বিনা অনুমতিতে কামরূপ মহানগর জেলার অভ্যন্তরে কোনও ধরনের জমি, পাহাড় খনন বা পাহাড়ি পাথরের বিস্ফোরণে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। তবে কেন্দ্রীয় বা রাজ্যের সরকারি কাজের পরিপ্রেক্ষিতে পরিস্থিতি বিবেচনায় এই নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা হতে পারে।
লাগাতার বৃষ্টির ফলে কৃত্ৰিম বন্যার কবলে পড়েছে অসমের রাজধানী গুয়াহাটি মহানগরের নিম্নাঞ্চল। পাশাপাশি জমা জল ও কাদায় পরিপূর্ণ বহু এলাকা। পাহাড় খসে পড়ছে ধস। এক কথায় মহানগরের বিস্তীর্ণ এলাকার নাগরিকজীবন দুর্বিসহ হয়ে উঠেছে। ইতিমধ্যে ধসের কবলে পড়ে হতাহত হয়েছেন দুজন।বুধবার গরচুকের বাসিন্দা ৫৬ বছর বয়সি জনৈক নারায়ণ সাহা ভূমিধসের কবলে পড়ে মারা গেছেন। বেথানি পাহাড় থেকে মাটি ও পাথর খসে তাঁর বসতঘরের ওপর পড়ে। পাথর ও মাটি চাপায় তাঁর মৃত্যু হয়েছে।মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছে অসম-সহ প্রতিবেশী রাজ্যগুলিতেও। ফলে গুয়াহাটি-সহ সমগ্র রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে পড়েছে। সম্ভাব্য প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় সংশ্লিষ্ট বিভিগ, জলসম্পদ, খাদ্য ও সরবরাহ, পূর্ত ইত্যাদি বিভাগীয় মন্ত্রী-কর্তাদের সতর্ক থাকতেও বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সনোয়াল।
এদিকে, অমিয়নগরের হোলি চাইল্ড স্কুল সংলগ্ন এলাকায় ধস পড়ে রাস্তা বন্ধ হয়ে গেছে। এছাড়া তরুণনগর, নবীননগর, ধীরেনপাড়া, সিজুবাড়ি, চাঁদমারি, নারেঙ্গি, নুনমাটি, বামুনিমৈদাম, পাঞ্জাবাড়ি ইত্যাদি এলাকায় ঘন ঘন জলে প্লাবিত হচ্ছে। ফলে সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের নাগরিকজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। প্রসঙ্গত, গতকাল গুয়াহাটিতে ভূমিধসের কবলে পড়ে একজন আহত হয়েছেন। তিনি বর্তমানে গুয়াহাটি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। গুয়াহাটির পার্শ্ববর্তী জোড়াবাট পুলিশ ফাঁড়ির অন্তৰ্গত ১১ মাইল এলাকায় মঙ্গলবার বিকেলে জাতীয় সড়কের পাশে সংঘটিত ভূমিস্খলনে আহত হয়েছিলেন তিনি। তাঁর নাম হেমেশ্বর বরা ওরফে বি বরা।সম্ভাব্য বিপর্যয়ের প্রতি লক্ষ্য রেখে গুয়াহাটি মহানগরের জেলাশাসক বিশ্বজিৎ পেগু আজ সতর্কবার্তা সংবলিত এক বিজ্ঞপ্তি জারি করেছেন। বিজ্ঞপ্তিতে তিনি বলেছেন “বিনা অনুমতিতে কামরূপ মহানগর জেলার অভ্যন্তরে কোনও ধরনের জমি, পাহাড় খনন বা পাহাড়ি পাথরের বিস্ফোরণে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। তবে কেন্দ্রীয় বা রাজ্যের সরকারি কাজের পরিপ্রেক্ষিতে পরিস্থিতি বিবেচনায় এই নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা হতে পারে।”সেভ গুয়াহাটি বিল্ড গুয়াহাটি নামের এক অরাজনৈতিক সংগঠনের সম্পাদক কৈলাশ শর্মা বলেন, “মহানগরের বেশ কয়েক জায়গায় ধস ও গাছ পড়ে যাওয়ায় সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থায় প্রভাব পড়েছে। ধস-প্রবণ এলাকায় বাসিন্দারা আতঙ্কে ভুগছেন।” জনসাধারণের ভয়ভীতি দূর করতে প্রশাসনকে শীঘ্র ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানিয়েছেন তিনি।