বিজয়কুমার ভট্টাচার্যের দুটি কবিতা

< 1 - মিনিট |

কবির কবিতা হল সময়ের শুদ্ধ পরিচয়
কবিরা মরে না শুধু জন্ম নেয় বারংবার

কে আর সি টাইমস ডেস্ক

একটি মরণোত্তর কবিতা

কবিতা প্রকাশ পায় মরণের পর

কবি তো জানে না তার লেখা পড়ে কারা

আকাশ-বাতাসে শোনে কবি বিভিন্ন খবর

কবি বহুদূরে থাকে যেরকম থাকে সন্ধ্যাতারা

মেঘের আড়ালে কবি থাকে ধরাছোঁয়ার বাহিরে

তাকে নিয়ে ভালো-মন্দ কত কথা কত গবেষণা

কবি দ্যাখে নৌকো বাঁধা আছে নদীতীরে

কবি তো নিজেই মাঝি জানে ঠিক কোথায় মোহনা

তোমরা সবাই থাকো নিয়ে সব আত্মীয়স্বজন

কবিরা নির্জনে থাকে চিরদিন সঙ্গীবিহীন

ভালোবাসাপাখি এসে উড়ে চলে যায় যে কখন

মনেও রাখে না কবি জ্যোৎস্না বা আঁধার মলিন

তার কাছে কবিতার চেয়ে বড়ো কিছু নয়

নয় ততধিক সত্য-মিথ্যা কিছু আর

কবির কবিতা হল সময়ের শুদ্ধ পরিচয়

কবিরা মরে না শুধু জন্ম নেয় বারংবার

             ~~~

শিলচর

যদি চলে যেতে চাও, চলে যেতে পারো। আমি কিন্তু যাব না কোথাও। এখানেই আছি, বেশ আছি। আলো-হাওয়া-ধুলোমাখা শরীরে বৃষ্টি ঝরেছে অনেকবার। এ শহর শিলচর, আমার মায়ের পর দ্বিতীয় প্রেমিকা। তার সুখ-দুঃখে আমি জানি না কেন যে খুব বেশি বিচলিত হই। আমাকে জড়িয়ে ধরে হাসি-খুশি আর বিষণ্ণতা। এই শহরের প্রতি অলিগলিতে আমার অসংখ্য পরিচিত মুখ কুশল জিজ্ঞেস করে। যত থাক ধুলো-বালি, বিরক্তকর ট্রাফিক সংকেত, পুতিগন্ধময় নালানর্মদায় আবর্জনাস্তূপ—তবু আমি এ শহর ছেড়ে অন্য কোথাও যাব না। এ শহরে কেউ কেউ ঈর্ষার নীলবিষে নীলাভ করতে চায় আমাদের সারাটা শরীর। এ শহরে বাংলাভাষা সংগ্রামসহ নানাবিধ আন্দোলন হয়, হয় কত মিটিং-মিছিল। এ শহরে হরেকরকম রাজনীতি হয়। কখনও বা খুনোখুনি। আবার, শ্মশানে-গোরস্থানে সব লোক মিলেমিশে যায়। শোকসন্তাপিত জল স্পর্শ করে সহমর্মী হাত। এভাবেই যায় রাত, দিন। তুমি যদি যেতে চাও, যেতে পারো এ বরাক উপত্যকা ছেড়ে। আমার প্রেমিকা ছেড়ে আমি অন্য কোথাও যাব না। এ শহরে আছে হাসি-কান্না-নাচ-গানে ভরপুর নানা সংস্কৃতি। এ শহর আমার মুখর কথা, সুনির্জনে পরম নিভৃতি।

বিজয়কুমার ভট্টাচার্য—কাছাড়, অসমের বিশিষ্ট কবি ও সাংবাদিক

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related news