ভুক্তভোগীদের মধ্যে টর্চ, মশাল ও বাজিপটকা বিতরণ পাথারকান্দি বন দফতরের
করিমগঞ্জ জেলার পাথারকান্দি নির্বাচন কেন্দ্র এলাকার হাতিখিরা চা বাগান অঞ্চলে বুনো হাতিদের তাণ্ডবে ভুক্তভোগী তথা ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে টর্চ, মশাল, হারিক্যান ও বাজিপটকা বিতরণ করেছে বন দফতরের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। শুক্রবার সন্ধ্যায় পাথারকান্দির রেঞ্জ ফরেস্ট অফিসার দেবজ্যোতি নাথ দলবল নিয়ে হাতিখিরা এলাকায় গিয়ে হাতির হামলায় ক্ষতিগ্রস্তদের এবং আতংকগ্রস্তদের মধ্যে কয়েকটি টর্চ ও হাতি তাড়ানোর সরঞ্জাম বিলি করেছেন।
সামগ্রীগুলি বিলি করে রেঞ্জার নাথ ক্ষতিগ্রস্তদের নির্দেশ দিয়েছেন, তাঁরা যেন শিগগির তাঁদের নিজেদের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ উল্লেখ ফটো-সহ বিভাগীয় কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানান। সেই সঙ্গে আবেদনপত্রে নিজেদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নম্বরও লিখে তাঁর অফিসে জমা দিতে বলেছেন রেঞ্জার দেবজ্যোতি নাথ।
ক্ষতিগ্রস্তদের আশ্বাস দিয়ে তিনি বলেছেন, বন কর্মীরা সবসময় তাঁদের পাশে আছেন এবং ভবিষ্যতে যথাসাধ্য সহযোগিতা করে যাবেন। বুনো হাতি আক্রান্ত এলাকার বাসিন্দাদের আরও টর্চ ও হারিক্যানের ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলে আশ্বস্ত করেছেন নাথ। রেঞ্জার দেবজ্যোতি নাথ লোয়াইরপোয়া ব্লকে প্রেসিডেন্ট শ্যাম আঁকুড়ার সঙ্গেও দেখা করে হাতির সমস্যা নিয়ে বিস্তর আলোচনা করেন।
উল্লেখ্য, অন্যান্য বছরের মতো এবারও বুনো হাতির দল গত কয়ে্কদিন ধরে হাতিখিরা ও সংলগ্ন এলাকার চাষিদের পাকা সোনালি ধানের খেতে পড়ে বিস্তর ক্ষয়ক্ষতি করছে। হাতির দলটি দিনের আলোয় হাতিখিরা বাগানের পাহাড়ি এলাকায় অবস্থান করলেও সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গে সোনালি ধান খেতে হানা দিয়ে তছনছ করে দিচ্ছে। তবে এখন পর্যন্ত বুনো হাতির দলটি কোনও মানুষের বসতবাড়িতে হানা দিয়ে ক্ষয়ক্ষতি করার খবর পাওয়া যায়নি।
রেঞ্জার জানিয়েছেন, হাতির দলটি বর্তমানে বাজারিছড়া থানাধীন অসম-ত্রিপুরা ৮ নম্বর জাতীয় সড়ক সংলগ্ন ডেঙ্গারবন্দ গ্রাম পঞ্চায়েত ও হাতিখরা পঞ্চায়েতের ৭, ৮, ৫, ৫৮ নম্বর এবং চলিতাতাগুল প্রভৃতি বনাঞ্চলে অবস্থান করছে। ভুক্তভোগীরা জানান, গত কয়েকদিনে এলাকার প্রায় ত্রিশ বিঘা পাকা ধানের খেতে বুনো হাতির দল তাণ্ডব চালিয়ে গরিব চাষিদের ব্যাপক ক্ষতি করেছে। বুনো হাতির ভয়ে নিজেদের জানমাল রক্ষা করতে টিন বাজিয়ে, আগুন জ্বালিয়ে ও বাজি পুড়িয়ে রাত জেগে প্রহরা দিচ্ছেন এলাকার আতঙ্কগ্রস্তরা। ভুক্তভোগীদের মধ্যে জনৈক সমসু মিয়াঁ ও রামলক্ষণ গোঁড় জানান, একদিকে গত দেড়মাস ধরে বাগানে লকআউট চলছে। তার ওপর বুনো হাতির তাণ্ডব। সব মিলিয়ে জনসাধারণ অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন। তাঁরা জানান, গত কয়োকদিন ধরে মহিলা-সহ পাঁচটি হাতির দলটি সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসতেই চাষিদের পাকা ধানের খেতে নেমে সব তছনছ করে দিচ্ছে। যে কোনও সময় বিগত বছরগুলোর মতো লোকালয়ে প্রবেশ করে জনগণের বসতবাড়ি গুড়িয়ে দিতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বক্তারা। হাতির হামলা বন্ধ করতে তাঁরা বন মন্ত্রী পরিমল শুক্লবৈদ্যের আশু হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন।