‘সুনিশ্চিত করতে হবে চিকিৎসকদের নিরাপত্তা’।
আজ চিকিৎসকদের সঙ্গে মিছিলে হাঁটলেন অপর্ণা সেন, অনুপম রায়, সুজাত ভদ্র, বিনায়ক সেনও
নো মোর ভায়োলেন্স, এনাফ ইজ এনাফ’। ‘বাঁচাতে চাই, বাঁচতে চাই’-কলকাতা শহরের বুকে উঠল ডাক্তারদের স্লোগান । শুক্রবার এনআরএস হাসপাতাল থেকে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল পর্যন্ত প্রতিবাদ মিছিল হল চিকিৎসকদের । আর ‘পাশে আছি’ ফেস্টুন নিয়ে তাতে সামিল হলেন বিদ্বজ্জনরা । ব্যাকগ্রাউন্ডে স্লোগান উঠল ‘উই ওয়ান্ট জাসটিস’ । তাঁদের সঙ্গে শহর কলকাতার বুকে হাঁটলেন অসংখ্য মানুষ । দাবি একটাই । এবং সেটা খুব স্পষ্ট। ‘সুনিশ্চিত করতে হবে চিকিৎসকদের নিরাপত্তা’।
আজ চিকিৎসকদের সঙ্গে মিছিলে হাঁটলেন অপর্ণা সেন, অনুপম রায়, সুজাত ভদ্র, বিনায়ক সেনও । জয়েন্ট ডরক্টস প্ল্যাটফর্মের তরফে এনআরএস থেকে কলকাতা ন্যাশন্যাল মেডিক্যাল পর্যন্ত মিছিল করা হয় । চিকিৎসকদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার দাবিতে এককাট্টা সকলেই । দেশের বিভিন্ন প্রান্তেও চলছে প্রতিবাদ মিছিল । এনআরএস হাসপাতালের আন্দোলনকারীদের পাশে রয়েছেন রূপস ইসলাম, শ্রীলেখা । সকালে এনআরএসে তাঁদের সঙ্গে দেখা করতে যান অপর্ণা সেন, কৌশিক সেন । এ দিনের মিছিলে তাঁরা ছাড়াও ছিলেন, অনুপম রায়, সমীর আইচ, দেবজ্যোতি মিশ্র, আইনজীবী বিকাশ ভট্টাচার্য, আরও অনেকেই ।
ডাক্তারদের নিরাপত্তার দাবিতে এ দিন এনআরএস থেকে ন্যাশনাল মেডিক্যাল পর্যন্ত মিছিল করলেন কয়েকশো মানুষ । সেই মিছিলেন কেবল ডাক্তার নন, পা মিলিয়েছিলেন আইনজীবী থেকে সাধারণ মানুষও । ছিলেন বাংলার বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বরাও । সকলের একটা অভিযোগ, ‘যাঁরা মানুষের প্রাণ বাঁচান, আর কতদিন মার খাবেন তাঁরা ? আর কত ঘটনা ঘটলে হুঁশ ফিরবে প্রশাসনের ? এ দিনের মিছিলে হাজির প্রতিটি মানুষ তাঁদের শরীরে ভাষায় সাফ বুঝিয়ে দিলেন, ‘অনেক হয়েছে আর নয়। এ বার শেষ দেখে ছাড়ব’।গীতিকার গায়ক অনুপম রায় বলেন, ‘এখন যা অবস্থা চিকিৎসকদের দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে । আর তাই নিজেদের দাবি আদায়ের জন্য রাস্তায় নামতে বাধ্য হয়েছেন তাঁরা’। একই দাবিতে সোচ্চার হয়েছেন, অপর্ণা সেন, সমীর আইচ, দেবজ্যোতি মিশ্ররাও । তাঁদের সকলের একটাই কথা, ‘মুখ্যমন্ত্রী তো সকলের। তাই একবার অন্তত আন্দোলনরত ডাক্তারদের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের সমস্যাটা ওঁর বোঝা দরকার’। এদিনের মিছিলে হাজির সিনিয়র ডাক্তাররাও স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছেন, নিজেদের দাবিতে অনড় থাকছেন তাঁরা । আশ্বাস প্রতিশ্রুতি অনেক হয়েছে, এবার প্রশাসনকে ডাক্তারদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতেই হবে । একই মত শুক্রবারের মিছিলে পা মেলানো বাকিদেরও । এদিনের মিছিলেন অংশ নিয়েছিলেন বিভিন্ন কলেজের বিভিন্ন বিষয়ের পড়ুয়ারাও । তাঁরাও বলেন, ‘এ ভাবে আর কতদিন মার খাবেন ডাক্তাররা । এটা মেনে নেওয়া যায় না । যাঁরা আমাদের প্রাণ বাঁচান তাঁদের নিরাপত্তা প্রশাসনকে সুনিশ্চিত করতেই হবে’।
শুক্রবার সকালেই কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের শতাধিক ডাক্তার ইস্তফা দিয়েছেন । এনআরএস কাণ্ডের প্রতিবাদে মঙ্গলবার থেকেই গর্জে উঠেছিলেন এখানকার পড়ুয়া এবং জুনিয়র ডাক্তাররা । গণ ইস্তফায় সামিল হয়েছেন সিনিয়র ডাক্তার এবং প্রফেসররাও । তবে কেবল কলকাতা মেডিক্যাল নয়, ইতিমধ্যেই গণ ইস্তফা দিয়েছেন আরজিকরের ১২৬ জন চিকিৎসক । তালিকায় রয়েছেন এনআরএস হাসপাতালের শতাধিক ডাক্তার । ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজেও ইস্তফা দিয়েছেন মেডিসিন বিভাগের ১৬ জন চিকিৎসক । ইস্তফা দিয়েছেন ডারমাটোলজি বিভাগের ২০ জন চিকিৎসক । ইস্তফা দিয়েছেন আরজিকর, এনআরএস এবং উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের প্রিন্সিপাল । পদত্যাগ করেছেন, বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজের প্রিন্সিপাল ডক্টর প্রধা ন। এ ছাড়াও উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের মনরোগ বিভাগের প্রধান ডক্টর নির্মল বেরাও ইস্তফা দিয়েছেন । ইস্তফা দিয়েছেন সরকারি সেট আপে ইস্টার্ন ইন্ডিয়াতে প্রথমবার হার্ট ট্রান্সপ্ল্যান্টের কারিগর প্লাবন মুখার্জী ।