ডিসেম্বরেই কাজ শেষ করতে চাইছে নির্বাচন কমিশন
শুভ্রকান্তি ভট্টাচার্য : আগামী লোকসভা নির্বাচনের আগে কি ডিলিমিটেশন হয়ে যাবে? এখন রাজনৈতিক ময়দানে এটাই সবচাইতে বড় প্রশ্ন। ২৬ মার্চ নির্বাচন কমিশনের বড় দল অসমে আসছে। এরা ডিলিমিটেশন প্রক্রিয়া খতিয়ে দেখবেন। অর্থাৎ তারা যখন মার্চ মাসে আসছেন তখন ধরে নিতে হবে যে সামনে তাদের লক্ষ্য ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচন। এই নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচন কমিশনের এই দলটি এখানে আসছে। আর এই খবর পাওয়ার পরে ক্রমশ উত্তপ্ত হচ্ছে অসমের রাজনীতি।
কমাস চুপচাপ থাকার পর এখন আবার সংবাদ শিরোনাম এসে গেছে ডিলিমিটেশন। কারণ এই কমিটির কাছে সবাই দাবি এবং আপত্তি জানাতে পারবেন। ইতিমধ্যে একটি খসড়া তালিকা প্রকাশিত হয়েছে। যদিও এটা সরকারিভাবে প্রকাশিত হয়নি।তাই কিসের উপর দাবি এবং আপত্তি নেওয়া হবে সেটা এখনো অস্পষ্ট। তবে ডিলিমিটেশনের ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন সরাসরি হস্তক্ষেপ করার কথা নয়। ডি লিমিটেশন কমিশনের সদস্যদেরও এই দলে থাকার কথা।
ইতিমধ্যে কমিশনের এই দল আসার খবর প্রকাশিত হওয়ার পর বিভিন্ন প্রতিক্রিয়া আসতে শুরু করেছে। অনেকে দাবি ও আপত্তি জানাবার জন্য গুয়াহাটি ছুটে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। যদি ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগেই এটা হয়ে যায় তাহলে কিন্তু আগামী নির্বাচনে অনেক প্রভাব পড়বে। নির্বাচন কমিশন বা ডিলিমিটেশন কমিশন কিন্তু এখনো সরকারিভাবে ঘোষণা করেনি যে লোকসভা নির্বাচনের আগে এই কাজ শেষ হবে।এখন পর্যন্ত ঘোষণা করা হয়েছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল সংগঠন ব্যক্তির বক্তব্য শোনা হবে।
অবশ্যই এদের বক্তব্য খুব একটা কমিশন গ্রহণ করবে বা ,করতে বাধ্য এমন নয়। কমিশন যা চাইবে সেটা অবশ্যই তারা করতে পারবে। আগামী ২৬ থেকে ২৭ মার্চ এই দুই দিন হোটেল রেডিসন ব্লু তে বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে কথা বলবে নির্বাচন কমিশন । দেশের মুখ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমার নিজে কথা বলবেন। ২৮ তারিখ মুখ্য নির্বাচন কমিশনার ও অন্য দুই নির্বাচন কমিশনার সাংবাদিক সম্মেলন করবেন। ২৭ তারিখ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার। তাই এই বৈঠক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
নির্বাচন কমিশনের তৎপরতা দেখে এটাই প্রতীয়মান হয় যে ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচন নতুন যে এলাকা নির্ধারিত হবে তার উপর ভিত্তি করেই হবে। লোকসভা ও বিধানসভা সীমানা নির্ধারণ প্রক্রিয়া আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই শেষ হবে। তাই ধরে নেওয়া যায় ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচন নতুন ডি লিমিটেশনের ভিত্তিতে হবে। স্বভাবতই এ নিয়ে শাসক ও বিরোধী দলের মধ্যে এখন তৎপরতা তুঙ্গে। ইতিমধ্যে বিরোধীরা ডিলিমিটেশন প্রক্রিয়া নিয়ে আপত্তি তুলেছে। কংগ্রেস বলেছে ডিলিমিটেশন হোক আমাদের আপত্তি নেই। কিন্তু সেটা নিয়ম মেনে করতে হবে।
ডিলিমিটেশন যেসব নির্দেশিকা রয়েছে তাতে কয়েকটি বিষয়কে গুরুত্ব দিতে হয়। যেমন জনগণের সুবিধা, দূরত্ব এসব। কিন্তু প্রস্তাবিত খসড়ায় দেখা গেছে এইসব বিষয়কে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। এছাড়া লোকসভার আসন সংরক্ষণের ক্ষেত্রেও এমন কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে যাতে সমস্যা তৈরি হবে।
এই সমস্ত বিষয় বিবেচনা করে নির্বাচন কমিশনের এই দলটা যে তিনদিন কাজ করবে সেটা গুরুত্বপূর্ণ। মাঝে কয়েক মাস চুপচাপ থাকার পর এখন বিষয়টা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়ে গেল। খসড়া তালিকা নিয়ে অনেক চুলচেরা বিশ্লেষণ হয়েছে। এবার নির্বাচন কমিশন এ বিষয়ে একটি সিদ্ধান্ত নেয় সেটাই দেখার বিষয় । তবে লোকসভা নির্বাচনের আগেই যদি এই প্রক্রিয়া শেষ হয়ে যায় তাহলে কিন্তু অসমে রাজনীতিতে অনেক পরিবর্তন ঘটবে এটা নিশ্চিত।