আমন চাষ মূলত বৃষ্টিপাতের ওপরই নির্ভর করে। কিন্তু, এবার বৃষ্টিপাতের অভাবে চিন্তার ভাঁজ সকলের কপালে
রাজ্যে বর্ষা ঢুকেছে বহু দিন হল। উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্তে প্রতিদিন বৃষ্টি হলেও, বৃষ্টির দেখা নেই দক্ষিণবঙ্গে। গরমের দহনজ্বালায় নাজেহাল দক্ষিণবঙ্গের মানুষজন। পরিসংখ্যান বলছে, এখনও দক্ষিণবঙ্গে ৫০ শতাংশের বেশি বৃষ্টি ঘাটতি। বৃষ্টির অভাবে মাঠে চাষের কাজ না করতে পেরে বেজায় সমস্যায় কৃষকরা। বীজ শুকোচ্ছে মাঠেই। তাই বৃষ্টির প্রতীক্ষায় ব্যাঙের বিয়ের আয়োজন করা হল দক্ষিণ ২৪ পরগনার রায়দিঘী থানার অন্তর্গত কৌতলাতে। গ্রামবাসীদের বিশ্বাস, ব্যাঙের বিয়ে দিলেই নাকি বৃষ্টি হবে। তাই গ্রামের মানুষজনেরা মিলে ব্যবস্থা করেন ব্যাঙ-এর বিয়ের অনুষ্ঠান। সখ করে গ্রামের লোকেরা দু’টি ব্যাঙের নাম রাখেন রাজ ও শুভশ্রী। শুক্রবার রাতে রাজ-শুভশ্রীর বিয়ে নিয়েই মেতে উঠলেন রায়দিঘীর কৌতলা ও আশপাশের গ্রামের মানুষজন।
প্রচলিত সমস্ত রীতিনীতি মেনে পুরোহিতের মন্ত্র উচ্চারণের মধ্যে দিয়ে শুক্রবার রাতে ব্যাঙের বিয়ে দেন স্থানীয় মানুষজন। স্থানীয় কার্ত্তিক সংঘের ব্যবস্থাপনায় রীতিমত ঢাক, বাজনা বাজিয়ে বয়ারগদীর পাত্র ব্যাঙ রাজের সঙ্গে বিয়ে দেওয়া হয় কৌতলার পাত্রী ব্যাঙ শুভশ্রীর সঙ্গে। আর এই বিয়ে দেখতেই আশপাশের গ্রামের প্রচুর মানুষ ভিড় করেন ওই অনুষ্ঠানে। বিয়েতে আগত মানুষজনদের পাত পেড়ে খাওয়ানোর ব্যবস্থাও করেন উদ্যোক্তারা। আমন চাষ মূলত বৃষ্টিপাতের ওপরই নির্ভর করে। কিন্তু, এবার বৃষ্টিপাতের অভাবে চিন্তার ভাঁজ সকলের কপালে। অতীতে রীতি ছিল, কোনও বছর অনাবৃষ্টি কিংবা খরা হলে ব্যাঙের বিয়ে দিলে সেই খরা কেটে যেত। সেই অতীতের বিশ্বাস মেনেই শুক্রবার রাতে পুরোহিত ডেকে কৃষিতে বাধা দূরীকরণের লক্ষ্যে রীতিমতো অনুষ্ঠান করে দু’টি ব্যাঙের বিয়ের ব্যবস্থা করেন গ্রামবাসীরা৷ প্রায় ১০টি গ্রামের মানুষ হাজির হয় ওই বিয়ের অনুষ্ঠানে। শুক্রবার রাতে এই ব্যাঙের বিয়ে দেখতে প্রচুর মানুষের ভিড় ছিল এই কৌতোলার বারোয়ারি মাঠে। সকলের বিশ্বাস এবার নিশ্চয়ই বৃষ্টি আসবে।