বাঙালির ভাষা আন্দোলন শিলচর থেকে দাড়িভিট

2 - মিনিট |

“আমি বাংলায় গান গাই/আমি বাংলার গান গাই/আমি, আমার আমিকে চিরদিন এই বাংলায় খুঁজে পাই”

কে আর সি টাইমস ডেস্ক


“আমি বাংলায় গান গাই/আমি বাংলার গান গাই/আমি, আমার আমিকে চিরদিন এই বাংলায় খুঁজে পাই।” প্রতুল মুখোপাধ্যায়ের এই গানটি মন কেড়েছিল আম বাঙালির । একসময়ে এই বাংলা ভাষার টানেই, বাংলার নবজাগরনের পৃষ্ঠপোষক হয়ে উঠছিলেন ধর্মান্তরিত হওয়া মাইকেল মধুসূদন দত্ত । বাংলা কবিতার মাধ্যমেই পেয়ে ছিলেন ‘কবি’ সন্মান । তাই বাংলা ভাষাকে প্রতিষ্ঠিত করতে বারেবারেই বিভিন্ন অঞ্চলে সংগঠিত হয়েছে ভাষা আন্দোলন ।তারই মধ্যে রবিবার “বাঙালির ভাষা আন্দোলন শিলচর থেকে দাড়িভিট” এই অধ্যায়টুকুকে তুলে ধরা হল কলেজ স্কোয়ারে । 

 এদিন কলেজ স্কোয়ারে, আয়োজন করা হয় এক আলোচনা সভার । সেখানে ১৯-এ মে’র ভাষাবীর বীরাঙ্গনানের স্মরণে বক্তব্য রাখেন বিশিষ্টরা । এদিন প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মহিত রায়, অধ্যাপক বিমলশঙ্কর নন্দ ও সাহিত্যিক দেবাশিস লাহা । 

এদিনের অনুষ্ঠানে, ১৯৬১ সালে শিলাচরের ১৯ মে’র ভাষা আন্দোলন থেকে তুলে ধরা হয় ২০১৮ এর ২০ সেপ্টেম্বরের ইসলামপুরের দাড়িভিটের ঘটনাকে । বরাক উপত্যকার বাঙালীদের ওপরে অসমীয়া ভাষা চাপিয়ে দেওয়ার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে ১৯৬১ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি তারিখে কাছাড় গণ সংগ্রাম পরিষদ নামক সংগঠনটির জন্ম হয়। এর পর তা বাড়তে বাড়তে ভাষা আন্দোলনে পরিণত হয় । অসমের বরাক উপত্যকার বাংলা ভাষা আন্দোলন ছিল অসম সরকারের অসমীয়া ভাষাকে রাজ্যের একমাত্র দাপ্তরিক ভাষা করার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ । যেহেতু ওই অঞ্চলের জনসংখ্যার সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ ছিল বাংলাভাষী । এই গণ আন্দোলনের প্রধান উল্লেখযোগ্য ঘটনাটি ঘটে ১৯৬১ সালের ১৯ মে । সেদিন ১১ জন প্রতিবাদীকে শিলচর রেলওয়ে স্টেশনে গুলি করে হত্যা করে অসম প্রাদেশিক পুলিশ ।

একইভাবে এই ঘটনার সঙ্গে কিছুটা মিলে যায় ২০১৮ এ এই রাজ্যের ইসলামপুরের দাড়িভিটে ঘটে যাওয়া ঘটনাটি । ২০১৮- এর সেপ্টেম্বর, উত্তর দিনাজপুরের দাড়িভিট হাইস্কুলে বাংলা শিক্ষক চেয়ে হিংসার বলি হন দুই যুবক। গ্রামবাসীদের অভিযোগ ছিল, পুলিশের গুলিতেই ওই দুই যুবকের মৃত্যু হয়েছে। যদিও সেই দাবি নস্যাৎ করে দেয় রাজ্য সরকার। সেসময় ওই ইস্যু নিয়ে দীর্ঘ আন্দোলন করেছিলেন গ্রামবাসীরা। বিজেপি ও তাদের ছাত্রসংগঠন এবিভিপি গ্রামবাসীদের পাশে দাঁড়িয়ে সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়েছিল  । ছাত্রদের অভিযোগ ছিল, ওই স্কুলে দীর্ঘদিন ধরে বাংলার শিক্ষক ছিল না । কিন্তু উর্দুর শিক্ষক পরিমিত হওয়া সত্ত্বেও বাংলার বদলে উর্দুর শিক্ষক নিয়োগই চলছিল ।

তাহলে কেন তাদের প্রশাসনের কাছে এমন বেঘোরে প্রাণ দিতে হল ! তাদের দোষটা কোথায় ছিল । শিলাচরের আন্দোলনকারীরাও যেমন নির্দোষ ছিলেন তেমন ইসলামপুরের যুবরাও । এদিনের আলোচনা সভায় বক্তারা এই দুই ঘটনারই মেলবন্ধন করে প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন সাধারণের উদ্দেশ্য যে, কোথাও আমরা বাংলা ভাষাকে ভুলে যাচ্ছি না তো ?

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related news