কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে সর্বা এখনো অনেক গুরুত্বপূর্ণ
মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা ও প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সর্বানন্দ সানোয়ালের মধ্যে দূরত্বটা কি বাড়ছে। এটাই এখন গুয়াহাটি রাজনীতিতে চর্চার বিষয়। বিশেষ করে রাষ্ট্রপতির অনুষ্ঠানে সর্বানন্দ সানোয়ারের অনুপস্থিতি নিয়ে গতকাল তোলপাড় রাজধানীর রাজনৈতিক মহল। আসলে দুই নেতার যে দূরত্ব সেটা আজকে তৈরি হয়নি ।এটা শুরু থেকেই ছিল। হিমন্ত বিশ্ব শর্মা কিভাবে মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন সেটা রাজনৈতিক মহল জানেন।
কোন প্রতিবাদ ছাড়াই সর্বানন্দ সানোয়াল নিঃশব্দে সরে যান। বিজেপির যারা বিধায়ক জয়লাভ করেছেন তাদের মধ্যে বেশিরভাগই হিমন্ত বিশ্ব শর্মা অনুগামী। এদের মনোনয়ন দেওয়া থেকে শুরু করে নির্বাচনের প্রচার সবকিছু দায়িত্বে ছিলেন হিমন্ত। তাই স্বভাবত দলের হাই কমান্ড তাকেই বেশি গুরুত্ব দিয়েছে। কিন্তু সর্বানন্দ সনোওয়ালের সমর্থক অনেকে জয়ী হয়েছেন। তাই তাকে চট করে সরিয়ে দিতে চায়নি বিজেপি নেতৃত্ব। তাকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর দায়িত্ব দিয়েছে।
একজন স্বচ্ছ ভাব মূর্তির রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হিসাবে সানোয়ার সারা রাজ্যে স্বীকৃত। ধরনের এক ব্যক্তিত্ব কে বিজেপি কোন অবস্থায় কম গুরুত্ব দিতে রাজি নয়। তাই তাকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিত্বের সঙ্গে সঙ্গে অন্য গুরুদায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ।তাকে জাতীয় নির্বাচন কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। যে কমিটিতে নীতিন গারকারির মত হেভিওয়েট নেতাকে রাখা হয়নি সেখানে সর্বা কে রাখা হয়েছে। এটা হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বুঝতে পারছেন যে সর্বানন্দ মুখ্যমন্ত্রী হতে না পারলেও কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
তাই দুই নেতাকে ব্যালেন্স করেই চলছিল কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। এখনো চলছে। সম্প্রতি কিছু মন্তব্য করেছেন সর্বা সেটা যদিও হিমন্ত বিশ্ব শর্মার উদ্দেশ্যে নয়। কিন্তু তার এই বক্তব্যগুলোকে অনেকেই ধরে নিচ্ছেন এটা আসলে মুখ্যমন্ত্রীকে ইঙ্গিত করে। এছাড়া কিছু নেতাকে দলে ফিরিয়ে আনা হচ্ছে। এর মধ্যে সব সর্বা অনুগামী অনেক আছেন। কিন্তু এসবের পরও ইদানিং যেন দুই নেতার বিরোধ অত্যন্ত প্রকাশ্যে আসছে।
এর প্রভাব অসমের গেরুয়া রাজনীতিতে পড়তে বাধ্য। সবাইকে নিয়ে চলার একটা সহজাত ক্ষমতা ছিল সর্বানন্দের। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা তার প্রভাব কাটিয়ে সবাইকে একসঙ্গে নিয়ে চলেন। এখানে দুই নেতার পার্থক্য। কিন্তু এই মুহূর্তে বিজেপি দলের যদি বিধায়কের সংখ্যা বিচার করা যায় তাহলে মুখ্যমন্ত্রীর অনুগামী সংখ্যা অনেক বেশি। তবে দলীয় অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে সবসময় যে বিধায়কের সংখ্যা বেশি থাকলেই হাইকমান্ড মেনে নেবে এমন নয়।
কিন্তু এরপরও এখনই অসমের রাজনীতিতে কোন পট পরিবর্তন ঘটছে এটা বলার সময় আসেনি। যদিও বিভাজন রেখাটা অনেকটাই স্পষ্ট হয়ে আসছে সাধারণ মানুষের সামনে। তাই চর্চাটা চলছে। সঙ্গে চলছে নানামুখরোচক গল্প। যার প্রভাব অসমের গেরুয়া রাজনীতিতে পড়তে বাধ্য।