গত ২৪ এপ্রিল রণক্ষেত্রে পরিনত হয়েছিল হাওড়া কোর্ট চত্বর| বাইক পার্কিং এর জায়গায় হাওড়া পুরসভার গাড়ি রাখা নিয়ে শুরু হয় বচসা| আইনজীবী-পৌরকর্মীদের সেই বচসা গিয়ে পৌছায় হাতাহাতিতে|কোর্ট চত্বরে আইনজীবীদের গায়ে হাত তোলা নিয়ে ২৪ এপ্রিল থেকে ধর্নায় বসেছিলেন আইনজীবীরা| কলকাতা প্রেস ক্লাবে সাংবাদিক সন্মেলনের মাধ্যমে আইনজীবীরা জানান আগামী তিনমাসের জন্য ধরনা স্থগিত রাখছেন তাঁরা| ধরনা স্থগিত রাখলেও আন্দোলন জারি থাকবে| সেইদিন […]
গত ২৪ এপ্রিল রণক্ষেত্রে পরিনত হয়েছিল হাওড়া কোর্ট চত্বর| বাইক পার্কিং এর জায়গায় হাওড়া পুরসভার গাড়ি রাখা নিয়ে শুরু হয় বচসা| আইনজীবী-পৌরকর্মীদের সেই বচসা গিয়ে পৌছায় হাতাহাতিতে|কোর্ট চত্বরে আইনজীবীদের গায়ে হাত তোলা নিয়ে ২৪ এপ্রিল থেকে ধর্নায় বসেছিলেন আইনজীবীরা| কলকাতা প্রেস ক্লাবে সাংবাদিক সন্মেলনের মাধ্যমে আইনজীবীরা জানান আগামী তিনমাসের জন্য ধরনা স্থগিত রাখছেন তাঁরা|
ধরনা স্থগিত রাখলেও আন্দোলন জারি থাকবে| সেইদিন হাতাহাতির জেরে কোট চত্বরে যেসব আইনজীবী জখম হয়েছেন যাদের জন্য হয়েছেন তাঁদের এখনও শাস্তির ব্যবস্থা করেনি বার কাউনসিল| তাই আগামী তিন মাস ধরনা স্থগিত রেখে ঐক্য মঞ্চ আইনজীবী সংগঠন সুপ্রিল কোর্টে যাবে এবং রাজ্যপালের কাছে চিঠি দেবেন যাতে দোষীরা শাস্তি পায়| যদি এই তিনমাসের মধ্যে দোষীরা শাস্তি না পায় তবে আবার তাঁরা ধর্নায় বসবেন| সেদিন হাতাহাতির জেরে ৩২ জন আইনজীবী সহ ২বেশ কিছু মহিলাও আহত হন|
এই প্রসঙ্গে কলকাতা হাইকোর্টের প্রবীন আইনজীবী সুব্রত মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘বার কাউনসিলে যারা বসে আছে তাঁদের আমরা ভোট দিই| ওদের আমরা দেখি কিন্তু ওরা আমাদের দেখেনা| ওরা নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলকে দেখে|রাজ্য বার কাউন্সিলের চেয়ারম্যান অশোক দেবের সাথে মিটিং ডাকা হলো কিছু না বলে পালিয়ে গেলেন|এভাবে রাজনৈতিক দল ধরে বেশিদিন চলতে পারেনা| আমরা আর তিন মাস অপেক্ষা করবো তিনমাসের মধ্যে যদি দোষীরা শাস্তি না পায় তবে আবার আমরা ধর্নায় বসবো’|
প্রসঙ্গত,বাইক পার্কিং নিয়ে আইনজীবী-পৌরকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ ঠেকাতে ব্যর্থ হয় হাওড়া শহর পুলিশ। ব়্যাফ, কমব্যাট ফোর্স নামিয়েও এদিন মধ্যে সংঘর্ষকে ঠেকানো যায়না| এই পুরসভার গাড়ি রাখার কথা নিয়ে আইনজীবীরা কর্পোরেশনে যান কমপ্লেন করতে, কিন্তু সেখানে কোনো সদুত্তর মেলেনি । যার ফলে বাক বিতন্ডা পুরসভাতেই দাঁড়িয়েই শুরু হয় । এরপর আইনজীবীরা ফেরৎ চলে এলে, পুরসভা থেকে চারটি ছেলে আসে গাড়িটাকে সরিয়ে নিতে। সেই ছেলেগুলো পুরসভার পার্মানেন্ট স্টাফ ছিল না, ওই ১০০ দিনের কাজে নিয়োজিত চার যুবক ছিলেন। তারা এসে গাড়িটাকে তো সরাই নি, উল্টে ওখানে থাকা কিছু আইনজীবীর কলার ধরে বলেন, ‘বেশি বাড় বেড়েছে না তোদের’ ? এর প্রত্যুত্তরে ধাক্কা ধাক্কি হয় ।
সেই মত অবস্থায় ওই চার যুবকের একজন আইনজীবীদের গায়ে হাত তোলে, এবং তাকে অনুসরন করে বাকিরাও। ঘটনার পরিস্থিতি দেখে ওখানে পুলিশ আসে এবং সেই মত অবস্থায় ঝামেলা থামায়।
উল্লেখ্য ‘ দ্য কোড অফ ক্রিমিনাল প্রসিডিয়র, ১৯৭৩’ এর ১৪৪ ধারা অনুযায়ী,১৪৪ ধারা জারি আছে এরকম স্থানে কোনরকম মারামারি, লাঠিচার্জ, বন্দুক, ছুরি, অ্যাসিড, গ্যাস কোনকিছুই করা আইনবিরোধী। কারন ১৪৪ ধারা জারি করাই হয়, সেই জায়গার শান্তি এবং নিরাপত্তা বজায় রাখার জন্যই । ১৪৪ ধারা যে কোন গুরুত্বপূর্ণ জায়গাতেই প্রথম থেকেই জারি করা থাকে, যেমন রাজভবন,পার্লামেন্ট, মন্ত্রীদের গৃহ, এবং সর্বোপরি যে কোন আদালত চত্বরে । কারন জায়গাটাআইনজীবীদের, বিচারকদের কাজ করার জায়গা এবং তাদের এবং তাদের কাজে নিরাপত্তা বজায় রাখা সরকারের দ্বায়িত্ব । তাই, যেখানে ১৪৪ ধারা জারি আছে, সেখানে দাঁড়িয়ে আইনজীবীদের গায়ে হাত দেওয়া ক্রিমিনাল অফেন্স । সেই সূত্রেই ওখানে থাকা আইনজীবিরা পুলিশদের বলেন ওই চার যুবককে ততখনাত গ্রেফতার করা হোক । কিন্তু পুলিশ সেটা না করেই ওখান থেকে চলে যায় ।এমনকি পরবর্তীকালে বার কাউন্সিলকে জানানো হলেও সেখান থেকেও কোনও সদুত্তর মেলেনা| তারই প্রতিবাদ স্বরূপ আইনজীবীরা ধরনায় বসেন|