ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর ট্রায়াল রান হল আজ, শুক্রবার । দীর্ঘ ২৫ বছর পর সুড়ঙ্গে পরীক্ষা মূলকভাবে চলল কলকাতার এই নতুন মেট্রো রেল
ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর ট্রায়াল রান হল আজ, শুক্রবার । দীর্ঘ ২৫ বছর পর সুড়ঙ্গে পরীক্ষা মূলকভাবে চলল কলকাতার এই নতুন মেট্রো রেল । শুক্রবার দুপুরে ফুলবাগান থেকে ট্রেন ছুটল শিয়ালদহের দিকে । তবে, পুরোটা নয় । ১৩০০ মিটার যাওয়ার পরই ট্রেনের মুখ ঘুরিয়ে ফিরে এল ফুলবাগানে । ঐতিহাসিক এই ট্রায়াল রানের সাক্ষী রইলেন গুটিকয়েক আধিকারিক । তাঁরা জানান, এই ট্রায়াল সফল । আর এই পরীক্ষা মূলক যাত্রায় খুশি মেট্রো কর্মীরাও । তারা রীতিমত নতুন মেট্রোতে তুললেন সেলফি ।
১৯৮৪ সালে প্রথম যাত্রা শুরু করে কলকাতা মেট্রো রেল । প্রথমে রুট ছিল এসপ্ল্যানেড থেকে নেতাজি ভবন । তারপর ১৯৯৪ সালে বেলগাছিয়া, শোভাবাজার স্টেশনগুলোকে সংযুক্ত করা হয় । তখনই হয়েছিল শেষ মাটির নিচে ট্রায়াল রান । মাটির নিচে ট্রায়াল রানের ২৫ বছর পর হল আজ । মেট্রো সূত্রের খবর, মাটির উপরে যাত্রী নিয়ে ট্রেন ছুটতে দেখা যেতে পারে জুনের শেষেই । তবে ফুলবাগান পর্যন্ত এখনই নয় । কারণ স্টেশনের কাজ অনেক বাকি । তাই, যাত্রী নিয়ে সুড়ঙ্গে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর প্রবেশ করতে লেগে যেতে পারে সেপ্টেম্বর । আর শিয়ালদহ পর্যন্ত কাজ শেষ হয়ে পরিষেবা শুরু হতে ২০২০-র শেষ হয়ে যাবে । প্রথম দফায় মাটির ওপরেই চলাচল করবে অত্যাধুনিক এই মেট্রো । সেক্টর ৫ থেকে সল্টলেক স্টেডিয়াম পর্যন্ত নির্ধারিত রুটে হবে শুভসূচনা ।
মেট্রোর আধিকারিকরা জানান, নতুন এই রেকে থাকবে পুশ অ্যান্ড টক সিস্টেম । ফলে ট্রেনের কামরায় কোনও ঘটনা ঘটলে যাত্রীরা এই মাধ্যম ব্যবহার করে চালককে সজাগ করতে পারবেন । চালকও প্রয়োজনে তা কন্ট্রোলে জানিয়ে দেবেন । এই রেকের একেকটি কোচে যাত্রী বসতে পারবেন ৪৩ জন এবং দাঁড়াতে পারবেন ৩৫৪ জন । প্রথম এবং অন্তিম কোচে বসতে পারবেন ৫০ জন দাঁড়াতে পারবেন ৩২৩ জন করে । অত্যাধুনিক এই রেকে যাত্রীদের ওঠানামার জন্য দরজার মাপ বর্তমান মেট্রোর তুলনায় বাড়ানো হয়েছে । দাঁড়ানোর জন্যও অনেকটা জায়গা থাকছে নতুন রেকে ।
নতুন এই মেট্রোর প্রত্যেক কামরায় থাকছে সিসিটিভি । যার ফলে মেট্রোর কন্ট্রোলরুম থেকে সরাসরি মেট্রোর ভিতরে কী হচ্ছে তা দেখা যাবে । প্রতিবন্ধীদের ট্রেনে ওঠার জন্য থাকছে হুইল চেয়ার । এখনকার মেট্রোয় এই ব্যবস্থা নেই । তাছাড়া আত্মহত্যা রুখতে এবং যাত্রী নিরাপত্তার কথা ভেবে থাকছে প্ল্যাটফর্ম স্ক্রিন ডোর । মাটির উপরের স্টেশনের জন্য থাকছে প্ল্যাটফর্ম স্ক্রিন গেট । আর সুড়ঙ্গের ভিতরের স্টেশনের জন্য স্ক্রিন ডোর । যাত্রী সংখ্যা দেখে তবেই ঠিক হবে কত মিনিট অন্তর ট্রেন চালাবে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো । দেড় মিনিট অন্তর চালকহীন রেক চালানো গেলেও এখনই অত কম সময়ে তা চলবে না । ন্যূনতম চার মিনিটের ব্যবধান রাখা হতে পারে বলে জানা গিয়েছে । কেএমআরসিএল সূত্রে খবর, নয়া এই পরিষেবা শুরু হবে কমিউনিকেশন বেসড ট্রেন কন্ট্রোল সিস্টেমের মাধ্যমে । যার ফলে দুটি ট্রেনের মধ্যে দূরত্ব কম থাকবে । চালকরা নিজেদের মধ্যে তথ্য আদান-প্রদান করতে পারবেন । ফলে ট্রেন লেট কম হবে ।