এবার কি খিলঞ্জিয়ার সংজ্ঞা আদালতে ঠিক হবে?
আগামী ২৬ আগস্ট গুয়াহাটি হাইকোর্টে কেন্দ্র সরকার ৬ নম্বর ধারা নিয়ে তাদের মতামত জানাবে।অসম চুক্তির ৬ নম্বর ধারা সম্পর্কে কেন্দ্রীয় সরকারের অবস্থান জানতে চেয়েছিল গুয়াহাটি হাইকোর্ট। এই ছ নম্বর সম্পর্কে আদালতের স্পষ্টিকরণ জানতে চাওয়াটা একটি তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা। ছ নম্বর ধারার সঙ্গে জড়িয়ে আছে অসমে বসবাসকারী বাঙালি হিন্দিভাসী সহ বিভিন্ন জাতি গোষ্ঠীর ভবিষ্যৎ। আসাম চুক্তির ছয় নম্বর ধারায় ভূমিপুত্র দের অধিকার রক্ষার কথা বলা হয়েছে। চাকুরীর ক্ষেত্রে ভূমিপুত্র দের ৮০ শতাংশ সংরক্ষণের সংস্থান রয়েছে। এই অধিকার কেন পাওয়া যাবে না এনিয়ে গুয়াহাটি হাইকোর্টে একটি জনস্বার্থমূলক মামলা দায়ের করেছেন দুর্লভ তালুকদার নামের জনৈক ব্যক্তি।
এই জনস্বার্থমূলক মামলার প্রথম শুনানিতে এসম্পর্কে কেন্দ্রীয় সরকারকে তাদের অবস্থান জানাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। আর এটা জানাতে হবে পরবর্তী শুনানির দিন অর্থাৎ ২৬ আগস্ট। ইতিমধ্যে আসাম চুক্তির ছ নম্বর ধারার রূপায়ণ সংক্রান্ত একটি কমিটি রাজ্য সরকার গঠন করেছিল। এই কমিটির তাদের একটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মন্ত্রকে র আছে। কোন কারণে এই কমিটির রিপোর্ট জনসমক্ষে প্রকাশ্যে আসে। দেখা যায় এই রিপোর্টে সরকারি ও বেসরকারি চাকরির ৮০ শতাংশ খিলঞ্জিয়া বা ভূমিপুত্রের জন্য সংরক্ষিত রাখার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এরপরই প্রতিবাদ জানান বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধি রা। এতে অন্য জনগোষ্ঠীর নাগরিকরা তাদের অধিকার হারাবেন এমন একটা সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। শুধু তাই নয় সম্পত্তি কেনাবেচার অধিকার শুধুমাত্র থাকবে খিলঞ্জিয়াদের এমন প্রস্তাবও রেখেছিল এই কমিটি। সরকার পরে আর এই প্রতিবেদন কার্যকর করেনি বা প্রকাশও করেনি।কারন এতে বিতর্ক তৈরি হওয়ার অবকাশ ছিল।এরকম একটা সময়ে দুর্লভ তালুকদার নামের এক ব্যক্তি গুয়াহাটি হাইকোর্টে একটি জনস্বার্থ বিষয়ক মামলা দায়ের করেন। এই আবেদনের মূল বক্তব্য হলো, যেহেতু আসাম চুক্তির ৬ নম্বর ধারায় খিলঞ্জিয়ার অধিকারের কথা উল্লেখ রয়েছে। রাজ্য সরকারের চাকরিতে আশি শতাংশ ও বেসরকারি চাকরিতে ৭০ শতাংশ সংরক্ষণ পেতে এই মামলা করা হয়।হাইকোর্ট মামলা শুনানির জন্য গ্রহণ করে। প্রথমে কেন্দ্রীয় সরকারকে তাদের অবস্থানের কথা জানাতে বলে আদালত।
এখন এই বিষয়টি আদালতের বিবেচনাধীন হয়ে গেল। এনআরসি থেকে শুরু করে ৬ নম্বর ধারা সবকিছুই এখন আদালতে চলে যাচ্ছে।এর ফলে প্রতিটি প্রক্রিয়া দীর্ঘায়িত হচ্ছে। ছ নম্বর ধারা প্রয়োগ নিয়ে গত ৩০ বছরেও কোন ঐক্যমতে পৌঁছাতে পারেনি সরকার ও বিভিন্ন সংগঠন। এখন পর্যন্ত খিলঞ্জিয়া বা ভূমিপুত্রের কোন সংজ্ঞা নির্ধারণ হয়নি। এ নিয়ে অনেক বিতর্ক হয়েছে কিন্তু সংজ্ঞা নিয়ে কোন ঐক্যমত প্রতিষ্ঠিত হয়নি। এবার বিষয়টি আদালতে গেছে। আদালতের কাছে উভয় পক্ষকে অবশ্যই ভূমিপুত্রের সংজ্ঞা কি হবে সেটা জানাতে হবে।
আর এই কাজটা অত্যন্ত দূরূহ। এটা নিঃসন্দেহে বলে দেওয়া যায় সরকার এর জন্য প্রচুর সময় নেবে। ফলে অন্য মামলার মত এই মামলাও
প্রচুর সময় নেবে। শেষ পর্যন্ত কি আদালতকেই খিলঞ্জিয়ার আর সংজ্ঞা নির্ধারণ করতে হয়
সেটাই এখন দেখার বিষয়।
Advertisements | 5E For Success