“প্ল্যাটফর্ম অ্যাগেনস্ট ইসলামিক জিহাদ”-এর স্মারকপত্র মুখ্যমন্ত্রীকে
শিলচর : অসমে ইসলামী জিহাদীদের কার্যকলাপ নিয়ে এ বার সোচ্চার হলো “প্ল্যাটফর্ম অ্যাগেনস্ট ইসলামিক জিহাদ।” মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা সরকারি অর্থানুকূল্যপ্রাপ্ত মাদ্রাসাগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করলেও বেসরকারিভাবে রাজ্যে অসংখ্য মাদ্রাসা গড়ে উঠছে। সন্দেহজনকভাবে তৈরি হচ্ছে একের পর এক মসজিদ। বুধবার , কাছাড়ের জেলা আয়ুক্তের মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রী ড. শর্মার উদ্দেশ্যে প্রেরিত এক স্মারকপত্রে বিষয়টির উল্লেখ করে এর প্রতিকার বিধানের দাবি জানানো হয়েছে ।
মুখ্যমন্ত্রীর কার্যালয়ে স্মারকপত্রের প্রতিলিপি পাঠানো হয়েছে ই-মেলেও। এর পর শিলচরে এক সাংবাদিক সম্মেলনে “প্ল্যাটফর্ম অ্যাগেনস্ট ইসলামিক জিহাদ”-এর মুখ্য আহবায়ক বকুল মালাকার এ ব্যাপারে গুরুতর অভিযোগ উত্থাপন করেন। জিহাদি কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে মুখ্যমন্ত্রী ড. শর্মা যে শক্তিশালী ব্যবস্থা নিয়েছেন , এর জন্য বকুল মালাকার তাঁকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। পাশাপাশি তিনি এ-ও উল্লেখ করেন যে , রাজ্যের যত্রতত্র অনেক মাদ্রাসা – মসজিদ গড়ে তোলা হচ্ছে।
কার্যত ,সরকারকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে এ সব করা হচ্ছে। একই সঙ্গে “লাভ জিহাদ “, “পপুলেশন জিহাদ “- এর মতো চক্রান্তজাল বিস্তার করে অসমে কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার যে “টার্গেট ” করা হয়েছে , সেটি নিশ্চিতভাবেই ভয়ংকর উদ্বেগের বিষয় । “লাভ জিহাদ ” – এর বীভৎস চিত্র কখনও কখনও প্রকাশ্যে এলে এর ভয়াবহতা দেখে স্তম্ভিত হতে হয় ।
সমূহ ঘটনাপ্রবাহের নেপথ্যে আন্তর্জাতিক জিহাদী গোষ্ঠীদের প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ মদত রয়েছে , বকুল মালাকার এই আশঙ্কার কথা ব্যক্ত করেন। বলেন , রাজ্যে মাদ্রাসার সংখ্যা নিয়ে পরিসংখ্যান তৈরি করা হোক । কোন মাদ্রাসা কী ভাবে চলছে , কোথায় কী ধর্মীয় পড়াশোনা হচ্ছে , অর্থের কী কী উৎস রয়েছে , এ সব তথ্য সরকারি নথিতে অবশ্যই থাকা উচিত । কারণ , গ্রামে -গঞ্জে যে ভাবে মাদ্রাসা -মসজিদের সংখ্যা দ্রুত গতিতে বেড়ে চলেছে, তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহের অবকাশ রয়েছে।
উপাসনাস্থল হিসেবে মসজিদ থাকতেই পারে । কিন্তু এত ঘন ঘন কেন , কী ভাবে, কার অনুমতিতে দ্রুতগতিতে এর সংখ্যা বৃদ্ধি হচ্ছে , সেটা পরিষ্কার হওয়া উচিত । অতীতে দেশে-বিদেশে দেখা গিয়েছে , বহু মসজিদ সশস্ত্র সন্ত্রাসবাদীদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল হয়ে দাঁড়ায় ।সেখানে অস্ত্রভান্ডার থাকে। তরুণ -যুবাদের মগজ ধোলাই করে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় জিহাদের। অসমও এর ব্যতিক্রম হতে পারে না ।
তাই যাবতীয় পর্যবেক্ষণের পর তথাকথিত গজিয়ে ওঠা মাদ্রাসা -মসজিদগুলো বন্ধ করে আইনানুগ পদক্ষেপ নিতে হবে সরকারকে । নানা ছদ্মবেশে আন্তর্জাতিক ইসলামী সন্ত্রাসবাদীদের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিবর্গের বিচরণক্ষেত্র রয়েছে অসম তথা বরাক উপত্যকায় । রাস্তাঘাটে সন্দেহভাজন লোকদের আনাগোনা পরিলক্ষিত হয় । বিষয়টি মোটেই হালকা করে দেখার মতো নয়।
কাশ্মীরের পর অসমকে নিয়ে বিশেষ নীল -নকশা তৈরি করে দীর্ঘদিন ধরে এগোচ্ছে ইসলামী জিহাদীরা। এ ভাবেই অসমে মুসলিম জনসংখ্যা চল্লিশ শতাংশ হয়ে যাওয়া আর খুব একটা সময়ের ব্যাপার নয় । ” পপুলেশন জিহাদ ” এ ভাবেই বিপন্ন করছে অসমকে । ১৯৪৭ সালে দ্বিজাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে দেশভাগ হওয়ার সময় অসমে মুসলিম জনসংখ্যা কত ছিল , আর এখন কত হয়েছে , এই পরিসংখ্যান স্পষ্টভাবে তুলে ধরা উচিত ।
রাজ্যের বহুধা বিভক্ত সনাতন সমাজ ভবিষ্যতে এই জটিল চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করতে পারবে কি , প্রশ্ন বকুলের । এ ব্যাপারে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের পক্ষ থেকে যথাযথ উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত হোক , দাবি জানান তিনি । বকুল মালাকার প্রসঙ্গত এ কথাও বলেন যে , অসমের মুসলিম সমাজে দেশপ্রেমী লোকও অনেকে রয়েছেন । সন্ত্রাসবাদীদের বিরুদ্ধে সক্রিয়ভাবে এগিয়ে আসার জন্য তিনি তাঁদের প্রতি আহ্বান জানান । সাংবাদিক সম্মেলনে ছিলেন সংগঠনের অন্য কর্মকর্তারাও।