হিন্দু উদ্বাস্তুদের ভাগ্য জড়িত এই মামলায়
শিলচর : বিদেশি নাগরিক বাছাইয়ে ভিত্তি বর্ষ নিয়ে মামলা এবার নতুন মোড় নিল।আগামী ২০ সেপ্টেম্বর অসমে নাগরিকত্বের ভিত্তিবর্ষ নিয়ে যে মামলা সেটার শুনানি প্রক্রিয়া শুরু হবে। আজ সুপ্রিম কোর্টের পক্ষ থেকে একটি নোটিশ জারি করে এই আদেশ দেওয়া হয়েছে । এই মামলার জন্য ডিভিশনাল বেঞ্চে আছেন প্রধান বিচারপতি বিএস চন্দচুড়, বিচারপতি এএস বপান্না, বিচারপতি এম এম সুন্দরেশ, বিচারপতি জেবি পারডিওয়াল।
সামাজিক সংগঠন পাবলিক ওয়ার্কসের দায়ের করা এই মামলা নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট যে শুনানি গ্রহণের আদেশ দিয়েছে সেটা নানা কারণে তাৎপর্যপূর্ণ। ১৯৫১ সাল না ১৯৭১ সাল ভিত্তি বর্ষ হবে এটা এটা নিয়ে আদালত বিভিন্ন পক্ষের বক্তব্য গ্রহণ করবে। পিপল ওয়ার্কস ১৯৫১ সালকে ভিত্তি বর্ষ চেয়েছে। যেখানে কেন্দ্রীয় সরকার ১৯৭১ সালকে ভিত্তিবর্ষ হিসেবে মেনে নিয়েছে কারণ ১৯৭১ সালকে ভিত্তি করে আসাম চুক্তি হয়েছিল। রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকার ৭১ সালকে ভিত্তিবর্ষ হিসেবে মেনে নিয়েছে।
যদিও মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা একাধিকবার বলেছেন যে তার সরকার বাধ্য হয়ে ১৯৭১ কে সমর্থন করছে। কিন্তু তার নিজস্ব মতামত হলো ১৯৫১ সাল কে ভিত্তি বর্ষ করা হোক। ৫১ সালের পর বাংলাদেশ থেকে নির্যাতিত হয়ে যেসব হিন্দুরা দেশে এসেছেন তাদের সিএএ র মাধ্যমে নাগরিকত্ব দেওয়া হবে । এটাও তিনি বলেছেন।সেই হিসাবে সুপ্রিম কোর্টে আসাম সরকার কি অবস্থান নেয় সেটা লক্ষনীয়।
কারণ একবার যদি ১৯৫১ সাল ভিত্তিবর্ষ হয়ে যায় তাহলে হিন্দু উদ্বাস্তুদের অবস্থা শোচনীয় হবে। যেখানে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল সংসদে আইন হয়ে পাস হয় ।এরপরে রাষ্ট্রপতি স্বাক্ষর করার প্রায় তিন বছর হয়ে যাচ্ছে। এখনো এই আইন কার্যকর হয়নি। এই পরিস্থিতিতে একবার যদি ১৯৫১ সাল ভিত্তিবর্ষ কার্যকর হয়ে যায় তাহলে উদ্বাস্তু বাঙালি হিন্দুরা সমস্যায় পড়বেন।
অতএব সাম্প্রতিক প্রেক্ষাপটে আগামী ২০ তারিখ থেকে যে শুনানি প্রক্রিয়া শুরু হবে সেটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কয়েকটি সংগঠন অবশ্য ১৯৭১ সালের পক্ষে হলফনামা জমা দিয়েছে। এই মামলা নানা কারণে পিছিয়ে পড়েছে গত এক বছর থেকে। আজ সুপ্রিম কোর্ট একটি নোটিশ জারি করে এই মামলার শুনানি প্রক্রিয়ার দিন ধার্য করেছে। এটা অবশ্যই উদ্বাস্তু বাঙালি হিন্দুদের জন্য একটা উদ্বেগের খবর।
কারণ আইনি প্রক্রিয়ায় ১৯৫১ সাল কে প্রতিরোধ করা না গেলে এবং যদি কোন ভাবে ৫১ সালের পক্ষে আদালতের রায় হয়ে যায়। তাহলে লক্ষ লক্ষ বাঙালি উদ্বাস্তু হিন্দু সমস্যায় পড়বেন। অনেকেই ১৯৫১ সালের পরে এসেছেন। ১৯৭১ সালে তেমন সমস্যা হতো না। তাই এখন অনেকটাই এই মামলা নির্ভর করছে রাজ্য সরকার সর্বশেষ কি হলফনামা সুপ্রিম কোর্টের কাছে জমা করে সেটার উপর।