রবি পক্ষ হোক বছরভর
আছে দুঃখ, আছে মৃত্যু, বিরহদহন লাগে। তবুও শান্তি, তবু আনন্দ, তবু অনন্ত জাগে ॥ তবু প্রাণ নিত্যধারা, হাসে সূর্য চন্দ্র তারা, বসন্ত নিকুঞ্জে আসে … এভাবেই প্রতি বছর ২২ শ্রাবণে শ্রাবনের ধারার মতোই আমাদের মধ্যে ফিরে ফিরে আসেন রবীন্দ্রনাথ। জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ির যে ঘরে তাঁর শেষ নিশ্বাস পড়েছিল, প্রস্তুতি চলছে সেই ঘরটি আলপনায়, ফুলের সাজে, ধূপের ধোঁয়ায় মাতিয়ে তোলার। বড়ো বেদনার মত বেজেছ তুমি। মৃত্যুরও যে এমন রাজকীয় সাজ হয়, তা বুঝি অনুভব করা যায় এই বিশেষ দিনটিতে। এর জন্যও প্রস্তুতি চলছে নিমতলায়, যেখানে পঞ্চভূতে বিলীন হয়ে গিয়েছিল কবির নশ্বর দেহ।
‘কী পাইনি তারি হিসাব মিলাতে মন মোর নহে রাজি।’ আমাদের সকল ব্যর্থতা যেন ঢেকে দিয়ে যান রবীন্দ্রনাথ তাঁর কবিতা গান আর কাব্য দিয়ে। সকল শূন্যতা পূর্ণতায় ভরিয়ে দেন আমাদের প্রাণের কবি।
‘অন্ধকারের উৎস হতে উৎসারিত আলো/ সেই তো তোমার আলো।/ সকল দ্বন্দ্ব-বিরোধ-মাঝে জাগ্রত যে ভালো,/ সেই তো তোমার ভালো। ’ ২২ শ্রাবণ শূণ্যতার মধ্যে দিয়ে পূর্ণতাকে অনুভবের দিন। এই সামাজিক অবক্ষয়ের মধ্যে এখনও আমরা রবীন্দ্রনাথকে আশ্রয় করে বেঁচে থাকতে পারি। ২২ শ্রাবণ আমাদের সেই আশ্রয়ের দিন। ‘আমার সকল দুখের প্রদীপ জ্বেলে দিবস জ্বেলে করব নিবেদন–. আমার ব্যথার পূজা হয়নি সমাপণ।.