নন্দাদেবী শৃঙ্গ অভিযানে গিয়ে নিখোঁজ আট পর্বতারোহীকে মৃত বলে নিশ্চিত করল উত্তরাখণ্ড প্রশাসন
নন্দাদেবী শৃঙ্গ অভিযানে গিয়ে নিখোঁজ আট পর্বতারোহীকে মৃত বলে নিশ্চিত করল উত্তরাখণ্ড প্রশাসন। তবে উদ্ধারকাজ করতে গিয়ে যে সমস্ত তথ্য জানা গিয়েছে, তাতে অনেকেই মনে করছেন, জেনেবুঝেই খানিক ইচ্ছাকৃত ঝুঁকি নিয়েছিল মার্টিন মোরানের আরোহী দলটি। অনুমোদন ছাড়াই নিজেদের আরোহণ-পরিকল্পনা বদলেছিল তারা।
নন্দাদেবী আরোহণে গিয়ে গত শনিবার ওই দলটির নিখোঁজ হওযার খবর আসে। তার পরে তিন দিন ধরে লাগাতার হেলিকপ্টার-সার্চ চালানোর পরে, সোমবার দুপুরে দেখা মেলে তাদের মধ্যে পাঁচ জনের। বরফে পড়ে ছিলেন তাঁরা। তবে পড়ে থাকতে দেখলেও এখনও উদ্ধার করা যায়নি তাঁদের। বাকি তিন জনের খোঁজ এখনও মেলেনি।
উত্তরাখণ্ড প্রশাসন সূত্রের খবর, নন্দাদেবীর পূর্ব শৃঙ্গটি আরোহণের অনুমতি নিয়েছিল মার্টিন মোরানের নেতৃত্বাধীন দলটি। কিন্তু মে মাসের ২২ তারিখে মোরান ফেসবুকে জানান, তাঁরা ৬৪৭৭ মিটার উচ্চতার অন্য একটি ‘ভার্জিন’ শৃঙ্গ আরোহণের পরিকল্পনা করছেন। অর্থাৎ এমন একটি শৃঙ্গ, যেখানে আগে কোনও আরোহীর পা পড়েনি। এমন সিদ্ধান্ত না নিলে হয়ত দুর্যোগের মুখে পড়ে প্রাণ হারাতে হতো না আট জন অভিযাত্রীকে, এমনটাই মনে করছেন পর্বতারোহীরা।
উত্তরাখণ্ড প্রশাসনের এক আধিকারিকও বলেন, “নন্দাদেবী আরোহণ এভারেস্টের চেয়েও কঠিন। সেখানে জেনেশুনে ঝুঁকি নেওয়ার মানেই হয় না। ওঁরা আরোহণের পরিকল্পনা বদলেছেন, সেটা সরকারি ভাবে জানানোরও প্রয়োজন মনে করেননি। ওঁদের নন্দাদেবী পূর্ব শৃঙ্গ আরোহণের অনুমতি ছিল। ওই শৃঙ্গ ছাড়া অন্য শৃঙ্গে আরোহণের চেষ্টা করা বেআইনি। আমরা কিছুই জানতাম না। যখন জানলাম, পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে গেছে।” ব্রিটিশ পর্বতারোহী মার্টিন মোরানের নেতৃত্বাধীন আট অভিযাত্রীর দলে ছিলেন আরও তিন ব্রিটিশ, দুই মার্কিন, এক অস্ট্রেলীয় মহিলা পর্বতারোহী এবং ইন্ডিয়ান মাউন্টেনিয়ারিং ফাউন্ডেশনের তরফ থেকে টিমটির সঙ্গে ছিলেন একজন ভারতীয় লিয়াঁজো অফিসার চেতন পাণ্ডে। দলটি মুন্সিয়ারি থেকে ৯০ কিলোমিটার পথ পায়ে হেঁটে নন্দাদেবী বেসক্যাম্প পৌঁছায়। নন্দাদেবী ইস্ট শৃঙ্গ ছুঁয়ে, ২৬ মে ফের বেস ক্যাম্পে তাঁদের ফিরে আসার কথা ছিল। জেলা প্রশাসন জানাচ্ছে, সম্ভবত তার পরের দিন, অর্থাৎ ২৭ তারিখে তুষারধস নামে। এর পরে চার দিন কেটে যায়। ৩১ তারিখেও ওই আট জন বেস ক্যাম্পে না-ফেরায়, বেসক্যাম্প থেকে এক পোর্টার বিপদবার্তা পাঠান সমতলে।