সুপ্রিম কোর্টে চিদম্বরম আবেদন করে জানান, ‘তিনি আইনের থেকে পালাচ্ছেন না। তদন্তে সবরকম সহযোগিতা করতে তিনি ইচ্ছুক। কিন্তু দুর্নীতির মামলার তদন্তকে যেন রাজনৈতিক প্রতিহিংসার ক্ষেত্রে একটি হাতিয়ারে পরিণত না করা হয়। তাঁকে আগাম জামিন দেওয়া হোক, নইলে তাঁর গুরুতর ক্ষতি হয়ে যাবে।
একদিন আগেই চিদম্বরমের খোঁজ না পাওয়া যাওয়ায় তাঁর বিরুদ্ধে লুক আউট নোটিশ জারি করে ইডি। বুধবার সকাল আটটার সময় তাঁর জোরবাগের বাড়িতে ফের পৌঁছে গিয়েছে সিবিআই টিম। আজ সকাল সাড়ে দশটায় সুপ্রিম কোর্টে চিদম্বরম আবেদন করে জানান, ‘তিনি আইনের বিচার থেকে পালাচ্ছেন না। তদন্তে সবরকম সহযোগিতা করতে তিনি ইচ্ছুক। কিন্তু দুর্নীতির মামলার তদন্তকে যেন রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার হাতিয়ারে পরিণত না করা হয়। তাঁকে আগাম জামিন দেওয়া হোক, নইলে তাঁর অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে যাবে। আবেদনে চিদম্বরম আরও বলেছেন, তিনি রাজ্যসভার সদস্য। সমাজে তাঁর পরিচিতি ও মর্যাদা রয়েছে। অতীতে তাঁর বিরুদ্ধে কখনও কোনও অপরাধের অভিযোগ ওঠেনি।’
সিবিআইয়ের তরফে আদালতে প্রাক্তন অর্থমন্ত্রীর বিরুদ্ধে বলা হয়, পাহাড় প্রমাণ দুর্নীতি হয়েছে আইএনএক্স মিডিয়ায়। চিদম্বরমকে কোনও ভাবেই যেন রেহাই দেওয়া না হয়। তবে, চিদম্বরমের হয়ে সুপ্রিম কোর্টে জোর সওয়াল করবেন কংগ্রেসের দুঁদে আইনজীবীরা। কোর্ট রুমে দেখা গেল, কংগ্রেস নেতা তথা আইনজীবী কপিল সিব্বল, সলমন খুরশিদ ও বিবেক টাঙ্কা-কে। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি এন ভি রামানা চিদম্বরমের আবেদনের ফাইল পাঠালেন প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের কাছে। জানানো হয়েছে, এখন প্রধান বিচারপতি ঠিক করবেন তিনি মামলাটি কখন শুনবেন।
আইএনএক্স মিডিয়া দুর্নীতি মামলায় প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরমকে মঙ্গলবার সকালেই অস্বস্তিতেই ফেলেছিল সুপ্রিম কোর্ট। প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী তথা প্রবীণ কংগ্রেস নেতা পালানিপ্পান চিদম্বরমের বিরুদ্ধে লুক-আউট নোটিস জারি করেছিল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)| সোমবার কেন্দ্রীয় এই গোয়েন্দা দফতর সূত্রে জানানো হয়, সেই সময়ই তাঁর নাম জড়িয়েছিল ১১১ এয়ার ইন্ডিয়া কেলেঙ্কারির ঘটনায়। এই সংস্থার সঙ্গে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগে নাম জড়িয়েছিল প্রাক্তন অর্থমন্ত্রীর। মঙ্গলবারই প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর আগাম জামিনের আবেদন খারিজ করে দিয়েছিল দিল্লি হাইকোর্ট| এরপর থেকেই বেপাত্তা প্রবীণ এই কংগ্রেস নেতা|
একদিন আগেই আইএনএক্স মিডিয়ায় বিদেশি বিনিয়োগে অসঙ্গতি মামলায় আগাম জামিনের আর্জি খারিজ হতেই মঙ্গলবার চিদম্বরমের দিল্লির বাড়িতে পৌঁছে গেছিলেন সিবিআই আধিকারিকদের ৬ সদস্যের একটি দল| সিবিআই আধিকারিকরা বেরিয়ে যাওয়ার কিছুক্ষণ পরই চিদম্বরমের বাড়িতে গেছিলেন ইডি-র আধিকারিকরা| সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীরা বলছেন, প্রধান বিচারপতি বুধবার সকালে অযোধ্যা মামলার শুনানি নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। কারণ তা পূর্ব নির্ধারিত ছিল। ইডির তরফে এও জানানো হয়, প্রাক্তন মন্ত্রীকে আগামী ২৩ অগস্টের মধ্যে তাঁদের দফতরে আসার জন্য শমন পাঠানো হয়েছিল। তাঁদের দফতরে এসে নিজের জবানবন্দী দেওয়ার জন্য তাঁকে ডেকে পাঠান তাঁরা। কিন্তু, প্রাক্তন অর্থমন্ত্রীর কোনো খোঁজ না পাওয়ায় লুক-আউট নোটিশ জারি করা হয়েছিল।