সারাদেশে বিরোধী রাজনীতি যেভাবে মোড় নিচ্ছে তাতে একটা স্পষ্ট এবারে একটা জবরদস্ত বিরোধী ঐক্য হবে
শিলচর: শিলচরে নির্বাচন লড়বেন। তবে শুধুমাত্র তৃণমূল প্রার্থী হিসেবে নয়। লোকসভায় শিলচর আসনে মহাজোটের প্রার্থী হতে পারেন সুস্মিতা দেব। আর এমন একটা ইঙ্গিত দিলেন সুস্মিতা দেব নিজে। কাছাড় ক্লাবের সাংবাদিক সম্মেলনে এ ধরনের একটা ইঙ্গিত দিলেন।তবে সেই মহাজোটটা কি সেটা এখনো ঠিক হয়নি। কিন্তু সারাদেশে বিরোধী রাজনীতি যেভাবে মোড় নিচ্ছে তাতে একটা স্পষ্ট এবারে একটা জবরদস্ত বিরোধী ঐক্য হবে। এই ঐক্য ২০১৯ সালের মত নয়। ২০১৯ সালের যে বিরোধী ঐক্য হয়েছিল সেটা জাতীয় ভিত্তিতে।
বিভিন্ন রাজ্যে কোন ধরনের জোট হয়নি। যেমন পশ্চিমবঙ্গে বিরোধী ভোট তিন ভাগ হয়েছে। উত্তরপ্রদেশে তিনভাগ ,বিহার মহারাষ্ট্র সব জায়গায় বিরোধী ভোট ভাগ হয়েছে। যার ফলে বিজেপির জয়টা সহজ হয়েছে। ৩৭ শতাংশ ভোট পেয়ে বিজেপি ৩০৫ টি আসন পেয়েছি ল। তাই এবার বিরোধীরা একের বিরুদ্ধে এক প্রার্থী দেবার একটা নীতি নিচ্ছে। সেই হিসেবে শিলচর আসনে হয়তো বিরোধীদের একমাত্র প্রার্থী হবেন সুস্মিতা দেব। এই আসনটা কংগ্রেস তৃণমূলকে ছেড়ে দেবে। এমন একটা সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
ত্রিপুরা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের বিশ্রী পরাজয়ের পর অনেকেই ভাবছেন সুস্মিতা বিজেপিতে যোগ দিতে পারেন। যদিও সুস্মিতা এ ধরনের কোন সম্ভাবনার কথা বলেননি। কিন্তু সুস্মিতা বিজেপিতে যেতে পারেন এমন একটা চর্চা কিন্তু রাজনৈতিক মহলে চলছে কয়েক মাস থেকে। বিজেপির একটি প্রভাবশালী বড় অংশ চাইছে তাকে দলে নিতে। যদি কোন কারণে তার বিজেপিতে যাওয়া সম্ভব না হয় তাহলে তিনি শিলচরে তৃণমূল প্রার্থী হবেন। তবে এটা নিশ্চিত ভাবে বলার সময় এখনো আসেনি।
সুস্মিতার রাজ্যসভার মেয়াদ ফুরোচ্ছে আগস্টে। তৃণমূল কংগ্রেস যদি তাকে আবার মনোনয়ন দেয় রাজ্যসভার জন্য তাহলে হয়তো তিনি আর লোকসভার দাঁড়াবেন না। আর দাঁড়াবেনই বা কেন। একবার সংসদ হয়ে গেলে আর কি দরকার সাংসদ হওয়ার। যদি তিনি রাজ্যসভার মনোনয়ন না পান তাহলে তাকে লোকসভায় লড়তেই হবে। আর সেক্ষেত্রে তৃণমূল প্রার্থী হয়েই তিনি লড়বেন। কংগ্রেসের একটি মহল তাকে দলে ফেরাতে চাইছে। জেলা কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি অরুন দত্ত মজুমদার সন্তোষ মোহন দেবের মূর্তি স্থাপনের সভায় তাকে কংগ্রেসে ফিরে আসার আহ্বান জানিয়ে ছিলেন।
জেলা কংগ্রেস সভাপতি অভিজিৎ পালও চাইছেন তিনি দলে আসুন। কিন্তু কংগ্রেসে ফেরার আগে দশবার ভাবছেন সুস্মিতা। কারণ কংগ্রেসে অনেক সমস্যা রয়েছে। যারা একসময় তাকে সরানোর জন্য এআইসিসি তে স্মারকপত্র দিয়েছিল তাদের কথায় তিনি এক ঝটকায় কংগ্রেসে এসে যাবেন এটা ভাবা যায় না।
বরং অনেক ভালো যদি সর্বসম্মত বিরোধী প্রার্থী হিসেবে তিনি শিলচরে লড়তে পারেন। শিলচরে লড়াই করার মত প্রভাবশালী প্রার্থী এই মুহূর্তে কংগ্রেসের হাতে নেই। রুমি নাথ মনে হয় না কংগ্রেসের দিকে খুব একটা ঝুকবেন। তাই কংগ্রেস হয়তো এই আসনে তৃণমূলকে সমর্থন করতে পারে এমন একটা সম্ভাবনা রয়েছে। কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী সর্বভারতীয় স্তরে কিছুটা স্বার্থ ত্যাগ করে যেভাবে জোটের পরিকল্পনা নিচ্ছেন তাতে এটা অসম্ভব নয়। ।
নয়। আর কেমন সব প্রার্থীরা জিতেছেন যাদের জেতার কথা নয়। তাই অনেক জেতা বা হারা ,দলের রাজ্য নেতাদের উপরও নির্ভরশীল। এসব অভ্যন্তরীণ রাজনীতি বিজেপির মধ্যে রয়েছে। শুধু বিজেপি নয় সব দলেই আছে। অসমে বিজেপিকে এইভাবে ক্ষমতায় বসানোর কৃতিত্ব অবশ্যই মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মার। তিনি যেভাবে রাজনীতিটা বোঝেন সেটা অন্য কোন নেতাই বোঝেন না।
তাই তিনি কি চাইছেন সেটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রার্থী বাছাই শিলচর আসনে ঠিকমতো না হলে বিজেপিকেও এখানে পরীক্ষার মুখোমুখি হতে হবে। এত সমস্ত পরেও বলে দেওয়া যায় সম্ভাব্য মহাজোটের প্রার্থী হলে সুস্মিতা দেব একটা লড়াই দিতে পারবেন। কিন্তু ত্রিপুরা নির্বাচনে পর থেকে সুস্মিতাকে নিয়ে যেভাবে জল্পনা চলছে সেটা থামতে চাইছে না। সুস্মিতাও নিজেকে অনেকটা রহস্যাবৃত করে রেখেছেন। ভবিষ্যৎ রাজনীতি নিয়ে কোন মুখ খুলতে চাইছেন না। তৃণমূল থেকে শিলচরে লড়বেন এটা তো বলবেনই। তিনি যখন তৃণমূলে আছেন তখন তো একথা বলতেই হবে। কিন্তু আসলে তিনি কি ভাবছেন সেটাই হলো মোদ্দা কথা। তবে মহাজোটের প্রার্থী হলে তিনি রাজি হবেন এটা আকারে ইঙ্গিতে বুঝিয়ে দিয়েছেন।