য গালিগালাজ। শিলচর জায়গাটা নিয়ে ও মাতৃভাষা সম্পর্কে কুরুচিকর মন্তব্য। এসব কথা বেরিয়েছিল এইসব মেধাবী ক্রিমদের মুখ থেকে। বিভিন্ন সংগঠন এই ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছে। অখিল ভারত হিন্দু মহাসভার উত্তর-পূর্ব সভাপতি বিশ্বদীপ গুপ্ত এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন। এনিয়ে কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য তিনি এনআইটি কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
একই ভাবে আকসাও এই ঘটনার নিন্দা জানিয়েছে। শহরের বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংগঠন সোচ্চার হয়েছেন। এই ঘটনা যদি গুয়াহাটিতে হতো তাহলে আগুন জ্বলে যেত। কিন্তু শিলচরের স্থানীয় ছেলেকে মারধর করার পরও এখন পর্যন্ত এইসব ছাত্রের বিরুদ্ধে কোন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। বর্তমান ডিরেক্টর রজত গুপ্ত যেভাবে ঘটনাটাকে হালকাভাবে নিচ্ছেন তাতে পরিস্থিতি আরো জটিল হবে। আসলে এনআইটিতে এ ধরনের হিংসা বৃদ্ধির আরেকটা কারণ হলো ,যারা হিংসা করে তাদের বিরুদ্ধে তেমন কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। যেহেতু অপরাধ করে কোন শাস্তি পাওয়া যায় না তাই বারবার একই ঘটনায় ঘটতে থাকে।
বরাক উপত্যকাকে কিভাবে নিচু দৃষ্টিতে দেখে এসব ছাত্ররা তার প্রমাণ হলো এই মারপিটের ঘটনা। তর্কের খাতিরে যদি ধরেও নেওয়া যায় শিলচরের ছাত্রটি দোষী, তাহলেও কি তাকে এভাবে মারপিট করা যায়!মেধাবী ছাত্রদের এই নিকৃষ্ট মানসিকতা কেন। এই সংস্কৃতি নিয়েই কি তারা এনআইটিতে এসেছেন। প্রশ্ন উঠছে। যে ছেলেটির উপর আক্রমণ হয়েছিল সেই ছেলেটি মারাই যেত যদি শিলচরের আরেকটি ছেলে তাকে না বাঁচাত। অধ্যাপকদের সামনে এসে মারধর করেছে এসব ছাত্ররা। এসব ঘটনা শুনে স্তম্ভিত হতে হয়। শিলচরের শান্তি প্রিয় মানুষ এসব ঘটনা সহ্য করছে ন। শিলচরের মাটিতে এনআইটি, অথচ শিলচরের ছেলেরা মার খাচ্ছে এটা কেমন কথা।
তারপরও মারার সময় বারবার তার জায়গার নাম তার মাতৃভাষা নিয়ে কটুক্তি করা হয়েছে। হিংসা ও জাতিবিদ্বেষের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। এনআইটির মতো একটি সর্বভারতীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংস্কৃতির ক্ষেত্রে যা একেবারেই বেমানান। এনআইটিতে এর আগেও অনেক ধরনের ঘটনা ঘটেছে এবং নেশা দ্রব্যের প্রচলন এনআইটিতে রয়েছে এটা বহুবার প্রকাশ্যে এসেছে। এনআইটি প্রশাসন এইসব বিষয়ে কড়া মনোভাব না দেখানোয় আজকে এইসব ঘটনা ঘটেছে। শিলচর এন আই টির বর্তমান ডিরেক্টর এর আগে আইজল এন আই টি তে ছিলেন।
সেখানেও ছাত্ররা ভাঙচুর চালিয়েছিল । তাই তিনি এই ঘটনাকে কতটুকু নিয়ন্ত্রণ করবেন নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। আক্রমণকারী ছাত্রদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হোক। একটি জুনিয়র ছাত্রের উপর এভাবে সিনিয়রদের আক্রমণ অত্যন্ত অমানবিক। বরাকের ছাত্র-ছাত্রীরা একটা সময় বাইরে গিয়ে আক্রান্ত হত। এখন নিজেদের এলাকায় আক্রান্ত। তাই শিলচরের মানুষ চাইছেন এই ঘটনার জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হোক।